"আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল"
নবনীতার হৃদয়ের কথা।
অনেক কথা । কি সেই গল্প ?
কেন জানি ব্রিটেনের দরিদ্র দের নিয়ে নবনীতার গবেষণা আর লেখা লেখি করতে খুব ভালো লাগে।
কারন নিজেও সেই টানা পড়নের মধ্যে দিয়ে জীবনের অনেক টা পথ পাড়ি দিতে হয়েছে হয়তো তাই । কি দেশে কি বিদেশে দুই যায়গাতেই ।
তাই দারিদ্রের সাথে তার অনেক ঘনিষ্ঠতা । সেই আফ্রিকার লেখকের কথা টি তার খুব মনে ধরেছে। "দারিদ্র হলো দাহ ,যে এর মধ্যে দিয়ে গেছে সেই জানে এর কষ্ট "
নবনীতা অনেক গুলো ভাইবোনের বিরাট এক পরিবার থেকে আসা । চাওয়া পাওয়া খুব সীমিত ।
যখন এখানে আসলো তাঁকে জীবন আরম্ভ করতে হয়েছে যে কাজ পাওয়া গেছে tai। যা অনেকেই করে থাকে। "প্রয়োজন কোন আইন মানে না" সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা খাটুনি ,বাড়ি এসে নিজ হাতে সব কাজ সামলানো । সোজা কথা নয় ।
যে ভাবে জীবন আরম্ভ করতে হয়েছে তা সে আশা করে আসেনি।
তাই আশা ভঙ্গের বেদনায় বে বেগ পেতে হয়েছে। কনফিডেন্স সব চলে গেছে।
আবার তা ধীরে ধীরে আসে যখন সে পড়াশুনা আর স্কিল যোগাড় করে চাকুরী পায় । নিজের ক্যারিয়ার গোছাতে থাকে ।
বেশি দিন দরকার হয় না উপরে উঠতে। একবার আরম্ভ করায় কষ্ট । কারন অভিজ্ঞতা ছাড়া কেউ এখানে কাজে নিবে না।
সব কিছুই নবনীতার হয় এটাই এই দেশের সুবিধা। যেমন হয়েছে অভিজ্ঞতা, চাকুরী তার সাথে সেই লাইনের উপরে পড়াশুনা আর গবেষণার সুযোগ ।
গবেষণা হ্যাঁ গবেষণার কথায় বলছিলাম। দরিদ্র লোকজন আর তাদের জীবন এবং মেয়েদের কষ্ট বা কি ছিল তাদের প্রতিদিনের জীবন তা জানার বিরাট সুযোগ এনে দায় এই গবেষণা করতে গিয়ে ।
ভিক্টোরিয়ান আমলে নারী ছিল এখন কার বাংলাদেশের নারীদের মতো জীবন । আর নবনীতার জীবন ছিল বাংলাদেশে থাকা কালীন সময় টা ব্রিটেনের মধ্য যুগের মতো ।
টাকা ঢাললেও ভালো বাড়ি পাওয়া যেতো না । কয়লা দিয়ে দাঁত পরিষ্কার, শ্যাম্পু নাই, মেথর দিয়ে পায়খানার মল সরানো, কাঠের চুলা, ছাই দিয়ে থালা বাসন পরিষ্কার, পানির লাইন ছিল না, খোলা দুর্গন্ধ ড্রেন, গরুর গাড়ী, গুন টানা নৌকা, মাটি র রাস্তা, ইলেকট্রিক ফ্যান ছিল না, হাত পাখা দিয়ে বাতাস, ইঁদারা থেকে দড়ি বালতি দিয়ে পানি তুলা, খাওয়ার আগে যাস্ট পানি দিয়ে হাত ধোয়া, টয়লেট থেকে এসে ছাই দিয়ে হাত ধোয়া, প্রতি বছর কলেরা,টাইফয়েড মহামারি হয়ে দেখা দিত। এই সব ছিল ব্রিটেনে মধ্য যুগে আর ভিক্টোরিয়ান আমলে।
আর চিন্তা ধারা ?
আমাদের চিন্তা ধারা এখনো আধুনিক হয় নি। যুক্তি দিয়ে মানুষ বিচার করে না। মেয়েরা ঘর বন্দি, ইনকাম করেনা ৭০% মেয়ে। মেয়ে দের কাজ বাচ্চা উদপাদন আর রান্না বান্নায় সীমাবদ্ধ । নারী পুরুষ সমান অধিকার পায় না। সমান ভাবে দেখা হয় না। পুরুষ বাবার সম্পত্তি দ্বিগুণ নায় ,খুব tradisan মেনে চলে। নারী ডিভোর্স হলে দ্বিতীয় বিয়ে হতে ঝামেলা হয়। মানুষ কানা ঘুষা করে। দোষ হয় মেয়ে দের।
বাংলাদেশ এখনো নারী বান্ধব দেশ হতে পারিনি। মানুষ খুব যাজমেন্টল ।
নবনীতা ব্রিটেনের নারী নিয়ে কাজ করতে গিয়ে ১৮৮৮ সালের জ্যাক দি রিপার এর যে মেয়ে গুলো ভিকটিম হয়ে ছিল তাদের জীবন নিয়ে গবেষণা চালায়।
৩৫% মানুষ ভিক্টোরিয়ান আমলে মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বাস করতো ।
১০/১১ জন সন্তানের এক এক টি পরিবার। বার্থ কন্ট্রোল পিল তখনো বের হয় নি।
লাইন ধরে ছেলে মেয়ে ,পরনে ছেড়া ময়লা কাপড়, অপিরিস্কার চেহারা ,কাজ করতে করতে আর সন্তান জন্ম দিতে দিতে জীর্ণ শীর্ন মলিন চেহারার মা। এই ছিল ভিক্টোরিয়ান আমলে দরিদ্র পরিবারের চিত্র ।
যার সাথে নবনীতার পরিবারের অনেক মিল।
শুধু একটা দিক ছাড়া আর তা হল নবনীতা র বাবা সবায় কে পড়াশুনা মুল লক্ষ্য এটা নির্ধারন করে দিয়ে ছিলেন আর এই দরিদ্র ভিক্টোরিয়ান আমলের পরিবারে তা বলার কেউ ছিল না ।