ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ভর্তির পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ‘খ’ ইউনিটের বাংলা, ইংরেজী, অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, ভাষাবিজ্ঞান,গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা এবং উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগে ভর্তির শর্ত হিসেবে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ২০০ নম্বরের ইংরেজি ও ২০০ নম্বরের বাংলা থাকবার শর্তারোপ করা হয়েছে। মাদ্রাসা ছাত্র-ছাত্রীরা ১০০ নম্বরের ইংরেজি ও বাংলা অধ্যয়ন করে থাকে এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে অর্থনীতিকে ‘ইসলামী অর্থনীতি’ নামে অধ্যয়ন করে, সে কারণে শর্তানুসারে এবারে তারা ঢাবির ‘খ’ ইউনিটের উপরোক্ত বিভাগুলোতে ভর্তি হতে পারছে না।
মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও অন্যান্য সাধারণ বিষয়ের পাশাপাশি কুরআন-হাদিস সংক্রান্ত বেশ কিছু বিষয় পড়ে থাকে বলে ইংরেজি ও বাংলা বিষয়ে তারা ১০০ নম্বরের পরীক্ষা দিয়ে থাকে। এ ১০০ নম্বরের অর্থ এই নয় যে, তারা ২০০ নম্বর পড়ুয়া স্কুল ছাত্রদের চেয়ে অর্ধেক ইংরেজি/ বাংলা পড়ছে। তাদের সিলেবাসে সবকিছু সেভাবেই অন্তর্ভূক্ত করা থাকে। ২০০ নম্বর না পড়ার অজুহাতে মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি বন্ধ করাটা সম্পূর্ন অযৌক্তিক।
আবার ইসলামী অর্থনীতিকে গার্হস্থ্য অর্থনীতির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। এটা কতটুকু যৌক্তিক?
আরও বলতে চাই মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা বাংলাদেশের প্রাচীনতম শিক্ষা ব্যবস্থাগুলোর একটি। যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তৎকালীন পূর্ব বাংলার মুসলিম জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার জন্য আজ সেখানে মুসলিমরাই বঞ্চিত।
বিগত বছরগুলোর ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় মাদ্রাসা ছাত্র-ছাত্রীরা একটি বড় অংশ জুড়ে নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করছে। তারপরও কেন এই বৈষম্য?? ইংরেজি-বাংলায় স্কুল-কলেজের দুর্বল ছাত্ররা যেমন ঢাবিতে ভর্তির সুযোগ পায় না ঠিক তেমনি মাদ্রাসার দুর্বল শিক্ষার্থীরাও ঢাবিতে চান্স পায় না এবং মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা যারা ঢাবিতে সুযোগ পেয়েছে তারাও শীর্ষস্থানীয় ফলাফল করেছে ।
হয়ত বর্তমান সরকার দেশে ধর্মনিরপেক্ষতার যে প্রভাব সৃষ্টি করছে তার ফল হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রতিবন্ধকতা। কিছুদিন পরে মুসলমান মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে।
বিঃদ্রঃ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন ভর্তির সুযোগ দেওয়া যাবে না তার যুক্তি দিলে খুশি হব।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা নভেম্বর, ২০০৯ সকাল ৯:১২