somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জামাতের কথিত ইসলামী সৈনিক শিবির আর হাসিনার ছাত্রলীগ: আচার-আচরনে ও পোশাক-পরিচ্ছদে একই। আসলে এরা সবাই গদি দখলের সৈনিক, ইসলামী সৈনিক বলাটা মুনাফিক্বী।

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি সেখানে বেশ কয়েকজন জানাশুনা ক্লাসফ্রেন্ড পেয়েছি, যাদের মধ্যে কেউ ছাত্র শিবির করে, কেউ ছাত্রদল করে আবার কেউ ছাত্র লীগ করে। আমার পরিচিতদের মধ্যেও এমন অনেকে ছাত্র আছে যারা উপরোক্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে জাড়িত।
তাদের মধ্যে ছাত্রশিবিরের পাঁচজনের মধ্যে একজনকে মাঝে মধ্যে নামাজ পড়তে দেখা যায়। আর বিএনপি লীগের গুলো কেউ নামাজ পড়েনা।ছাত্র শিবিরের পোলাটা নামাজ পড়ে ছোট থেকেই তথা পারিবারিকভাবে কিছুটা নাকি ইসলামিক।
কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে, তাদের পোশাক-পরিচ্ছদে কোন পার্থক্য নেই। সবাই সুন্নতী পোশাক না পড়ে ইহুদী-খ্রিস্টানদের শার্ট-প্যান্ট পড়ে থাকে। আরেকটা বিষয় চরমভাবে লক্ষনীয়, আর সেটা হলো তাদের মধ্যে কারও নবীজী উনার সুন্নতী দাড়ি নেই। সবাই ক্লিনসেভ করা।
আরো যে বিষয় গুলো তাদের মধ্যে দেখা যায় আর সেটা হচ্ছে সবারই পায়ের গুটলির নিচে পোশাক থাকে।ছাত্রশিবির ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ সবারই এই অবস্থা। এই তিন দলের কারও মাথায় নবীজী উনার সুন্নতী টুপি পড়তে দেখা যায় না তথা এরা কেউই টুপি মাথায় দেয়না । তবে মাঝে মধ্যে এরা সবাই ক্যাপ মাথায় দেয়।
এই তিনদলের ক্লাসফ্রেন্ডদের মধ্যে কেউ কেউ সিগারেটও টানে। অর্থাৎ ছাত্রশিবিরি ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ এদের কেউ কেউ স্মোকিংও করে। রাস্তার পাশে ফুটপাতের দোকান গুলোতে এদের সবাইকে দাড়িয়ে অবাধে বিভিন্ন জিনিস খেতে দেখা যায়। আবার স্টাইল করে বাম হাতেও খাবার খায় ও পানি পান করে।
আরও জানার বিষয় হলো যে এদের দলের সবাই মুভি দেখে। ছাত্রশিবির ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের অনেকে আবার প্রেমও করে। গার্লফ্রেন্ডদের সাথে কম-বেশি আড্ডাও দেয়। ধানমন্ডির লেক ও টিএসসি ইত্যাদি স্থানেও অবাধে এরা আড্ডা দেয়।
উপরোক্ত ক্লাসফেন্ডদের সবাই গান শুনে। হামদ-নাত শরীফ কখনও শুনতে তাদেরকে দেখা যায় না। তাদের সবার মধ্যে ছবির অবাধ বিচরণ। কোথাও কোথাও দাড়িয়েও প্রসাব করে থাকে এরা সবাই। শুধুমাত্র নামাজ যে পড়ে সে ব্যাতিত।
সুন্দরী মেয়ে দেখলে ফ্যালফেলিয়ে তাকিয়ে থাকে। নিজ বন্ধুদের কাছে টিজিং মনোভাবের শব্দও উচ্চারন করে থাকে তখন। পর্দা পালন বিষয়ে তাদের কোনও চেতনা দেখা যায় না।
উল্লেখ্য যে ছাত্রশিবির ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের এরকম শত সহস্র কাজ প্রতিটি পয়েন্টে পয়েন্টে দেখা যায়। বাহ্যিকভাবে কারও সাধ্য নেই চিনার এরা কোন দল করে। সবার আচার-আচরণ ও পোশাক-পরিচ্ছদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে তাদেরকে ইসলাম পরিপস্থী কাজে একই দেখা যায়।
কিন্তু গনতন্ত্র’র বা গদির কথা আসলে সবাই নিজ নিজ দলের সাফাই গাই। ছাত্রলীগ বলে দেশ বাঁচাতে হলে আওয়ামীলীগের বিকল্প নেই। ছাত্রদল বলে গনতন্ত্রের জন্য আমাদের বিএনপির আন্দোলনে সবাইকে শরিক থাকা দরকার। আর ছাত্রশিবির বলে নাস্তিক তাড়তে জামাতের সাথে থাকতে হবে।একে অপরে তখন বিপরীত দলের কুকর্মগুলো তুলে ধরে কাঁদা ছুড়তে থাকে। নিজ দলকে গনতন্ত্রের হাতিয়ার হিসেবে প্রমান করতে যার পর ন্যায় ব্যাস্ত হয়ে যায়। একধাপ এগিয়ে ছাত্রশিবির লীগের ছাত্রফ্রেন্ডটাকে বলে তোমাদের বিরুদ্বে জিহাদ করা মুসলমানদের জন্য ফরয। আর এজন্য আমরা ইসলাম ও ঈমান বাঁচাতে এবং নাস্তিক তাড়াতে তোমাদের বিরুদ্বে মাঠে জিহাদে নেমেছি। আমরা মুজাহিদ। ইসলামী সৈনিক। আরও কত কি!!!!!
