বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে প্রায় ৪৫ গিগাবাইট ব্যান্ডউইথ পাচ্ছে। কিন্তু এই ৪৫ গিগাবাইট ব্যান্ডউইথের শুধু ১০ গিগাবাইট ব্যান্ডউইথ ব্যবহৃত হচ্ছে। অব্যবহৃত ৩৫ গিগাবাইট ব্যান্ডউইথের পুরোটাই রফতানিযোগ্য।নেপাল ও ভুটান সাবমেরিন কেবলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য বাংলাদেশের সহযোগিতা চাইছে।বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনিও মায়ানমারে গিয়ে ব্যান্ডউইথ কেনার জন্য মায়ানমারকে প্রস্তাব দিয়ে এসেছেন।
আমরা যারা বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহার করছি তারা যে ব্যান্ডউইথ পাই তা খুবই কম। আমার ব্যক্তিগত জরিপে আমি জানতে পেরেছি যে বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা গড়ে ৮০kpbs = ১০KPBS স্পিড পেয়ে থাকেন। ডায়াল-আপ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা এই গড় স্পিডের চেয়ে কম স্পিড পেয়ে থাকেন আর ব্রডব্যান্ড ব্যবহারকারীরা ১২-১৫KPBS স্পিড পেয়ে থাকেন।
এত ব্যান্ডউইথ পড়ে থাকার পরও বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা খুব কম স্পিড পেয়ে থাকেন।এই অল্প স্পিডের মূল্যও বেশ চড়া দিতে হয়। বিভিন্ন জায়গাভেদে লোকাল আইএসপিগুলো ৮০০-১৫০০ টাকা নেয় প্রতিমাসে। সম্প্রতি ওয়াইম্যাক্স সার্ভিস চালু হয়েছে। কিন্তু ওয়াইম্যাক্স ইন্টারনেট সার্ভিস ব্যবহার করার জন্য প্রতিমাসে প্যাকেজ ভেদে ৩৪০০-৬২০০ টাকা গুনতে হবে।
মোবাইল কোম্পানিগুলোর GPRS-EDGE ইন্টারনেট সুবিধা এবং বাজারের অধিকাংশ মোবাইল সেটে GPRS-EDGE সুবিধা থাকার কারনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। কিন্তু অনেক জায়গাতেই খুব ভালো স্পিড পাওয়া যায় না।
অনেকেই আমার পোষ্টের বিপক্ষে যুক্তি দিতে পারেন যে ব্যান্ডউইথের মূল্য এখনো অনেক বেশি – প্রতি 1mbps = 1024kpbs ব্যান্ডউইথের মূল্য ১৮০০০ টাকা। কিন্তু বাংলাদেশের লোকাল আইএসপিগুলো এই 1mbps ব্যান্ডউইথ কিনে ২৫-৩০ জনকে শেয়ার করে দিচ্ছে। এবং সব ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা এক সঙ্গে ব্যবহার না করার ফলে আইএসপিগুলো ও ব্যবহারকারীদের সমস্যা হয় না। কিন্তু রাতের বেলা অনেক ব্যবহারকারী এক সঙ্গে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গেলে খুব স্লো স্পিড পান। যাই হোক, লোকাল আইএসপিগুলো কিন্তু অনেক লাভ করছে। তাদের চিন্তা বেশি ব্যান্ডউইথ কিনতে গেলে লাভের পরিমানও কমে যাবে। (লোকাল আইএসপিগুলোর প্রতারনা নিয়ে পরবর্তীতে লিখবো)
আমার প্রশ্ন ৩৫ গিগাবাইট অব্যবহৃত ব্যান্ডউইথ থাকতেও আমাদের কেন এত উচ্চমূল্যে ইন্টারনেট সেবা গ্রহন করতে হচ্ছে? এটা কি সরকারের উদাসীনতা নাকি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা আইএসপিগুলোর প্রতারনার শিকার? ব্যান্ডউইথ অব্যবহৃত না রেখে আরও কম মূল্যে বিক্রি করা হলে ইন্টারনেটের ব্যবহারকারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি ও ইন্টারনেট সেবার মান কি আরও উন্নত হতো না।