এতদিন শুধু শুনে এসেছি ব্যাচেলর বিরম্বনার কথা। কিন্তু বিবাহিত জীবনের বিরম্বনা কত প্রকার ও কি কি তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। এখন মনে হচ্ছে ব্যাচেলর লাইফে ভালই ছিলাম। ব্যাচেলর লাইফের বিভিন্ন টিপিক্যাল সমস্যাগুলো আমাকে ফেস করতে হয় নি। যেমন বাসা ভাড়া না পাওয়া, খাওয়া দাওয়ার কষ্ট ইত্যাদি ইত্যাদি। সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুবাদে বহাল তবিয়তে হলে ছিলাম পাঁচটি বছর। খেয়েছি হলের ক্যান্টিনে (সাথে বোনাস হিসেবে ছিল ছারপোকার কামড় )। যাই হোক ছাত্রজীবন মোটামুটি রাজার হালেই কেটেছে।
এখন শুনুন বিবাহিত জীবনের বিরম্বনার কথা। আগে অফিস থেকে এসেই কম্পিউটার চালু করে চিন্তা করতাম কি মুভি দেখব। আর এখন অফিস থেকে এসে আগে রান্না ঘরের খোঁজ নিতে হয়। কি রান্না হচ্ছে? বাজার থেকে কিছু আনতে হবে কিনা? রান্নায় সাহায্য করতে হবে কিনা ... ইত্যাদি ইত্যাদি। রান্না যদিও করতে পারি না, তাই আমার ভাগে মাঝে মধ্যে তরকারি কাটা ও ধোয়ার দায়িত্ব পড়ে। রান্না শেষ হতে না হতেই ক্ষুধা লেগে যায়। শুরু হয় গোগ্রাসে খাওয়া। আর খাওয়ার পরে আসে সবচেয়ে কঠিন অংশটি, তা হল বাসন কোসন পরিষ্কার করা। এই কাজটা বরাবর আমিই করে আসছি।
তো এভাবেই চলে যাচ্ছিল দিন। এমন সময় কথা নেই বার্তা নেই ফ্রীজটা গেল নষ্ট হয়ে (এটা আমি যৌতুক .... থুক্কু .... গিফট হিসেবে পেয়েছিলাম )। ওয়ারেন্টি থাকায় সার্ভিস সেন্টারে অভিযোগ করলাম। তারা এসে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ঘোষনা দিল এটাকে সার্ভিস সেন্টারে পাঠাতে হবে, আর ঠিক হতে দুই সপ্তাহ লাগবে। ভ্যান আর কুলি নিয়ে এসে পাঠিয়ে দিলাম সার্ভিস সেন্টারে। ভেবেছিলাম দুই সপ্তাহ দেখতে না দেখতেই পার হয়ে যাবে। কিন্তু দুই দিন যাওয়ার আগেই বোঝা গেল আর পারা যাবে না, প্রতি বেলায় বেলায় রান্না করা তো আর চারটি খানি কথা না। তাই বাকস প্যাটরা গুছিয়ে রওনা দিলাম শশুর বাড়ির উদ্দেশে। আপাতত ওখানেই আছি।
পুনশ্চ: একদিন বাসায় এসে দেখি গিন্নী রান্নাঘরে কাজে ব্যস্ত। আমি গিয়ে বললাম, তোমার খুব কষ্ট হচ্ছে, তাই না? চিন্তা কোরো না, আর একটা বিয়ে করে ফেলি, তাহলে তোমার কাজে সাহায্য করার মানুষ একজন বাড়বে । এই শুনে ঝাড়ু নিয়ে আমার দিকে তেড়ে এল। আমি ততক্ষণে পগার পার।