বাংলাদেশের ব্রাজিলিয়ান কোচ এডসন সিলভা ডিডোকে বহিষ্কার করলো বাফুফে। ডিডো তারুণ্যে প্রাধান্য দিয়ে একটি দল গঠন করতে চেয়েছিলেন এবং এর জন্য রজনী, বিপ্লব, জাহিদ, আরিফ, আরমান আজিজের মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের জায়গা হয়নি। এই অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের বাদ দেওয়ার অন্যতম কারন ছিল কোচের অমান্য করা পূর্বের ট্রেনিং সেসনেগুলোতে। “বাফুফের ২১ সদস্যের কমিটির ১৭ জনের উপস্থিতিতে গৃহীত হয় তাঁকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত”
এই সিদ্ধান্ত থেকেই বুঝা যায় যে বাংলাদেশের ফুটবল ভবিষ্যৎ অন্ধকার। যেখানে কোচের মতকে প্রাধান্য না দিয়ে খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত ইচ্ছাকে প্রধান্য দেওয়া হয়েছে। বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন ডিডোর পক্ষে থাকলেও বাফুফের “রাজনৈতিক প্রভাবযুক্ত” ২১ সদস্যের কমিটির সিদ্ধান্তের কাছে হার মানেন।
ডিডোকে কোন যুক্তিতে বহিষ্কার করা হলো তা আমি বুঝতে পারছি না। কিন্তু এই বহিষ্কারের পিছনে বাদ পড়া রজনী, বিপ্লব, জাহিদ, আরিফ, আরমান আজিজের অবদান অবশ্যই আছে সঙ্গে আছে তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতাও।
ম্যাচের পর ম্যাচ হারলেও রজনী, বিপ্লব, জাহিদ, আরিফ, আরমান আজিজেরা কিন্তু দলে তাদের জায়গা ঠিকই ধরে রাখেন কিন্তু চলে যেতে হয় কোচকে। কথায় আছে না - যত দোষ সব নন্দ ঘোষের। এই নন্দ ঘোষ যে ডিডো। না ডিডোকে নন্দ ঘোষ বলবো না। কারন তিনি তো এখনো কোন ম্যাচ এখনো হারেন নাই। ম্যাচ হারার আগেই তাকে বিদায় করে দেওয়া হলো।
আপনারাই চিন্তা করে দেখুন কোন ছাত্র যদি তার শিক্ষকের কথা না শুনে তাহলে শিক্ষক কি তাকে ক্লাসে রাখবেন? রাখবেন না, শাস্তি দিয়ে বের করে দিবেন ক্লাস থেকে। ডিডো কিন্তু তাই করেছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশের কালচার তিনি বুঝে উঠতে পারেন নাই। বাংলাদেশে শিক্ষকদের কোন মর্যাদা নেই।
একটু আন্তর্জাতিক ফুটবলের ইতিহাসে ফিরে যাই। ১৯৯৪ সালে ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জয়ী দলের রোমারিওর কথা মনে আছে। রোমারিওর ভালো ফর্ম থাকা স্বত্তেও ২০০২ সালে ব্রাজিলের কোচ স্কোলারি তাকে দলে নেন নাই। রোনালদিনহোর কথা মনে আছে? সেই ফোকলা দাতের ব্রাজিলিয়ান শিশুটি। ঐ যে বার্সালোনার মধ্যমনি ছিল। কিছুদিন আগে শেষ হওয়া দক্ষিন আমেরিকার বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচগুলোতে রোনালদিনহো কিন্তু সুযোগ পান নাই। দল নির্বাচনে এবং পুরো পরিকল্পনায় কোচের স্বাধীনতা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের কোচকে মুখে সেই স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল। সেই স্বাধীনতার প্রয়োগ করতে গিয়ে-ই ডিডো আজ বহিষ্কৃত।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই নভেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:০৩