আকাশ পাড়ি দেয়া নক্ষত্রের মিছিল
হানা দ্যায় অকস্মাৎ, এই নিগুঢ় সীমান্তে।
ঘুম ভেঙ্গে জেগে ওঠে জোনাকিরা,
শত কোটি চোখ আঁধার দ্যাখে -
অবাক, অপলক, সবার অজান্তে!
ওরা কি জানে না,
কিভাবে ক্লান্ত পথিক নিষ্ক্রান্ত হয়?
রাতের শেষে আবার কেন রাতই আসে?
তবে কেন এই মিথ্যা জাগরণ?
কথা আছে, ঢের কথা জমে আছে
এই প্রান্তে - হয়তো কহিলো মহাজীবন।
খুঁজে দেখো, পাবে সেই অজানারে
বৃথা এই পলায়ন।
“আর স্বপ্ন আলোক?” – নম্র কণ্ঠে বিদ্রোহী প্রশ্ন,
পদ্ম পাতায় জমে থাকা যে শিশির
খসে পড়ে অর্ণবে অনন্ত
সে কেন হয় বোবা পাথর?
এর চাইতে মৃত্যু নয়, নিদ্রা ভালো।
ভুলে থাকা যায় আবার ভালোবাসাও যায় -
এই শীতের কুয়াশায়!
এই অসত্য নির্ঘুমে।
আমি দেখেছি ওই নরম হাতে আদর মাখা থাকে
-আঁধারে শুয়ে একাকী জোনাক ভেবেছে যাকে,
সেই মায়া পড়ে থাকে ধূলা-কাদায়,
আর ভ্রান্তিবিলাসে ক্লান্ত মন
দুর্দান্ত প্রভাতে উষ্ণ রোদ স্বপ্নে মাখায়
এই অসত্য নির্ঘুমে।
এই কবিতার উৎস কোথায় সেটা আমার পাঠকের জানার অধিকার আছে বলে আমি মনে করি। তাই এই বাড়তি কথাগুলো বলতে হচ্ছে।
এই পৃথিবীর কোন এক জায়গায়, একটা অদ্ভুত ঘর আছে। ঘরটা অন্ধকার। আর সেই অন্ধকারে কারা যেন বাস করে! তাদের পরিচয় আমরা জানি না কিন্তু আমরা জানি ওরা আছে। কারণ আমরা টের পাই যে ওরা আছে! তারাও আমাদের মতোই সুখ, দুঃখ, আনন্দ, বেদনা নিয়ে তৈরি। যেহেতু আমরা ওদের কোন কিছুই জানতে পারছি না – তাই ওদেরকে আমাদের অপরিচিত লাগে, অচেনা লাগে। এই অচেনা জীবগুলোর সাথে আমাদের সম্পর্ক কি সেটা আমরা পরে জানতে পারবো। আপাতত বলব - ওদের ব্যাপারে আমরা অচেতন নই, বরং অবচেতন আছি।
মাঝে মাঝে গভীর রাতে ওদের মধ্য থেকে একজন আমার সাথে দেখা করতে আসে, কথা বলে। সেই অন্ধকারে। সে কথা বলে, আমি শুনি। আমাদের দুই জনের কাছ থেকে একটু দূরেই যেখানে আঁধার একটু গাঢ় আর ঘন, সেখানে বাকীরা কিলবিল করতে থাকে। ওরা অপেক্ষা করে। এসব দেখে আমার মনে অশুভ চিন্তা খেলে যায়। কিন্তু আমি সেই আঁধারের প্রাণীর প্রতি আমার তীব্র আকর্ষণ লুকাতে পারি না। আমি বার বার সেই আঁধারের কাছে ছুটে যাই। আমি ওখানে গেলেই সে ছুটে আসে। আর বাকীরা অপেক্ষা করে।
ওরা কেন অপেক্ষা করে?
ওরা কোন শব্দ করে না, কেবল দূর থেকে আমাদের কথা বলতে দেখে। প্রথম প্রথম আমার খুব অস্বস্তি লাগতো। কিন্তু এখন আমি এসব উপেক্ষা করতে শিখে গেছি। এখন আমি রাত জেগে সেই আঁধারের প্রাণীর নানা রকম কৌতূহলী কথাবার্তা শুনি। ওর নানা রকম আজগুবি প্রশ্নের জবাব দেই। এমন প্রায়ই হয়েছে যে ওর কথা শুনতে শুনতে আমি কখন ঘুমিয়ে পড়েছি, টেরই পাইনি! আমি ঘুমিয়ে গেলেও সে জেগে থাকে। ওরাও জেগে থেকে।
ওরা - কেন জেগে থাকে?
আমার অন্যান্য কবিতাঃ
১) ঘুণপ্রলাপ
২) আমার আজ আর ফেরা হবে না
৩) মুর্খের আত্মপোলব্ধি
৪)মরীচিকায় কানামাছি
৫)ঈশ্বরের কাছে এক দিনের জন্য মৃত্যু দাবী করেছিল তরুণ এক কবি
৬) প্রায় অজানা সুদূর অতীতে
৭) বাস করছি আপন অমাবস্যায়
৮) শ্মশানযাত্রী