somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সময়ে অসময়ের রাজনীতি । (অনুগল্প)

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৫:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১.
আজ কলেজের নবীন বরণ । একঝাঁক নতুন মুখ কলেজের এখানে সেখানে । ছাত্র নেতারা এদেক সেদিক বিক্ষিপ্ত ভাবে ঘুরছে । অপেক্ষা কলেজের মূল অনুষ্ঠান শেষ হলে তারা ছাত্রদের কাছে যাবে । এই উদ্দেশ্যে প্রায় সব ছাত্র সংগঠনের নেতারাই ক্যাম্পাসে আছে । এটার জন্য চাঁপা উত্তেজনা আছে ক্যাম্পাসে । রাশেদ তার গ্রুপ নিয়ে ঠিক ক্যাম্পাসের মূল ভবনের পেছনে পরিত্যাক্ত একটা ক্লাস রুমে আড্ডা দিচ্ছিল । সময় দুপুর বারোটা ।
ভাইয়া একটা কথা বলতে পারি?
রাশেদ ঘুরে তাকালো মেয়েটির দিকে ।মনে হয় নতুন অচেনা মুখ,বয়সও কম । রাশেদ কথা বলে উঠলো ।
বলো কি বলবে ?
ভাইয়া এখানে রাশেদ ভাই কে ?
কেনো কি দরকার ?
ভাইয়া আমাকে জামশেদ ভাই পাঠিয়েছে ।
ও আচ্ছা।আমি রাশেদ ।বলো ?
জামশেদ ভাই এই চিঠিটা আপনাকে দিয়েছে ।
রাশেদ চিঠিটা নিয়ে পড়লো । জামশেদ তার রাজনৈতিক বড় ভাই । এখানেই পড়তো । রাশেদ কথা বলে উঠলো।
তুমি জামশেদ ভাইয়ের আপন বোন ? নাম কি ?
জ্বি । ঝুমুর ।
জামশেদ ভাই এখন কি করে?
যশোর অপারেশনে আছে ।
ও আচ্ছা । রাজনীতি করবে ?
জ্বি ।
আগে করতে কি?
জ্বি ভাইয়া । এলাকায় ও আমাদের স্কুলে ।
ওকে কাল ফরম নিয়ে জমা দাও । ২/৪ দিনের মাঝেই আইডি পেয়ে যাবে । তবে এখন আর কেউ আইডি নিতে চায় না । পুলিশ যে জ্বালানো জ্বালায় । তুমি নিবে কি ?
জ্বি না ভাইয়া ।
রাশেদ হেসে দিলো আচ্ছা যাও,পরে দেখা হবে ।
২.
( ৩মাস পর )
ঝুমুর না কি ?
জ্বি নবী ভাই ।কেমন আছেন?
ভালো ।তোমার খবর কি?
জ্বি ভালো।
বাড়ি যাও ?চলো পৌচ্ছে দেই ।
কোনো দরকার ভাইয়া?
হুম তোমার একটু খোঁজ খবর নিতে হবে ।
কেনো?দলে লাগবে?
নবী এক মুহূত্তের জন্য চুপ হয়ে গেলো ।তার পর বলো ।না তেমন কিছু না ।
নবীর মুহূত্তের বিব্রতকর অবস্থা ঝুমুরের নজড় এড়ালো না । ঝুমুর অনমনে একটু হাসলো ।
৩.
রাত নয়টা। মফসলে অনেক রাত । ক্যাম্পাসের মূল ভবনের পেছনে রাশেদের আড্ডা ।
রাশেদ : এই চল তোরা,অনেক রাত হয়েছে। এতো রাত পর্যন্ত এখানে থাকাটা ঠিক হবে না ।
জনৈক ছাত্র : হ্যা ভাই । চলেন বেড়িয়ে যায় । চারদিকে কি অন্ধকার দেখেন ।
রাশেদরা বেড়িয়ে গেলো ক্যাম্পাস থেকে ।গেটে আসতেই নবী বলে উঠলো।
আমার নোট থেকে গেছে আড্ডার জায়গায় । আনতে ভুলে গেছি,নিয়ে আসি ।
রাশেদ সাবধান করে দিয়ে হাটতে শুরু করতো । বাকিরা পিছু নিলো ।

