-ফুঁহ,
নীলা নিজেই নিজের মুখ দিয়ে ওর হাতে বাতাস দিচ্ছিল।
.
আমি ছাদের এক পাশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাই দেখছিলাম।নীলা ছাদের অন্য পাশে দাঁড়ানো। ও ফুঁ দিচ্ছিল আর আমার দিকে তাকাচ্ছিল।
আমি ও মাঝে মাঝে ওর দিকে তাকাচ্ছিলাম। এই কাজ টা ছাদে উঠলে আমাদের মধ্য হবেই। কিন্তু আজকে একটু ব্যাপারটা বেশি হয়ে যাচ্ছে।
.
ও যখন ওর ঠোঁট দিয়ে ফুঁ দিচ্ছে তখন দারুন লাগছে, মাঝে মাঝে ভাবছিলাম ও ওর ফুঁ গুলো যদি আমার মুখে দিত তাহলে কত ভাল লাগত ।ঘরে কারেন্ট নাই তাই ছাদে আসা, কিন্তু ছাদেও কোন বাতাস নাই।এখন এরকম কিছু ফুঁর খুব দরকার।তাহলে কত যে ভাল লাগবে।
.
আমি আমার ফোন দিয়ে কল দিলাম,বাতাসের খোঁজে।ও পাশ থেকে ফোন ধরেই এক মেয়ে কন্ঠ বলে উঠল,
-কি চাই?
-বাতাস
-কিহ?
-ফুঁ চাই,
-কিসের ফুঁ,
-আসলে আমার সামনে একটা মেয়ে আছে,যে ফুঁ দিয়ে নিজের গায়ে বাতাস দিচ্ছে।মেয়েটাকে দারুন লাগছে,বিশেষ করে ঠোঁট গুলো,আমিও এরকম কারো ঠোঁটের ফুঁ চাই,
-মেয়েটাকে বলো ফুঁ দিবে,
-মেয়েটার সাথে আমার ঝগড়া,যদি ফুঁ চাই তাহলে ধাক্কা মেরে আমাকে ছাদ থেকেই ফেলে দিবে।
-মেয়েটার পায়ে ধরে রিকুয়েস্ট করো,
-একটা মেয়ের পায় ধরব,
-হুম,ধরবা।ফুঁ চাইলে ধরবা,
-আর কোন উপায় নাই?
-না আর কোন উপায় দেখছিনা।ফুঁ চাইলে পায়ে ধরো,
-আচ্ছা,দেখি কি করা যায়।
.
সাথে সাথে ও পাশ থেকে মেয়েটা ফোন কেঁটে দিল।আমি ফোন কেঁটে দিয়ে আবার নীলার দিকে তাকালাম,ও বিরক্ত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।পায়ে ধরলেও এই মেয়ে ফুঁ দিবে কিনা সন্দেহ আছে।কেন যে কাল রাতে ঝগড়া করতে গেলাম,যদি জানতাম আজ এত গরম পরবে তাহলে জিবনেও ঝগড়া করতাম না।
.
আমি এগিয়ে গিয়ে নীলার সামনে দাঁড়াতেই ও বলল,
-কি চাই?
-না মানে, সরি,,
ও একটু হেসে,ওর পায়ের দিকে ইশারা করল।
.
আমি অবাক হলাম।এই সামান্য ভুলের জন্য কি ওর পা ধরতে হবে নাকি?
শেষ পর্যন্ত একটা মেয়ের পাও ধরতে হবে?
.
-আর কোন উপায় নাই?
-একটু আগে বললাম তো কোন উপায় নাই,
-তুমি কি শিউর নীলা?
-হুম,শিউর,
-দেখ,স্বামী স্ত্রীর পা ধরলে স্ত্রীর অনেক পাপ হবে,
-হোক কিছু পাপ,,সারাজীবন তোমার সেবা করে অনেক পূণ্য করছি,এবার কিছু পাপ হলেও সমস্যা নাই।
.
আর কোন উপায় মনে হয় সত্যি নেই।কালকের ঘটনা খুব সামান্য,আমি কাল রাত্রে শুধু নীলাকে বলেছিলাম যে নীলা এক কাপ চা খাওয়াতে পারবে।ও শুয়ে পড়েছিল,তাই বলল নিজে বানাই খাইতে। আমি কিচেনে গিয়ে নিজে বানাইছি । আমি নিজের জন্য শুধু এক কাপ চা বানিয়ে আনছি। শুধু এক কাপ কেন বানাইছি,নীলার জন্য কেন বানাইনি? এই সামান্য বিষয় টা নিয়ে ঝগড়া শুরু করল।আরে বাবা যদি চা খাওয়ার ইচ্ছা ছিল আমাকে বললেই হত।নীলা মনে করছে আমি শত্রুতা করে ওর জন্য চা বানাইনি। ও আমাকে অনেক কথা শোনালো, দু চারটা কথা আমিও শুনিয়েছি।এজন্য এত টা রাগ করে থাকতে হবে এটা ঠিক না।
.
নীলা বলল,
-আচ্ছা,পা না ধরলে দুবার কানে ধরে উঠবস করো?
-কি বল?
-হুম,আগের টার চাইতে এটা ভাল।
-আচ্ছা,
.
এক বার কানে ধরে উঠবস করতেই নীলা বলল,
-আচ্ছা,থাক আর লাগবেনা। আসো কাছে আসো। ফুঁ দেই।
.
আমি হাসি মুখে নীলার কাছাকাছি গেলাম।অনেক কাছে, যেখান থেকে ওর শ্বাস প্রশ্বাস এর শব্দ পাওয়া যায়।আমি চোখ বন্ধ করতেই, ও দিল,
-ফুঁহ,
.
আহ কি শান্তি।আমি চোখ খুলতেই নীলা বলল,
-আমার টা?
-আচ্ছা,দিচ্ছি,
.
নীলা চোখ বন্ধ করল। আমি যেই ফুঁ দিতে যাব তখনি নীলা চোখ খুলে বলল,
-দাঁত ব্রাশ করছ সকালে?
-হুম,অবশ্যই
-আচ্ছা,তাহলে দাও,
-ফুঁহ,
.
গরম কাল টা যতটা খারাপ মনে হয়, ততটা না। শুধু একটু ব্যাবহার করে নিতে হয়। এবারের গরম কালটা ভালই যাবে ফুঁহ ভালবাসার সাথে।
.
.
.
-নাহিদ পারভেজ নয়ন