বিগত ২১শে ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে যখন সবাই ব্যস্ত নগ্ন পায়ে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার জন্য, তখন ও চিন্তিত কিছু মুখ চারদিকে খুজে ফিরছে কি যেন আজ নাই কিসের যেন অভাব। কিসের যেন হাহাকার এত কিছু আছে তারপরও নেই অনেক কিছু। কেন? এর উত্তর একটু পরেই পাওয়া গেল, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্বিবদ্যালয় একটি অন্যতম প্রতিষ্ঠান যার নাম শুনলেই শিক্ষার্থীরদের মনে এক ধরনের প্রশান্তি আসত যে অন্তত এইখানে কোন হাঙ্গামা কোন সেশন জটে পড়বে বা পড়তে হয় না। আর আজ গত ১৯শে জানুয়ারী থেকে ২২শে ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত (৩০ দিন এর ও বেশী) ক্যাম্পাসে কোন ছাত্র কেন তার ছায়াটি পর্যন্ত দেখা যায় না। ক্যাম্পাস দেখে মনে হচ্ছে যেন এক হাহাকার স্থল। আজ ও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধায় শহীদ মিনারে ঠিকি ফুল দেয়া হয়েছে, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে বিজয় ৭১ এ কিন্তু এতে ছিল না কোন মধ্যমণি ছাত্র, যাদের জন্য এই বিদ্যাপীঠ। আজ শুধু ক্যাম্পাস টা হয়ে গেছে শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য। বিজয় ৭১ এ ঠিকি রাজাকার বিরোধী আন্দোলন হয় কিন্তু থাকে না মধ্যমণিরা, গর্জে উঠতে পারে না রাজাকার বিরোধী হুংকার। হয়ে উঠে না আর এক শাহবাগ। আজ সকালে শহীদদের প্রতি ভিসি স্যার এর ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে শুরু হয় প্রভাত। তার পর আর ও অন্যান্য সহযোগী সংগঠন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় এক এক করে। তার পর ই সাধারন শিক্ষার্থীর ব্যানারে একটা মানববন্ধন হয় এর পর পর ই আলাদাভাবে আর একটা মানববন্ধন করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট এর ব্যানারে কিছু শিক্ষার্থী, যদি এর আগে (সকাল ৮.১৫ টায় শহীদ মিনার এর সামনে) একটা মানববন্ধন করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এবং তা প্রথাগত ভাবে প্রশাসনের বাধায় তাড়াহুড়া করে শেষ করে দিতে হয়।
উল্লেক্ষ্য ছাত্রফ্রন্টের সমাবেশে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়েছিলেন। সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে ক্যাম্পাস খুলে দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান এবং সেইসাথে প্রশাসনকে শাহবাগের গণজাগরণ থেকে শিক্ষা নেওয়ারও পরামর্শ দেন। সাধারণ শিক্ষার্থী ফুঁসে ওঠার মাধমে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে বাধ্য করা হবে বলে সমাবেশে জানানো হয়। সমাবেশ থেকে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের পরবর্তী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার আহবান জানানো হয়।এবং এই সমাবেশ থেকে অন্যান্য সমাবেশের সাথে একাত্নতা প্রকাশ করা হয়েছে এতে ময়মনসিংহ ও এর আশেপাশের জেলা থেকে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। ক্যাম্পাস খুলে দেওয়ার দাবি নিয়ে পরবর্তী সময়ে বড় ধরণের আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান উপস্থিত শিক্ষার্থীবৃন্দ।
এছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে সমাবেশে সংহতি জানিয়েছে বাকৃবি সাংবাদিক সমিতি এবং সাংবাদিক সমিতির পক্ষ সকল ধরণের সহযোগিতারও আশ্বাস দেওয়া হয়।
আর ক্যাম্পাস খোলার ব্যাপারে বিস্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রলীগের সাথে ক্যাম্পাস খোলার ব্যাপারে ভিসি, প্রক্টর সহ অন্যান্য প্রশাসনের লোকেরাও যোগাযোগ করছে। এবং সেই সাথে এইমাসের শেষ দিকে (সম্ভবত ২৮ তারিখ) ভার্সিটি খুলে দেওয়ার ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
উল্লেক্ষ্য যে, ১৯ জানুয়ারি ছাত্রলীগেরদুই পক্ষের সংঘর্ষে রাব্বি নামে পাশের গ্রামের ১০ বছর বয়সের এক শিশু নিহত হয়। এরপর অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে আছে ।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:২৪