৪.
নবী আস্তে আস্তে পরিত্যক্ত ক্লাস রুমের ভেতরে তাকালো । দুর থেকে হৈচৈ শুনছিল তাই আর হুট করে ভেতরে ঢোকেনি । দরজার আড়াল থেকে দেখলো রুমিদের গ্রুপ আড্ডা দিচ্ছে । রাশেদ আর এগোলো না । ঘুরে উল্ট দিকে হাটা ধরলো । কিছুটা যেতেই কিসে যেনো বারি খেলো । কিছু একটা জোড়ে শব্দ করে পড়ে গেলো । নবী ঝেড়ে দৌড় দিল । সাথে সাথে রুমি গ্রপ চিৎকার করতে করতে পিছু নিলো ।ধর ধর শালারে । রুমি ভাইকে খুন করতে আসছিলো । ধর ধর ।
নবী দৌড়তে দৌড়তে মেইন রোডে উঠলো । পেছনে তাকালো দেখলো ওরা ক্যাম্পাসের মুল দরজা পর্যন্ত এসে ফিরে যাচ্ছে । হাটাতে শুরু করলো নবী । হাঁপাচ্ছে । আজ বড় বাঁচা বেঁচে গেছে । ধরা পড়লে নিশ্চিত খুন হয়ে যেতো । ভয় হচ্ছে ক্লাস রুমের নোট গুলো দেখে যদি চিনে ফেলে ।
এই ছেলে দাড়াও । হাঁপাচ্ছ কেনো ?
নবী ঘুরে তাকালো । শিঁড়দাড় বেয়ে একটা শীতল অনুভুতি নিচে নেমে গেলো । নবী বুঝে গোলে এটা সিআইডির লোক । লোকটা এগিয়ে এসে জানতে চাইলো ।
দৌড়চ্ছিলে কেনো ?
স্যার কিছু লোক কলেজের গেটে অস্ত্র নিয়ে কাকে যেনো দৌড়াচ্ছিলো । তাই দেখে ভয়ে দৌড় দেই ।
কখন?পাগলা ঘটক আসার আগে ?
নবী থতোমতো খেয়ে বললো । স্যার পাগলা ঘটক কে ?
তুই কি ছাত্র?
জ্বি না স্যার ।
তাহলো সোজা এখান থেকে চলে যা ।
৫.
(২ দিন পর । কলেজের মুল দরজার সামনে।রাত ৮ টা । )
রাশেদ: এইখান পর্যন্ত আসছিল ওরা ।
নবী : জ্বি ভাই ।
রাশেদ : হাতে অস্ত্র ছিলো ?
নবী যেই উত্তর দিতে যাবে অমনি রাশেদের হাতে অস্ত্রটা গর্জে উঠলো । নবী মাটিতে পড়ে গেলো । ঝুমুর চোখ বন্ধ করলো । চোখ থেকে একটু জল গড়িয়ে পড়লো ।তারপর লম্বা একটা শ্বাস নিয়ে উল্টো দিকে হাটা শুরু করলো । আরও কিছু ছেলে মেয়ে এদিক সেদিক ছড়িয়ে গেলো । একটা কার এসে থামলো কলেজের গেটে । রাশেদ সহ আরও কয়েকজন উঠে বসলো । এর পরপর একটা মাইক্রয় এলো,তাতে নবীর মৃত দেহ নিয়ে বাকি কজন উঠে গেলো । মুহূত্তেই জায়গাটা ফাঁকা হয়ে গেলো । শুধু ঘটনার স্বাক্ষী হয়ে পড়ে রইলো,মাটিতে লেগে থাকা রক্ত ।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৬:৫৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অদ্ভুতত্ব.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৩

অদ্ভুতত্ব.....

আমরা অনিয়ম করতে করতে এমন অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি যে, অনিয়মকেই নিয়ম আর নিয়মকে অনিয়ম মনে হয়। নিয়মকে কারো কাছে ভালো লাগে না, অনিয়মকেই ভালো লাগে। তাই কেউ নিয়ম মাফিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের কালো রাজনীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত অধ্যাপক ইউসুফ আলী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৫৮




অধ্যাপক ইউসুফ আলী মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন।

উনি ছিলেন বাংলার অধ্যাপক। ৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান আইনসভার সদস্য হন। ৬৫ সালে পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯






ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার দশটা ইচ্ছে

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩১



প্রত্যেক রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মনে হয়-
যদি সকালটাকে দেখতে না পাই। কেউ যদি জিজ্ঞেস করেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বিস্ময়কর জিনিস কি? তাহলে বলব মানুষের বেচে থাকা। মরে গেলেই তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×