এখন আমার কথা হলো যারা নিজের সাড়ে তিন হাত বডিতে ইসলাম জারি বা কায়েম করতে পারেনি, তারা বা তাদের এমন দল কিভাবে একটা জাতির মধ্যে ইসলাম জারি করবে? ইতিহাসে এরকম কোনও প্রমান কি কেউ দেখাতে পারবে কি? বরং ইতিহাসে এটাই আছে যে যখন মুসলমানরা আমল ছেড়ে নামে মুসলমান হয়েছে তখনি তাদের উপর বিধর্মীর দ্বারা বা নিজেদের মধ্যে পরস্পরের গন্ডগোল দ্বারা আযাব-গযবে পতিত হয়েছে, নিষ্পোষিত হয়েছে, অপমানিত হয়েছে, নির্যাতিত হয়েছে। একসময় তাদের পুরো ক্ষমতা বিধর্মীরা দখল করে নিয়েছেন।
কিন্তু এটা কেউ ইতিহাস থেকে অথবা কুরআন শরীফ-হাদীছ শরীফ থেকে প্রমান করতে পারবে না যে ইসলামী আমল ছেড়ে তথা নবীজী উনার আদর্শ ছেড়ে কেউ কাফিরকে পরাজিত করতে পেরেছে।বরং মুনাফিক্বরাই ইসলামকে ব্যবহার করে নিজের ফায়দা লুটেছে, আমল ছেড়ে দিয়েছে এবং নিজেকে নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছে।
হযরত ছাহাবা ই ক্বিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগন সহ হযরত সালাউদ্দীন আইউবী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত খাজা মঈন উদ্দীন চিশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি , হযরত মুহম্মদ বিন কাশিম রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত উমর ইবনে আব্দুল আজীজ রহমতুল্লাহি আলাইহি প্রমুখ উনাদের মুবারক জীবনী পড়লে দেখতে পাবেন যে ফরয, ওয়াজিব, সুন্নতে মুয়াক্কাদা ছাড়া তো দুরের কথা সুন্নতে যায়েদা(মুস্তাহাব আমলও) ইচ্ছাকৃত কখনও ছেড়ে দিতেন না এবং উনাদের খিলাফতী সৈনিক গুলোও এমন ইসলামী আমল করেছেন। উনারা সবার আগে নবীজী উনার আদর্শকে(আমল) প্রাধান্য দিতেন তারপর জিহাদের জন্য প্রস্তুত হোতেন। আর কখনই কাফিরদের সাথে সম্পর্কে তো অনেক দুরের বিষয় তাদের সাথে নুন্যতম মুহব্বতও রাখতেন না। তাদেরকে সব সময় ঘৃনা করতেন। আর এখনকার ইসলামী দলগুলো আমেরিকা-বৃটেনের দিকে চেয়ে থাকে।
অপরদিকে পৃথিবীতে যত খিলাফত হাত ছাড়া হয়েছে তাদের প্রত্যেকের আমল বর্তমান কথিত ইসলামী সৈনিকদের আমলের সাথে মিলে যায়। যারা কিনা তখন তলে তলে বিধর্মীদের গোলামে পরিনত হয়ে গিয়েছিলেন। ফলে খিলাফত ছাড়তে বাধ্য হয়। নিশেষ হয় মুসলিম দেশ, কোটি-কোটি মা-বোনরা ইজ্জত হারায়, শহীদ হয় কোটি কোটি নিরাপরাদ মুসলমান।
সুতরাং মুসলমান জাতিকে এই গদির প্রতারনা থেকে বাঁচতে হবে। খালিছ তওবা –ইস্তিগফার করতে হবে।নিজের আমলকে পরিপুর্ন ইসলাম মাফিক তথা নবীজী উনার আদর্শ মাফিক করতে হবে। মনে রাখবেন ১৪০০ বছর আগের ইসলাম আর এখনকার ইসলাম এক। তাহলে অবশ্যই আল্লাহ পাক বিশেষ কোন ব্যাক্তিদ্বারা এই জমিনে প্রকৃত খিলাফত জারি করবেন। এটা আল্লাহ পাক উনার ওয়াদা।

১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×