বর্তমান যুগে বিয়ে মানেই সুন্দরী। বিয়ে মানেই ধন-সম্পদের ছড়াছড়ি। গরিবদের দিকে মুখ তুলে তাকাতেও ধনী ব্যাক্তিরা নিজেদেরকে লজ্জা মনে করে থাকে। আর তাদের মেয়ে ঘরে নিলে তো বুঝি তাদের দেহ-মন পচে যাবে। আর এই নিচু ও হীন মন-মানসিকতার জন্য তাদের পরিবারে কখনো সুখ থাকে না এবং নেক সন্তানও তেমন দেখা যায় না্। কিন্তু অর্ধ জাহানের খলিফা আমীরুল মু’মিনীন হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি ঠিকই এই সমস্ত বেয়াদব নামধারী মুসলমানদের মুখে চুলকানী মাখা আদর্শ স্থাপন করে দিয়ে গেছেন। ধন-সম্পদে সুখ নয়, সুখ হচ্ছে তাক্বওয়া-পরহেজগারীতে। দেখা যাক উনার বেমেছাল আচরণ:
আমীরুল মু’মিনীন হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি নাগরিকদের অবস্থা জানার জন্যে মদীনা শরীফ উনার রাস্তায় ঘুরতে ছিলেন । হঠাৎ এক বাড়ীতে এক বৃদ্ধা ও তাঁর কন্যার কথোপকথন শুনে দাড়িয়ে যান । শুনতে থাকলেন তিনি । বৃদ্ধা মহিলাটি তার মেয়েকে বলছেন, মা দুধে পানি মিশিয়ে বিক্রি করলে হয় না? তাহলে আমাদের অবস্থা আরও স্বচ্ছল হতো।” কন্যা তার মায়ের উত্তরে বললো, তা কি করে হয় মা । আমিরুল মুমিনীন উনার হুকুম, কেউ দুধে পানি মেশাতে পারবে না। ইসলাম এটা পছন্দ করেন না।
উত্তরে বৃদ্ধা বললো, ” খলীফা উনার আদেশ হলো তো কি, কেউ তো আর দেখছে না।” কন্যা প্রতিবাদ করে বললো, “না মা তা হতে পারেনা । প্রত্যেক বিশ্বাসী মুসলমান উনাদের দায়িত্ব-কর্তব্য সম্মানিত খলীফা উনার মুবারক আদেশ মেনে চলা । খলীফা না দেখতে পান কিন্তু আল্লাহ পাক তিনি তো সর্বব্যাপী, উনি তো দেখতে পাচ্ছেন ?
আমীরুল মু’মিনীন হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সব কথা শুনলেন । এরপর তিনি বাসায় চলে যান । তিনি ঘটনাটা ভুলতে পারলেন না । ভাবলেন, অজানা ঐ মেয়েটিকে কি পুরস্কার দেয়া যায় । অনেক ভেবে একটা সিদ্ধান্ত নিলেন । পরদিন দরবার শরীফে এসে খলীফা সেই অজানা মেয়েটিকে ডেকে পাঠালেন । মা ও মেয়ে ভীত সন্ত্রস্ত ও কম্পিত পদে খলীফা উনারর দরবার শরীফে এসে উপস্থিত হয় ।
তারা উপস্থিত হলে খলীফা তাদের জন্য খাবারের জিনিস নির্ধারণ করেন এবং মেয়েটিকে উপহার স্বরুপ উনার এক পুত্রের সাথে বিয়ে দিয়ে দেন । পুত্র গত রাতের সমস্ত বিবরণ শুনে খুশি হোন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার শুকরিয়া আদায় করেন। কেননা এর চেয়ে উপযুক্ত কন্যা আর কোথায় খুঁজে পাওয়া যাবে?