বিরল এক ভাগ্যই হলো আমাদের, বিরল সৌভাগ্যও বটে। নাকি বলেন আপনারা?
টিভিতে পরশু একটা দৃশ্য দেখলাম। প্রায় সব নিউজ চ্যানেলেই। আপনারা দেখেন নাই?
ছাত্রদলের ২ গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে হঠাৎ একটা ককটেল ফুটলে কোন গ্রুপের এক কর্মীর পায়ে তা লাগে আর তিনি রাস্তায় পড়ে যান। তারপর ছ্যাঁচড়াতে ছ্যাঁচড়াতে সে নিরাপদ একটা জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা করছে। রাস্তার ওই অংশটাতে ককটেল ফোটায় জায়গাটা ফাঁকা কিছুটা।
যেই মুহুর্তে লোকটি রাস্তায় পড়ে যেয়ে রাস্তার সাথে ছ্যাঁচড়াতে ছ্যাঁচড়াতে রাস্তা পার হচ্ছে সেই সময় তার চারপাশে অদ্ভুত কিছু প্রানী দেখলাম। আমাদের মতই দেখতে। হাতে ক্যামেরার মত কি যেন একটা যন্ত্র। তারা ছ্যাঁচড়াতে থাকা লোকটার বগল এর ফাঁক দিয়ে, পশ্চাৎদেশের পাশ দিয়ে, হাঁটু-কুচঁকির ফাঁক দিয়ে (এ ফাঁক বের করা অত্যন্ত দূরহ); এমনকি একজন তো ক্যামেরাজাতীয় বস্তুটি রাস্তার সাথে সমান্তরালে ধরে (অত্যন্ত্ কাব্যিকভাবে) কি যেন করার চেষ্টা করছে।
প্রথমে ভাবলাম এরা কি ছবি তোলার চেষ্টা করছে? অবশ্যই না। ছবি তুললে তো এরা আমার আপনার মতই মানুষ হওয়ার কথা। কিস্তু আঘাত পেয়ে একটা লোক যখন এভাবে বাঁচার চেষ্টা করছে তখন তাকে সাহায্য না করে এমন কোনা-কুঞ্চি দিয়ে ছবি নিশ্চয়ই কোন মানুষ তুলবে না।
তবে কি তারা বিশ্বখ্যাত কোন পারফিউমনির্মাতা প্রতিষ্ঠানের কর্মী যারা লোকটির মধ্যদুপুরের বগল বা পশ্চাৎদেশের গন্ধ কতটা তীব্র তা কোন যন্ত্র দিয়ে মাপার চেষ্টা করছে? পরে ভেবে দেখলাম তা হওয়ারও সম্ভবনা কম। কারন তারাও মানুষ। ওই পরিস্থিতিতে তাদের মাথাতেও আগে আসবে, বগলের গন্ধ পরে, আগে লোকটাকে বাঁচাই।
তাহলে তারা কারা? দেখতে তো মানুষের মতই।
তখনই আমার আইনস্টাইনীয় মস্তিষ্ক বলে দিল, ওরে পাগলা ওরা মানুষ না, এলিয়েন। ওরা বুঝে নাই ওই লোকটা আহত বা তার গায়ে আরেকটি ককটেল ফুটতে পারে বা লোকটি মারাও যেতে পারে। এই পৃথিবীর অন্যতম ব্যস্ত রাস্তায় এভাবে হামাগুড়ি দেয়ার বিরল দৃশ্য ওদের পৃথিবীতে দেখা যায় না, তাই ওরা লোকটির বগল, পশ্চাৎদেশের বা কুঁচকির ফাকফোকর দিয়ে সেই বিরল দৃশ্যটি উপভোগ করছিল।
আমার সহজ সরল মনটি প্রশ্ন করে উঠল, বাট হোয়াই আর দে লুক অ্যালাইক আস?
সাথে সাথে গর্জে উঠল আমার সেই আইনস্টাইনীয় মস্তিষ্কটি। ম্যান, অন দ্যাট ডে দ্যা অ্যালিয়েনস অ্যাপিয়ারর্ড ফ্রন্ট অফ আস লাইক হিউম্যান নট লাইক অ্যা ডগ, হায়েনা অর শকুন।