না ভাই এই সপ্নদোষ সেই অতি গোপনীয় সপ্নদোষ রোগ না যা কোন গলির কবিরাজ কিংবা হেকিম সাহেব সারতে পারবেন। এই সপ্নদোষ রোগ একটি বিশেষ রোগ যার কোন ঔষধ নেই এবং শুধুমাত্র বাংলাদেশেই এই রোগের রোগী পাওয়া যায়। মনে রাখবেন এই রোগের রোগীরা একটি বিশেষ শ্রেনীর মানুষ। চলুন না একটু বিস্তারিত জানার চেষ্টা করি এই রোগের রোগীদের ব্যাপারে।
বাংলাদেশের রাজনীতিবিদেরা অন্য দেশের রাজনীতিবিদদের চেয়ে অনেক বেশি সপ্ন দেখেন। যখন কিছু উদ্বোধন করতে যান বলেন এটা আমার সপ্ন ছিল, আমার বাবার সপ্ন ছিল, আমার বৌ এর সপ্ন ছিল আর যাই হৌক তার পরিবারের কারও না কারও ঐ সপ্ন ছিল। সপ্ন দেখার ঠেকা বা অধিকার বা লাইসেন্স মনে হয় শুধু তাদেরই আছে। আর সরকারী দলে আসলে সপ্ন পূরনের মাত্রা একটু বেশি বেড়ে যায় বলে মনে হয়। ক্ষমতায় না থাকলে কাজ তো থাকে না তখন মনে হয় সপ্ন দেখা হয়। “হ্যাঁ এই বেশি সপ্ন দেখার রোগের নামই সপ্নদোষ এবং রোগী আমাদের নেতা-নেত্রীরাই।”
একবার এক সবজী-বিক্রেতা আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল, “স্যার, আমগো নেতাগো কি খাইয়্যা দাইয়্যা কাম কাইজ নাই, খালি সপ্ন দেখে কেন? এত সপ্ন দেইখ্যা কেমনে মনে রাখে? আমরা সারাদিন সবজী বেইচ্যা ঘরে যাই, ঘুমায়া পরি, সপ্ন দেহি কি দেহি না উঠলে মনে থাহে না। স্যার হেগো ব্যারাম আছে নাকি যে হারাদিন ঘুমায়া ঘুমায়া সপ্ন দেখবো?”
সেই সবজী বিক্রেতাকে আমি সেইদিন কোন জবাব দেইনি। কিন্তু কথাটা যে যুক্তিসঙ্গত ছিল না সেটা আমি বলবো না। কারন যারা সাংসদ তাদের নিজস্ব নির্বাচনী এলাকায় খুব কমই দেখা যায়। মাঝে মাঝে সংসদে জি হুজুরী করতে দেখা যায়। অধিকাংশ দিন তো তারা তাদের দ্বায়িত্ব ভুলে সংসদে পাড়া দিতেই ভুলে যান। তাহলে তারা থাকেন কোথায়? বাসায় কি সারাক্ষন ঘুমান আর সপ্ন দেখেন? “আর যখন ঘুম থেকে উঠেন তখন তাদের লুঙ্গিতে তাদের উন্নয়নের সপ্ন বাস্তবায়নের ম্যাপ হিসেবে দেখতে পান; তাই নয় কি?”
হয়ত এ উন্নয়নের ধারা থেকে আগামীতে গন-শৌচাগারও বাদ পড়বে না এবং উদ্বোধনের সময় বলা হবে – আজকে আমি এই গন-শৌচাগার উদ্বোধন করে নিজেকে অনেক সম্মানিত মনে করছি। এ জায়গায় একটি গন-শৌচাগার হবে তা আমার অনেক আগে দেখা সপ্ন ছিল। এ সপ্ন আমি অনেক আগেই দেখেছিলাম আর শুরু হবে সেই সপ্ন দেখার ইতিহাস।
আমি সাধারন জনগন। সপ্ন দেখার ক্ষমতা আছে কিন্তু লাইসেন্স নেই। তাই সপ্ন দেখেও মনে রাখি না। সপ্ন মনে রেখে লাভ কি? আমার সপ্ন পূরন খুব কমই হয়। - কথাগুলো একটু ভাবুক টাইপের হয়ে গেল মনে হয়।
অবশেষে জানতে চাই – “বাংলাদেশের নেতা-নেত্রীরা কি আসলেই সপ্নদোষ রোগী?”
বিঃদ্রঃ ভাল না লাগলে মাইনাস দিয়া যাইতে দ্বিধা বোধ করিবেন না।