আগে যখন counter strike গেইম খেলতাম - তখন প্রায়শই আমার সেইম সাইড হয়ে যেতো, তখন আমার টিম মেটরা আমাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল দিত। সেই সময়ে প্রচণ্ড মেজাজ খারাপ হতো কিন্তু, কিছুই বলতে পারতাম নাহ! মেজাজ খারাপের পিছনে কারন গুলো ছিল স্পষ্ট- প্রথমত ফ্রিতে গালাগাল খাওয়া , দ্বিতীয়ত ঐ রাউনডে একটি টিম মেট কম থাকায় হেরে যাওয়া , তৃতীয়ত আমি পরবর্তী রাউনডের জন্য ব্যান। তার মানে পরবর্তী রাউনডে আমাদের আবারো হারের স্পষ্ট সম্ভাবনা। সব মিলিয়ে একটি সেইম সাইড মানে একটি ম্যাচের নিশ্চিত হার।
এতোগুলো কথা বললাম এই কারনে , আমরা একটু সূক্ষ্ম ভাবে চিন্তা করলে দেখবো বর্তমান বাংলাদেশ অনেকটা সেই একই ভাবে সেইম সাইডের মুখোমুখি। একটু ভেবে দেখুন , ৩০ লক্ষ মানুষের প্রানের বিনিমিয়ে অর্জিত যেই দেশ সেই দেশে টানা ৪ দিন হরতাল নিশ্চয়ই কারোরই কাম্য নয়। এই অবস্থার জন্য কারা দায়ী সেই বিতর্কে আর যাবো নাহ। আমরা আজ এই অন্ধকারাচ্ছন্ন অবস্থার শিকার এইটাই প্রধান। ভাবুন যখন আমরা ৭১' এ যুদ্ধ করেছিলাম তখন কিন্তু কোন ভেদাভেদ ছিল না, আমরা সবাই ছিলাম বাঙ্গালী, আজ যখন ১লা বৈশাখ হয় তখন আমরা সবাই যখন প্রানের উচ্ছ্বাসে মেতে উঠি তখন কিন্তু কারো গায়ে কোন বিশেষ দলের ট্যাগ লাগানো থাকে নাহ, তখনও আমরা সবাই থাকি বাঙ্গালী। আবার যখন গায়ে কোন বিশেষ দলের ট্যাগ লাগিয়ে কেউ হরতালের নামে অরাজকতা সৃষ্টি করে তখনও সে বাঙ্গালী থাকে - কেউ যখন বেওয়ারিশ লাশ হয়ে মর্গে চলে যায় - তখনও সে কিন্তু বাঙ্গালীই থাকে!!
আসলে আমরা কি জানি - আমরা কার জন্য লড়ছি? আমরা কি চাই!? না জানি নাহ! জানলে আজ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার থেকে নাস্তিক- আস্তিক এই প্রসঙ্গের সৃষ্টি হতো নাহ, রাজাকার রুপী কিছু বেজন্মার দল ভিক্টরি সাইন দেখিয়ে হাঁসতে হাঁসতে হাইকোর্ট ত্যাগ করতে পারত না। হতো না অনেক কিছুই, এদের পৃষ্ঠপোষকতায় কে বা কারা আছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, গুরুত্বপূর্ণ হোল আমরা কি করছি! আমরা যা করছি তা কোন ভাবেই দেশ প্রেম নয়, আমরা এক অর্থে ক্ষমতার লড়াইয়ের অংশ হিসেবে কিছু কুকুরের পা চাটছি। এবং এটাই একমাত্র সত্য। আমি শান্তিপ্রিয় মানুষ , কেউ যদি আমাকে এই মুহূর্তে জিজ্ঞেস করে তুমি কি চাও- আমি চোখ বন্ধ করে এক নিঃশ্বাসে বলবো , আমি শান্তি চাই, জামায়েত- শিবির রুপী অমানুষদের হাত থেকে মুক্তি চাই, হরতাল নামের এই অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার হাত থেকে মুক্তি চাই, আমি আমার বাক- স্বাধীনতা ফিরে পেটে চাই।।
যাই হোক প্রসঙ্গে ফিরে যাই, সেইম সাইডের ইতিহাস আজঅব্দি কোন রাষ্ট্রে শান্তি এনে দিয়েছে বলে আমার জানা নেই । আমাদের এই সেইম সাইড আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে আমার জানা নেই, শুধু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে একটা কথা বলতে চাই, আমি শান্তি চাই। সেইম সাইডের এই খেলা বন্ধ হোক।
অনেক নাটক দেখছি, ভাই আমি ক্লান্ত - সহজ কথা বলি, যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসিতে ঝুলান, নির্বাচন দেন বাকি টা জনগন করবে। এই হরতাল - হরতাল খেলা আর চাই নাহ।।
এক কথা - এক দাবি
রাজাকারের ফাঁসি দিবি।।
জয় বাংলা।।