বেশ কিছুদিন চরম ব্যস্ত থাকার পর এই ঈদ এ ঠিক করলাম যা থাকে কপালে এইবার বউ কে নিয়ে বেড়াতে যাব ই যাবো কোনো দিকে। যা ভাবা তাই কাজ। তাই ঈদ এর পর পর ই বেরিয়ে পরলাম কক্স’স বাজার এর উদ্দেশে। আমার আর আমার বউ দুইজনের এই পাগলামি ভ্রমনের কথা শুনে হাসল অনেকে, বলল যে কক্স’স বাজার নাকি যেতে ই পারবো না, আর যদি কোনো রকমে চলে ও যাই তবে নাকি সমুদ্রের পাড়ে থাকতে হবে। কারন কিছু ই ঠিক করা ছিলো না। না বাস এর টিকেট, না হোটেল এর রুম। বাসের টিকেট পেয়ে গেলাম অদ্ভুত ভাবে অনেক সহজে ই। আর চলে গেলাম হোটেল এর রুম বুকিং না করে ই। পৌঁচে রুম ও পেয়ে গেলাম খুব কষ্ট না করে ই। শুধু মনে পড়ছিল “Where there is will, there is a way”।
এবার আসি যে কারনে বলছি আমি সুপার লাকি বা মিরাকল, সেইটা ঘটলো বিকেলে। যখন সমুদ্রে পা ভেজাতে গেলাম। সানগ্লাসটাকে টি-শার্ট এর বোতাম এর ঘরে ঝুলিয়ে সুমদ্রে পা ভিজিয়ে হাটছি আমি আর আমার বউ। ঢেউ এর পরে ঢেউ আসছে। চার পাশের পানিতে শুধু সাদা সাদা ফেনা। মাঝে মাঝে ঝুঁকে হাত দিয়ে পানি ছুঁয়ে দেকছি। হঠাত করে আমার সানগ্লাস টা সমুদ্রের পানিতে পড়ে গেলো। ধরতে ধরতে পানি ওটাকে টেনে ও নিয়ে গেলো। চোখের সামনে দামি সানগ্লাসটাকে হারাতে দেখলাম। কিছুটা দূরে আমার বউ ও হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে। কেন যেন মনে হলো ঢেউ যদি ওটাকে টেনে নিয়ে যায় তবে ঠেলে ও দিতে পারে। তাই ঠিক যেই খানে হারালাম ঠিক সেই খানে ঠায় দারিয়ে থাকলাম। প্রায় মিনিট খানেক বাদে কি যেন একটা পায়ের উপর দিয়ে গড়িয়ে যাচ্ছে বুঝতে পারলাম, আর পানির ভেতর আবছা ভাবে বুজলাম ওটা আমার সানগ্লাসটা। ধরতে ধরতে আবার চলে গেলো ধেউ এর টানে। এবার অন্ধের মতো পানির ভেতরে শুধু একটা জায়গায় থাবা দিলাম। আর অদ্ভুত ভাবে কিছু বালুর সাথে সানগ্লাসটা উঠে এলো!!! আমি হতভম্ব, নির্বাক। আর আমার বউ তার সুন্দর বড় বড় চোখ গুলো কে বিস্ময়ে আরো বড় করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
কি আর বলবো, কাঊকে বলে বোঝানো যাবে না অদ্ভুত সেই অনুভূতি।
সারা ট্যুরটা অসাধারন কাটলো। যেন প্রকৃতি আমাদের জন্যই অপেক্ষায় ছিলো। পুরো ট্যুর এ বৃষ্টির কারনে কখনই সমস্যায় পড়িনি। অসাধারন কিছু দিন কাটালাম, অসাধারন কিছু সময় কাটালাম। ধন্যবাদ বউ, পাশ থেকে অবিরত সাহস দেবার জন্য। ধন্যবাদ প্রকৃতি এত অসাধারন কিছু সময় উপহার দেবার জন্য।
সবাই ভালো থাকবেন। অনেক ভালো।