সুরা আসর, পবিত্র আল-কুরআনের ছোট কিন্তু চমৎকার শিক্ষণীয় একটি সুরা। সুরা আসর, আল-কুরআনের ১০৩ নম্বর সুরা এবং এটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়।
নামকরণঃ এই সুরার প্রথম আয়াতের “আল আসর” শব্দ থেকে সুরাটির নামকরণ করা হয়েছে আসর। অন্যান্য কতগুলি সুরার ক্ষেত্রেও এ নিয়ম অনুসরণ করা হয়েছে, যেমন সুরা দুহা, সুরা ইয়াসিন, সুরা তীন ইত্যাদি।
কতিপয় আলেমের মতে, পবিত্র কুরআনের সকল জ্ঞানের সারাংশ হলো সুরা আসর। এ সুরায় সংক্ষিপ্ত আকারে মানুষের সৌভাগ্যবান হওয়ার কর্মসূচী বর্ণণা করা হয়েছে।
ইমাম শাফেয়ী রহ. বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা যদি কুরআনে অন্য কোনো সূরা নাযিল না করে শুধু সূরা আল আসর নাযিল করতেন তাহলে এটা মানুষের হেদায়াতের জন্য যথেষ্ট হত।' (মিফতাহুস সাআদাহ : ইমাম শাফেয়ী)
بسم الله الر حمن الرحيم
মূল আরবীঃ
(١)وَالْعَصْرِ
(٢)إِنَّ الْإِنسَانَ لَفِي خُسْرٍ
(٣)إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ
বাংলা উচ্চারণঃ
(১) ওয়াল আসর
(২) ইন্নাল ইনসানা লাফি খুসর
(৩) ইল্লাল-লাজিনা আমানু
ওয়ামিলুছ ছালিহাতি
অতাওয়া ছাওবিল হাক্কী
অতাওয়া ছাওবিছ ছবর।
বাংলা অনুবাদঃ
(১) কসম সময়ের
(২) নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত
(৩) তাঁরা ব্যতীত, যারা ইমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে
এবং পরস্পরকে হকের (সত্যের) দাওয়াত ও ছবরের উপদেশ দিয়েছে।
* প্রথম আয়াতে, আল্লাহ তায়ালা মানব জাতিকে সময়ের গুরুত্ব অনুধাবন করানোর জন্য সময়ের কসম করেছেন। মানুষ সৎকর্ম করুক আর না করুক সময় ফুরালে অবশ্যই তাকে আল্লাহর কাছেই ফিরে যেতে হবে এবং তার সারা জীবনের প্রতিটি সেকেন্ড সময়ের হিসাব আল্লাহর কাছে দিতে হবে।
* দ্বিতীয় আয়াতে তিনি বলেছেন পৃথিবীর সব মানুষই ক্ষতির মধ্যে আছে, আর তৃতীয় আয়াতে তিনি সেই ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য মানুষকে চারটি গুণ অর্জন করার কথা বলেছেন, চারটি গুণ যাদের মধ্যে থাকবে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেনা। সেই চারটি গুণ হলো-
এক. ঈমান
দুই. সৎকাজ বা আমালে সালেহ
তিন. অন্যকে সত্যের পথে আহবান
চার. অন্যকে ধৈর্যের উপদেশ দান
সুরা আসররের ফযিলতঃ ইমাম জাফর সাদেক র. বলেন: যে ব্যক্তি নফল নামাযে সুরা আসর তেলাওয়াত করবে আল্লাহ তাকে কিয়ামতের দিন নুরানী চেহারায় ও হাসিমুখে হাজির করবেন এবং বেহেশতে প্রবেশ করাবেন। (মাজমাউল বায়ান, খ. ১০, পৃ.৫৪৫)
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:০৪