কোন এক ধূসর বিকেলে পথ ভুলে মোড়ের ব্লকবাস্টার স্টোরে ঢুঁ মারলাম!
ঢুঁ মেরেই থ বনে গেলাম - জনৈক সহব্লগারের খোমা উঁকি দিচ্ছে ডিভিডি'র কভারে!!
একই প্ল্যাটফর্মে ব্লগিং করছি যার সাথে, তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছেন উপলব্ধি করে তো আমি তখন সাত আসমানের চূড়ায়।
যেই ভাবা সেই কাজ।
অগ্রপশ্চাত বিবেচনা না করে ডিভিডি নিয়ে ঘরে ফিরলাম, পথিমধ্যে চিপস আর পপকর্ণের দোকানে থামলাম।
আয়োজন করে ডিভিডি প্লেয়ারে চালু করলাম লেজেন্ডারী ম্যুভি "ট্যাক্সি ড্রাইভার"।
তার আরও কিছুক্ষণ পর এই উদভ্রান্ত আমি ধাতস্থ হলাম যে, নিরোই হিরো (আরও খোলাসা করে বললে - হিরোর নাম হল নিরো!); আর এভাবেই আমার সহব্লগারের প্রোফাইল পিকচারের শানে-নযুল উদঘাটনের মধ্যে দিয়ে আমার 'ছিঃনেমাখোর' উপাধিপ্রাপ্তি!
লোকমুখে প্রচারিত, "অঙ্কে যারা ঝানু, বাংলায় তারা একটু কাঁচাই হয়"।
"হিন্দি সিনেমার সমঝদার যারা, তাদের 'ইঞ্জিরি' ম্যুভি তত না ঘাঁটলেও চলে" - ঐ অকাট্য যুক্তির ঈষৎ পরিবর্তিত ভার্সানে আমাকে জামিনে খালাস দেওয়া যায় কি?
হুমম। তাহলে এই বেলা হাটে হাঁড়িটা ভেঙেই ফেলি!
সাগরে পেতেছি শয্যা, শিশিরে কী ভয়!
হঠাৎ ঈদের বাজারে কর্ণকুহরে আচানক "সানি লিওন" শব্দযুগল আছড়ে পড়লো, আর আমি মনে মনে অনুবাদ করলাম: "শামি (কাবাব উইথ) লিমন"।
মাস-ভর রোজা রাখায় যা-ই শুনি, তা-ই ইফতারির সুস্বাদু আইটেমের নাম ধারণ করে কর্ণকুহরে প্রতিধ্বনিত হয়!
তো, যা বলছিলাম।
ভারতীয়-ই বলুন, আর আমেরিকান-ই বলুন, যে কোন দেশের চলচ্চিত্রের-ই আমি সংযমী ভোক্তা (পড়ুন ছিঃনেমাখোর)।
'সানি লিওন' থেকে শুরু করে 'বিদ্যা বালান' সম্পর্কিত যাবতীয় বিদ্যার ছিরি যার গুগল সার্চ-এঞ্জিনের মধ্যেই অস্ত যায়, বিদগ্ধ মহলে 'ছিঃ, ছিঃ' রব-তোলা সেই ছিঃনেমাখোরের পক্ষে কস্নিনকালে যে 'সিনেমা হল' দর্শন লাভ সম্ভব না, তা বলাই বাহুল্য।
তারপরও পাইলাম!
অবশেষে আমি তাহার দর্শন পাইলাম!
অনন্যোপায় হয়ে!
ব্রুনাই এয়ারলাইন্সে চেপে নিকষ আঁধারের অন্তরীক্ষে সুদীর্ঘ ১৩ ঘন্টার ক্লান্তিকর অতন্দ্র (নাসিকা-গর্জনে পাছে সহযাত্রীদের রোষানলে পতিত হই, সেই ভয়ে) প্রহর কাটাবার পর, ঘুম তাড়াবার অন্য কোন বিকল্প কৌশল খুঁজে না পেয়ে দৃষ্টি শেষমেশ নিবদ্ধ হল "Inflight Entertainment Kit"-এ। রিমোট কন্ট্রোল বাটনে আলতো অনিচ্ছুক চাপ লাগতেই মনিটরে গোটা গোটা অক্ষরে ভেসে উঠলো...
(পাঠকবৃন্দ চাইলে, চলতেও পারে।)
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৩