প্রিয় বন্ধুরা এবং ব্লগের শুভানুদ্ধায়ীরা আপনাদের দোয়ায় এবং আপনাদের জোগানো সাহসে অবশেষে আমি সোনার হরিন ৪টি টিকিট পেয়েছি। ।
এ কয়েকদিনের যে অমানবিক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি তা বলে বুঝাতে পারবনা। । প্রতিনিয়ত ধর্যের চরম পরিক্ষা দিয়েছি, শীতের সাথে যুদ্ধ করেছি, ক্ষুধার সাথে যুদ্ধ করেছি, উশৃংখল মানুষ গুলার সাথে যুদ্ধ করেছি। প্রতিনিয়ত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছি, আমি অনেকেই দেখেছি ৩দিন ৩রাত যুদ্ধ করার পর নিজের যায়গা হারাতে অনেকই দেখেছি বিরক্ত হয়ে ধর্যহারা হয়ে রনভঙ্গ দিতে। , অমি নিজেও গতকাল রাতে রনভঙ্গ দেওয়ার একরকম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম তারপরও নিজের মনকে অনেক বুঝিয়েছি, টিকিট পাওয়ার পর মানুষ যে আনন্দ করে এ রকম প্রতিচ্ছবি নিজের মনে একে মনকে নতুন করে চাঙ্গা রেখেছি। , আমার প্রিয় কিছু মানুষও শেষ মুহুর্তে এসে রনভঙ্গ না দেয়ার জন্য উৎসাহিত করেছে।
পক্ষান্তরে কিছু কাছের মানুষ ও নিরুৎসাহিত করেছে ফোন করে বলেছে আকাইম্যা কাম নাই খাইয়্যা ধাইয়্যা অফিস কামাই দিয়া খেলা দেখার জন্য জীবন দিয়া দিতাছে কিংবা খেলা না দেখলেই কি হয় ইত্যাদী ইত্যাদী অব্শ্য তারাও একদিক দিয়ে উপকার করেছে।
তবে আজ শেষ মুহুর্তে এসে নিজের জায়গাটুকুর প্রায় মৃত্যু দেখতে পেয়েছিলাম, মিরপুর বাংলা কলেজের ২০/৩০জন ক্যাডার এসে যা করল এটা বর্ননাতীত, ৩/৪দিন ধরে অমানুষিক ভাবে কষ্ট করে যাওয়া অনেক ক্রিকেট প্রেমিই শেষ মুহুর্তে এসে নিজের অবস্থানটিতে দাড়িয়ে থাকতে পারেনি আমি যেই মুর্হুতে ব্যাংকে প্রবেশ করছি সেই মুহুর্তে মিরপুর বাংলা কলেজের উশৃংখল ক্যাডারা এসে হাঙ্গামা করল আমার পিছনের ছেলেটাকে কালার ধরে নিয়ে গিয়ে মারল, পুলিশ নামক জন্তুটি এখানে নিরব, আর আমি নিজেও যে কতবার কিলা কিলি করেছি নিজের অবস্থানটি ধরে রাখার জন্য অনেক হুমকিরও শিকার হয়েছি।, অনেক ধুলা বালী খেয়েছি বিশেষ করে সকালে যখন সিটি কর্পোরেশনের পরিছন্ন কর্মীরা এসে রাস্তা জাড়ু দেয় আর সেই সময়টুকু ধুলার ঝড়ের সামনে স-ইচ্ছায় ধারিয়ে থাকা। । ।
তবে ব্যাংকের ভিতরে টিকিট নিয়ে যে বিশাল অনিয়ম হচ্ছে এটা নিজের চোখে দেখে ভালভাবে বুঝতে পেরেছি, কারন অমি যখন ব্যাংকের ভিতরে প্রবেশ করলাম গিয়ে দেখি বেশির ভাগই অপরিচিত মানুষ যারা একটু আগে আমি লাইনে থাকাকালিন আমার সামনে দিয়েই ব্যাংকের লেনদেরে কথা বলে ব্যাংকে প্রবেশ করেছে, তাছাড়া এ কয়দিনে লাইনে দাড়িয়ে থাকা আমার অগে পিছে অন্তত ২০জনের চেহারা আমি ভালবাবেই মুখস্ত। আর এইসব হীনমন্য ও বিবেকহীন মানুষ গুলা এবং ব্যাংকরে অসত কর্মকর্তাদের জন্য অনেকেই অমানুবীক পরিশ্রম করার পরও সোনার হরিনটি পাবেনা এটা নিশ্চিত। ।।
গতকাল সারারাত নারীরাও ছিল, তাদের লাইনে ছিল ৫০/৬০জন, কারোর ছেলের পরীক্ষা চলতেছে, কারোর ছেলে নেই তাই নিজের মেয়ের জন্য, কারো সন্তান ছোট তাই লাইনে দাড়িয়ে টিকে থাকতে পারবেনা বলে নিজেই দাড়িয়েছিলেন আবার অনেক কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়েরাও ছিল অনেকেই রাতে অসুষ্হ হয়েছেন তারপরও তীরে এসে তরী ডুবাবেনা বলেই পন করে লাইনে থেকেছেন, তাদের জন্য দুঃখ হচ্ছে। , সাড়া রাতা তাহারা আমাদেরচেও বেশী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছেন। । ,
তবে টিকিট হাতে পাওয়ার পর আমার সব কষ্ট সব রাগ ক্ষোভ সব নিমিষেই শেষ হয়ে গেছে, জুস ফ্রুটিকার টিভি এ্যাড এর মত। । ।
এ কয়দিনে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, প্রথমত বছরের পর বছর ফুটপাথের মানুষ গুলো কি পরিমান অমানবীক কষ্ট করে বেচেঁ থাকে এটা সবচেয়ে বড় অর্জন, দ্বিতীয়ত অধম্য চেষ্টা করলে ভাগ্যকেও হার মানানো যায়। ।
পরিশেষে মনে মনে সৃষ্টিকর্তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি নিজের অবস্থান ঠিক রাখতে গিয়ে যে উশৃংখল অমানুষ গুলোর সাথে অনিচ্ছা সত্যেও খারাপ ব্যাবহার করেছি তার জন্য। ।
ব্লগের অসখ্য শুভানুদ্ধায়ী আছেন যারা আমার ব্লগ পরে সহমত পোষন করেছেন আমাকে সাহস দিয়েছেন তাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।। ,
আর অনেকেই আছেন পূর্বের পোষ্ট গুলোতে আমার অমানবিক কষ্টের কথা পড়ে নিজের কষ্টের অর্জিত কিংবা সৌজন্যে পাওয় টিকিট থেকে আমাকে টিকিট দেওয়ার জন্য ইমেইল এড্রেস কিংবা ফোন নাম্বার দিয়েছেন তাদের ভালবাসাটুকু বুকে রেখে শ্রদ্ধার সাথে ফিরিয়ে দিচ্ছি। তাদের থেকে টিকিট নেয়ার অনুরুধ।।।।
এবং মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে অশেষ শুক্রিয়া।
এ সংক্রান্ত পূর্বের পোষ্টগুলো-
আমি পরাজিত হতে চাইনা, তাই আবারো লাইনে দাড়িয়েছি, দোয়া করবেন আমার জন্য
-
সারাদিন দাড়িয়ে থেকেও রাতের অধাঁরে ষ্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখার স্বপ্ন ভঙ্গ চোখের সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাডারা দখল করে নিল সিটি ব্যাংকের নিউ মার্কেট শাখা