ডায়াবেটিস – যা বাংলাতে বহুমূত্র রোগ নামে পরিচিত তা এখন ছড়িয়ে পড়েছে সমাজের প্রতিটি স্তরে। ডায়াবেটিসের জন্য দেখা দেয় নানা ধরনের সমস্যা , আর এই রোগটি অন্যান্য রোগ থেকে ভিন্ন ধরনের -
কেন এই ভিন্নতা??
খেয়াল করে দেখুন আগের বেশির ভাগ রোগই হত কোন না কোন organism দ্বারা আক্রমনের জন্য। ফলে, এন্টি ব্যাক্টেরিয়াল কিংবা এন্টি ফাংগাল ঔষধের মাধ্যমে চিকিৎসা করা যেত। কিন্তু, ডায়াবেটিসের জন্য এমন কোন Organism নেই, বরং বলা হয়, জীবনযাত্রার পরিবর্তন, কায়িক শ্রম কমে যাওয়া, দুশ্চিন্তা বেড়ে যাওয়া - সব মিলিয়ে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
:::ডায়াবেটিসের প্রকারভেদ:::
ডায়াবেটিস প্রধানত ২ ধরনের -
১) টাইপ ১ ডায়াবেটিস – (Insulin Dependent Diabetes , Juvenile Diabetes)
২) টাইপ ২ ডায়াবেটিস (Insulin Non Dependent Diabetes, Adult Onset Diabetes)
১) টাইপ ১ ডায়াবেটিস – (Insulin Dependent Diabetes , Juvenile Diabetes)
নাম দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে টাইপ ১ ডায়াবেটিস সাধারনত ছোট বয়সেই দেখা দেয় এবং প্রত্যহ ইনসুলিন গ্রহন ব্যাতিরেকে এর কোন চিকিৎসা নেই। (যত দিন বেঁচে থাকবে, ইনসুলিন নিয়েই বেঁচে থাকতে হবে)
২) টাইপ ২ ডায়াবেটিস (Insulin Non Dependent Diabetes, Adult Onset Diabetes)
টাইপ ২ ডায়াবেটিস বলতে ই আমরা সাধারনত ডায়াবেটিসকে বুঝাই, যার সূচনা ঘটে ৪০ বছর পরবর্তি সময়ে। এবং এই ডায়াবেটিস ই বংশ পরম্পরায় ছড়িয়ে পড়ে।
এর চিকিৎসার জন্য রয়েছে নানা ধরনের ঔষধ, যার ভেতর রয়েছে Oral Hypoglysemic Agents – Metformin, Glipizide, Repaglinide etc এই ঔষধ গুলো মুখে খাওয়ার জন্য, এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ি খেতে হয়।
টাইপ ২ ডায়াবেটিস এর আরেকটি ঔষধ হচ্ছে INSULIN – যখন উপরোক্ত ঔষধ গুলো আর কাজ করে না কিংবা liver diseases অথবা Surgery এর সময় এ Insulin দেয়া হয়।
আর টাইপ ২ ডায়াবেটিস এ সব সময় রোগীকে বলা হয় প্রত্যহ ব্যায়াম করার জন্য।
(((প্রশ্ন করা যেতে পারে কতটুকু ব্যায়াম ??
সবার শারীরীক ক্ষমতা তো আর সমান নয়, তাই, ব্যায়াম ও সবার সমান নয়, তবে যেই পরিমান ব্যায়াম করলে বুক ধড়ফড় করবে ততটুকু ব্যায়াম করা যেতে পারে - তার অধিক নয়!!!!)))
Hyperglycemia - সহজ ভাষায় বললে, রক্তে গ্লুকোজের পরিমান স্বাভাবিকের চাইতে বৃদ্ধি পাওয়া।
Hypoglycemia - রক্তে গ্লুকোজের পরিমান স্বাভাবিকের চাইতে কমে যাওয়া।
এই দুটি নাম ডায়াবেটিস এর সাথে অত্যন্ত ভাবে জড়িত -
ডায়াবেটিস হয় রক্তে গ্লুকোজের পরিমান স্বাভাবিকের চাইতে বৃদ্ধি পাওয়ার কারনেই।
রক্তে গ্লুকোজের পরিমান 5.5-7.8 mmol/L এর ভিতর থাকাটা স্বাভাবিক। যখন তা বেড়ে যায় তখনি ডায়াবেটিস হয়।
Oral Glucose Tolerance Test ::
স্বাভাবিক - 5.5 mmol/L - 7.8 mmol/L
Impaired Glucose Tolerance - 7.8 mmol/L - 11mmol/L
ডায়াবেটিস - more than 11 mmol/L
প্রশ্রাবে গ্লুকোজ তখনি আসে যখন রক্তে গ্লুকোজের পরিমান স্বাভাবিকের চাইতে বেড়ে যায়। কিন্তু এই পরীক্ষা রক্তে গ্লুকোজ পরীক্ষার মত এত নির্ভরযোগ্য নয়, কেননা কিডনীতে সসম্যার জন্যও প্রশ্রাবে গ্লুকোজ পাওয়া যেতে পারে।
:::HYPOGLYCEMIA:::
এটা ডায়াবেটিস এ গুরূত্বপূর্ন কারন ডায়াবেটিস এর ঔষধ খেলে কিংবা ইনসুলিন নিলে কখনো কখনো এমনটা হতে পারে।
ঔষধ খাওয়ার নির্দিষ্ট সময় পর খাবার না খেলে কিংবা মাত্রাতিরিক্ত ঔষধ সেবন করলে এমনটা হতে পারে -
Hypoglycemia হলে হঠাৎ রোগীর কাপুনি হওয়া, কিংবা চোখে হঠাৎ ঝাপসা দেখা, হঠাৎ অস্বাভাবিক আচরন করার মত ঘটনা ঘটতে পারে।
এক্ষেত্রে রোগীকে দ্রুত খাবার দিতে হবে(অল্প উপসর্গের ক্ষেত্রে), তাতে অবস্থার উন্নতি না হলে(বেশি উপসর্গের ক্ষেত্রে) গ্লুকোজ বা চিনির সরবত খাওয়াতে হবে।
শেষে একটি কথাই বলি - (((শৃক্ষলাই জীবন)))
শৃক্ষলা মেনে চললে ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব!!!