মহান ব্যাক্তিত্ব পৃথিবী বারবার পায় না, যখন পায় তখন এ ধরনী উদ্বেলিত হয়, আলোড়িত হয় মানুষের অন্তর, রঙিন হয় উনাদের আলোকে সমস্ত হতভাগ্য মানুষের জীবনধারা। সময়ের প্রান্তে-সীমান্তে পৃথিবী খুঁজে ফেরে সেসব সোনালি মানুষকে। যেগুলো এখন রুপকথার ইতিহাসের মত। তেমনি একদল মানুষ এসেছিলেন একটা শ্রেষ্ঠ সময়ে। যে সময় পৃথিবী আর কখনো দেখবে না। যে ন্যায়নিষ্ঠা পৃথিবী আর কোনো দিন পাবে না, যে প্রশান্তি পৃথিবী আর অনুভব করবে না এবং সুদীর্ঘ চৌদ্দ শতকের কোনো একটি মুহূর্তেও পায়নি, অনুভব করেনি। সেই মহান দলে ছিলেন এমন একজন ব্যাক্তিত্ব যে উনার সারাটি বাল্যজীবন ঊষর মরুর বুকে উষ্ট্রচারণের কাজ করেছেন।হিজরতের সময় যখন ‘যাজযান’ প্রান্তর অতিক্রম করছিলেন তখন অশ্রুভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলেছিলেন, ‘আল্লাহু আকবার! এমন এক সময় ছিল যখন আমি পশমি জামা পরে এই মাঠে প্রখর রৌদ্রতাপে উট চরাতাম। যখন শ্রান্ত-ক্লান্ত হয়ে ক্ষণিকের জন্য বসতে যেতাম, তখন পিতার হাতে নির্মমভাবে প্রহৃত হতাম। কিন্তু আজ আমার পক্ষে এমন দিন এসেছে, আমার ওপর এক আল্লাহ পাক এবং নুরে মুজাসসাম হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা ব্যতীত অন্য কোনো মালিক নেই।
তিনি হলেন আমীরুল মু’মিনীন হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম। যিনি খিলাফত সময়কালে এমনকিছু নজির রেখে গেছেন, যার দ্বিতীয় কোনও মেছাল পাওয়া যাবে না। এককথায় উনার মেছাল তিনি নিজেই। একটি ঘটনা দেখলেই আমাদের বিষয়গুলি বুঝা সহজ হবে আশাকরি:
একদিন মোমের আলোয় কাজ করছিলেন আমীরুল মু’মিনীন হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি। এমন সময় সেখানে আসেন উনার দুই আত্মীয়। ফলে তিনি তাড়াতাড়ি ফুঁ দিয়ে মোমবাতিটি নিভিয়ে দিলেন। অন্য আরেকটি মোমবাতি ধরিয়ে অতিথিদের বসতে দিয়ে তাদের খোজখবর নিতে থাকলেন।
কৌতুহল চাপতে না পেরে একজন আদবের সহিত জানতে চাইলেন, হে আমিরুর মুমিনীন, আমাদের দেখে কেন আপনি আগের মোমবাতি নেভালেন আর নতুন একটি মোম জ্বালালেন? খলিফা জবাবে বললেন, আগের মোমবাতি ছিল বায়তুলমালের সম্পত্তি থেকে কেনা। আপনারা যেহেতু আমার আত্মীয়, তাই আপনাদের সাথে আমার ব্যক্তিগত অনেক আলাপ হবে। আমার নিজের কাজে জনগণের আমানত থেকে আমি কিছু খরচ করতে পারি না। যদি সামান্যও খরচ করি তাহলে আল্লাহ পাক উনার নিকটে আমাকে জবাবদিহি করতে হবে। তাই নিজের সম্পদে কেনা মোমবাতিটি আপনাদের দেখেই জ্বালিয়ে দিয়েছি।
আর আজ গনতন্ত্র নামক শাসনব্যবস্থা জনগনকে কি দিয়েছে? শুধু রক্ত চুষতে শিখিয়েছে। অন্যের সম্পদ কুক্ষিগত করে নিজের সম্পদের পাহাড় করতে বলেছে। মারামারি-হানাহানি, বেশরা-বেহায়া কাজ উপহার দিয়েছে। তারপরও মুসলিম জাতি অন্ধের পুজারী হয়ে সোনালী যুগ, সোনালী শাসন ছেড়ে এই রক্তচোষক গনতন্ত্র নামক শাসনব্যবস্থার দিকেই দৌড়াচ্ছে। এদের বোধদয় কবে হবে তা জানিনা। এই রক্তচোষক গনতন্ত্রের জন্যই আজকে মুসলিম জাতি কুড়ে কুড়ে মরতে বসেছে।