“মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে কি আমি পাপ করেছি??” – কথাগুলো আমার না। কথাগুলো আব্দুল আলিমের। এই আব্দুল আলিম আর কেউ নয় কিছুদিন আগে অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খ’ ইউনিটের পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধীকারী আব্দুল আলিমের। হ্যাঁ আব্দুল আলিম মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ছিলেন। হ্যাঁ তিনি পাপ করেছেন মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে। কারন মাদ্রাসায় বাংলা, ইংরেজী, অর্থনীতি এসবের উপর জোর না দিয়ে ধর্মীয় শিক্ষায় জোর দেওয়া হয়েছিল। যেখানে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা ২০০ নাম্বারের বাংলা-ইংরেজী বিষয়ের পরীক্ষা দেয় সেখানে মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা মাত্র ১০০ নাম্বারের পরীক্ষা দেয়।
আর একটু যোগ করছি। এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খ’ ইউনিটের পরীক্ষায় প্রথম ২০ জনের মধ্যে ৮ জনই কিন্তু মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি নীতি অনুযায়ী মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা বাংলা, ইংরেজী, অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, ভাষাবিজ্ঞান,গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা এবং উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হতে পারবে না। কারন এসব বিভাগে ভর্তির জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ২০০ নম্বরের ইংরেজি ও ২০০ নম্বরের বাংলা থাকবার শর্তারোপ করা হয়েছে। এখানেই দোষ করেছে আব্দুল আলিম।
হয়ত চাকুরীর সার্কুলারে খেয়াল করে থাকবেন যে ইংরেজী, অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা এসব বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাধান্য দেওয়া হয় চাকুরীর ক্ষেত্রে। বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চশিক্ষার জায়গা এবং এখান থেকে লেখাপড়া করে ভাল চাকুরী পাওয়া অধিকাংশ মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে-মেয়ের সপ্ন। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও এর থেকে ব্যতিক্রম নয়। তারাও পরিশ্রম করে ভর্তি পরীক্ষায় ভাল করে ইংরেজী, অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পড়তে চায়। তো দোষ কিসের? ধর্মীয় শিক্ষাই মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর জন্য কাল হয়ে দাড়িয়েছে।
আমি জানি না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খ’ ইউনিটের পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধীকারী আব্দুল আলিম ইংরেজী, অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা এসব কোন বিভাগে সুযোগ পাবেন কি না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা কি মাদ্রাসার ছাত্রদের প্রতি তাদের কুদৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করবেন কি না তাও আমার জানা নেই। কিন্তু ‘খ’ ইউনিটের পরীক্ষায় প্রথম ২০ জনের মধ্যে ৮ জনই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সুযোগ পেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কথিত “ধর্মনিরপেক্ষ” কর্মকর্তাদের গালে একটা চড় বসালো আশা করি এটার মজা তারা ঠিকই বুঝবেন।
বিঃদ্রঃ বিজ্ঞাপনটি প্রথম আলো পত্রিকার ২২ পাতার মুদ্রিত হয়েছে। আমি এ পোষ্টের লেখক এবং ফোকাস কোচিংয়ের সাথে কোন রুপে যুক্ত নই। ফোকাস কোচিংয়ের সহায়তায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খ’ ইউনিটের পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধীকারী আব্দুল আলিমের যোগাযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমার এই লেখা।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:৪৩