বাংলাদেশে চলছে এখন ত্রিমুখী লড়াই। চলছে সরকার, দুদক আর বিশ্বব্যাংকের মধ্যে। এই তিন প্রতিষ্ঠানের লড়াই নিয়ে সারাদেশেই চলছে আলোচনা। বইছে চায়ের টেবিলে ঝড়। কিন্তু বুধবার দুপুর নাগাদ আকর্ষণ আর পদ্মাসেতুর দুর্নীতিতে নয় চলে যায় অন্য প্রসঙ্গে। শুরু হয় নতুন লড়াই। এই লড়াইয়ের কেন্দ্রে সঙ্গীত পরিচালক শওকত আলী ইমন। তার সঙ্গে লড়াইয়ে নামেন তার কথিত প্রেমিকা জিনাত। আর রাত নাগাদ এই লড়াইয়ে যোগ হয় আরেকটি নাম। তিনি ইমনের সাবেক স্ত্রী বিজরী বরকতুল্লাহ। ইমন, জিনাত ও বিজরীর এই ত্রিমুখী লড়াইয়ের দিকেই এখন চোখ সবার।
জনপ্রিয় অভিনেত্রী বিজরী বরকত উল্লাহর সাবেক স্বামী আর একবারেই অপরিচিত মুখ জিনাত কবিরের প্রেমিক সঙ্গীত পরিচালক শওকত আলী ইমন। তাকে বুধবার মদ, মাদক ও অস্ত্রসহ তার বাসা থেকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। জিনাতের অভিয়োগের ভিত্তিতেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। তা নিয়ে প্রেসকনফারেন্স হয়। নিমেষেই তা হয়ে ওঠে টক অব দ্য টাউন। কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকেই ইমন গ্রেফতার হওয়ার ঘটনায় বিজরীর হাত রয়েছে বলে গুঞ্জন উঠতে থাকে। ইমনের পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠরা সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ কথা বলেন।
বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কথা হয় বিজরী বরকতউল্লাহর সাথে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছুই বলার নেই। আমার মেয়ের পরীক্ষা চলছে। তা নিয়ে ব্যস্ত। এমন সময় এ ধরনের ঘটনার কথা শুনে আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।`
এদিকে, জিনাত নিজেই তার প্রেম কাহিনীর কথা সবিস্তার করেছেন মিডিয়ার কাছে। তিনিই জানান ফেইসবুকের মাধ্যমে ইমন প্রেমের ফাঁদ পাতেন তার সঙ্গে। নতুন স্বপ্ন, নতুন আনন্দ নিয়ে ভালোই কাটছিল সময়। কিন্তু জিনাতের মতে কেবল তাকেই নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না ইমন। ফলে জিনাতের কষ্ট, কষ্ট থেকে ক্ষোভ আর ক্ষোভ থেকে বিষয়টি থানা পুলিশ পর্যন্ত গড়ালো। নারী নির্যাতনের অভিযোগ ঠুকে দিলেন পুলিশে। তার জেরে বুধবার সকালে ইমন গ্রেফতার হলেন পুলিশের হাতে। তার সঙ্গে মদ-অস্ত্র-মাদক সবই পাওয়া গেলো। পরে অবশ্য পুলিশ বলেছে পিস্তলটি খেলনা পিস্তল ছিলো।
পিস্তল খেলনা হোক আর যাই হোক নারী নির্যাতনের অভিযোগ গুরুতর। তার জন্য ভোগান্তি হয়তো ভুগতেই হবে ইমনকে।
যতটুকু জানি ইমন ভালোবেসেই বিয়ে করেছিলেন বিজরী বরকতউল্লাহকে। ফুটফুটে সুন্দর এক কন্যা সন্তানও রয়েছে তাদের ঘরে। কখন যে গোপনে তাদের ঘর ভাঙ্গলো খবরই জানলো না কেউ। যদিও বিষয়টা তারা লুকাতে চেয়েছিলেন। ইমন গ্রেফতার! খবরটা শুনে আঁতকে উঠেছিলেন মিডিয়ার অনেকেই। কিন্তু পুরো ঘটনা জানার পর নিজেরাই যেন আবার মুখ লুকানোর জায়গা খুঁজে পান না। ইমন নতুন করে প্রেম করতেই পারেন। কিন্তু ক্রাইম করতে পারেন না।
তিনি জিনাতের সঙ্গে ক্রাইম করেছেন। জিনাত হয়তো খুশী। বিজরীর আর নতুন করে কিছুই বলার নেই। কিন্তু ইমনের ছোট্ট মেয়েটা যখন বাবার এ খবরটা শুনেছে তখন তার মানসিক অবস্থাটা কি হয়েছে? আমরা জানি না। আন্দাজ করি মাত্র। আর উদ্বিগ্ন হই।
আমরা জানি না পদ্মা সেতু হবে কি না? কিন্তু এ প্রজেক্টে যে একটা ঘাপলা আছে তা আন্দাজ করি। বিরোদী দল রাজনৈতিক ইস্যু পাবে। যেমন করে ইমনের এ খবর শুনে হয়তো প্রযোজক শীশ মনোয়ার সবচেয়ে বেশি খুশী হবেন। কারণ সম্প্রতি ইমন তার সঙ্গেও একটা ঝামেলা করেছিলেন। শীশ মনোয়ার তার বিরুদ্ধে জিডিও করেছিলেন।
শীত বাড়ছে...। কিন্তু কি ব্যাপার বলেন তো এ ভুখন্ডের মানুষের শরীরের ও মনের গরম যেন কমছেই না। নিশ্চিন্তপুরের আগুনে পোড়া মানুষের মত আমরা শীতল হতে পাড়ছি না। এর কারণ কি? উত্তর একটাই সে আগুনের আঁচ এখনো আমাদের শরীরে মিশে আছে।
ও আরেকটা কথাতো ভুলেই গেছি। দুপুরটা শুরু হয়েছিলো আরও একটি উত্তেজনায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে একদিনের ক্রিকেটে সিরিজ জয়ের প্রত্যাশা না ছিলো কোন বাঙালির। অবশ্য খেলা সামনের দিকে গড়াতে গড়াতে সে উত্তেজনা স্তিমিত করে দেওয়ার দায়িত্ব ক্রিকেটাররা নিজেদের হাতেই নিয়েছেন। বাংলাদেশে হেরেছে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে। ফল মিরপুর স্টেডিয়ামে হাততালি কমে গেছে।
পদ্মাসেতুর দুর্নীতি ধরার উত্তেজনা, খেলায় সিরিজ জয়ের প্রত্যাশার উত্তেজনা আর সেই সঙ্গে ইমন-বিজরী-জিনাত উত্তেজনা সব মিলিয়ে দিনটা বেশ ব্যস্ততায়ই কেটেছে মিডিয়া কর্মীদের।
সূত্রঃ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১১:২৫