পানি তৃষ্ণা মেটায়। শরীরের বেশিরভাগ অংশই পানি। এছাড়া কয়েকটি অবাক হওয়ার মতো কাজ করে পানি। যেমন-
(১) স্লিম রাখে : ওযন কমাতে চাইলে বেশি করে পানি পান করতে হবে। পানি অন্যান্য খাবারের পরিপাক ও শ্বসন (মেটাবলিজম) ত্বরান্বিত করে। একই সঙ্গে পানি খেলে পেট ভরে যায় বলে খাবার গ্রহণের পরিমাণ কমে যায়। ওযন কমানোর জন্য ঠান্ডা পানি বেশি কার্যকর। বরফঠান্ডা পানি খেলে মেটাবলিজম বাড়ে। কারণ এই ঠান্ডা পানিকে শরীরের তাপমাত্রায় আনতে শরীরকে বাড়তি কাজ করতে হয়। এতে ক্যালোরি ক্ষয় হয়, ওযন কমাতে যা সবচেয়ে বেশি দরকার।
(২) শক্তি জোগায় : শরীরে যখন ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্য হয়, তখন কোষগুলো পর্যাপ্ত পানি পায় না। ফলে পুরো শরীরটাই দুর্বল হয়ে পড়ে। পানি পেলে যেমন বাগানের গাছগুলো সজীব হয়, তেমনি শরীরও সজীব হয়। পানি কমে গেলে শরীরে রক্তের পরিমাণও কমে যায়। ফলে কোষে অক্সিজেন ও নুন (মিনারেল) কমে যায়। পানির পরিমাণ ঠিক থাকলে অক্সিজেন ও মিনারেল পেতে কোষের কোন সমস্যা হয় না।
(৩) মানসিক চাপ কমায় : মস্তিষ্কের ৮৫ শতাংশই পানি। যখন মস্তিষ্ক পানিশূন্য হয়, স্বাভাবিকভাবেই মস্তিষ্কের সকল কর্মকান্ডে ভীষণ চাপ পড়ে। তৃষ্ণা পেলেই বুঝতে হবে মস্তিষ্কে পানির ঘাটতি পড়েছে। কথায় বলে, ভয়ে গলা শুকিয়ে যায়। মানে হচ্ছে, ভয় পেলে মস্তিষ্ক তার স্বাভাবিক কাজ করতে পারে না, তৃষ্ণার মাধ্যমে শরীরকে জানিয়ে দেয় তার পানির প্রয়োজন। কোন চাপ অনুভূত হ’লেই, তা পরীক্ষা হোক বা ব্যবসা-চাকরির টেনশনই হোক, বেশি করে পানি পান করতে হবে। তাহ’লে চাপ কমে যাবে এবং মস্তিষ্ক কাজ করতে পারবে স্বাভাবিকভাবে।
(৪) শরীর গঠনে কাজ করে : শরীরের জয়েন্টেও পানি থাকে। পানি ঠিকমতো পেলেই মাংসপেশী কাজ করে। অতএব ক্রীড়াবিদ হোন বা ব্যায়ামবীর হোন মাংসপেশী সুগঠিত করতে চাইলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
(৫) ত্বক সুস্থ রাখে : কসমেটিক কোম্পানীগুলো ব্যবসা করে যাচ্ছে এই চিন্তাকে দূর করার কৌশল নিয়েই। বয়সের বলি রেখা কমানো, ত্বকের খসখসে ভাব দূর করা, রং ফর্সা করা, সারাদিন তরতাজা থাকা এসবের জন্য পানি কাজ করতে পারে সবচেয়ে বেশি। ত্বকের কোষ সুস্থ থাকলে এমনিতেই মানুষকে ফ্রেশ, সজীব দেখাবে। পানি ত্বকের পানিশূন্যতা কমায়। ত্বকের কোষকে পরিপূর্ণ রাখে। এতে মুখমন্ডল থাকে তরুণ।
(৬) হজমে সাহায্য করে : শাক-সবজি এবং আঁশযুক্ত খাবারের সঙ্গে প্রচুর পানি পান করতে হবে, তাহ’লে কোষ্ঠকাঠিন্য কমে যাবে। প্রচুর পানি খেলে হজমের পর খাবারের বর্জ্য অংশ সহজেই পানির সঙ্গে মিশে পায়খানা হিসাবে বেরিয়ে যায়। যখন শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়, শরীর অন্ত্রের মাধ্যমে পায়খানার সঙ্গে থাকা পানি শুষে নেয়, ফলে তৈরি হয় কোষ্ঠকাঠিন্য।
(৭) কিডনির পাথর প্রতিরোধ করে : পানি পরিমাণ মতো পান করলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি অনেক কমে যায়। বিশ্বজুড়ে কোল্ডড্রিংক্সের ব্যাপক বিস্তারের কারণে কিডনিতে পাথর হওয়ার হার বেড়েছে, পানি কম খাওয়ার কারণে। কিডনির পাথর আসলে এক ধরনের নুন ও মিনারেল, যা ক্রিস্টাল আকারে জমে পাথরের মতো হয়। প্রচুর পানি পান করলে এই নুন ও মিনারেল জমে গিয়ে ক্রিস্টাল তৈরি করতে পারে না।
* সংকলিত
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে নভেম্বর, ২০১১ দুপুর ১২:১৬