একুশে ফেব্রুয়ারি রাত্রির বৃন্ত থেকে ছিনিয়ে আনা এক
আলো ঝলমল সকাল। যার স্পর্শে বাঙালীর
চেতনা শানিত ও বিকশিত হয়ে জাতি আজ পুর্নতার স্বাদ
লাভ করেছে।
একুশ আমার অহংকার- একুশ আমার প্রেরনা ।
একুশ আমাকে দিয়েছে বাংলায় কথা বলার অধিকার।
আমি আমার বাংলায় কথা বলার অধিকার পেয়েছি রক্তের
বিনিময়ে। কারো দানে কিংবা করুনায় নয় - বরং রক্ত
দিয়ে আমরা আমাদের ভাষায় কথা বলার অধিকার
কেড়ে নিয়েছি।
খুব কষ্ট হয় যখন দেখি আমাদের তরুন প্রজন্মের
একটা অংশ জানে না একুশে ফেব্রুয়ারির দিন
কি হয়েছিলো। কেনো আমাদের এই একুশ।
প্রজন্মের একটা অংশ জানে হিন্দী গানের লিরিক। তাদের
অনেকের কাছে হিন্দী না জানা আবার আনকালচারড
হয়ে যায়।
কিন্তু আমি আমার এই বাংলা পেয়েছি আমার ভাই সালাম,
বরকত , রফিক , জাব্বাদের রক্তের বিনিময়ে।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণা ও শুরু হয় ওই একুশ
থেকে - একুশ ছিলো বলে আমরা পেয়েছি আনাবিল সুখ।
পৃথিবীর সব চেয়ে সুন্দর ভাষা বাংলায় কথা বলার
অধিকার।
একুশে ফেব্রুয়ারির দিন আমরা বিনম্র শ্রদ্ধার
সাথে শহীদ মিনারে ফুল দিতে স্বরন করি জাতির সুর্য
সন্তানদের কে।
আবার বাড়ি ফেরার পথে শুনতে পাই প্রজন্মের
একটা অংশ সেই দিন ও
হিন্দী গানে মাতিয়ে রাখে নিজেদের।
একুশে ফেব্রুয়ারির অসীম সাহস ই আমাদের কে বার বার
রাজপথে নামাতে পেরেছে। যখন ই অধিকার খর্ব
হতো তখন ই আমরা একুশের প্রেরনাকে বুকে ধারন
করে নেমে পড়তাম অধিকার আদায়ের লক্ষে - ৬
দফা দাবি কিংবা ৭ মার্চের জাতির শ্রেষ্ঠ কবিতা ‘এবারের
সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম
স্বাধীনতার সংগ্রাম" সব কিছুর প্রেরনা আমাদের ঐ
একুশ -
আমরা বহন করেছি ২৫ মার্চের কালো রাত আবার
একুশের প্রেরনা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়লাম।
এলো স্বাধীনতা । একটি নতুন সুর্য -
একুশের জয়ের আত্ববিশ্বাস ই যুদ্ধ জয়ের
প্রেরনা যুগিয়েছে।
আজ ও বারবার রক্তাক্ত হচ্ছে আমার একুশ - না এই বার
আর বাইরের কোনো শত্রুর দ্বারা না। তথাকথিত
আধুনিকতার আড়ালে আমার একুশ কে রক্তাক্ত
করা হচ্ছে। হিন্দী সিরিয়ালের একের পর এক সিকোয়েন্স
মনে রাখে এই প্রজন্মের একটা অংশ কিন্তু
তারা জানতে চায় না আমার ভাই সালাম ,বরকত , রফিক,
জাব্বারের কথা। তারা জানেনা একুশে ফেব্রুয়ারির দিন
কি হয়েছিলো।
অস্রের মুখে ওই পাকিস্থানিরা আমাদের কে উর্দু
বলাতে পারে নি। আমার ভাইয়েরা রক্ত
দিয়ে সেইটা প্রতিরোধ করেছিলো। আজ হিন্দী সিরিয়াল
এই প্রজন্মকে দিয়ে হিন্দী বলাচ্ছে অবলীলায়।
অথচ এই একুশই হতে পারতো তারুণ্যের প্রেরণার উৎস।
আমি স্বপ্ন দেখি বাংলার প্রতিটি আনাছে কানাছে কোন
এক দিন থাকবে আমার একুশের প্রেরনা।