**** প্রারম্ভিকা ****
অর্ধশত বছর আগের কথা । যমুনার জলস্নাত দুরন্ত বাতাস ইছামতির বুক ছুয়ে ছুয়ে বাহুকা গ্রামে পৌছাতে ক্লান্ত শ্রান্ত হয়ে যেত । গ্রামের উত্তর পশ্চিম পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ইছামতি, পুর্বপাড়া থেকে যে মেঠোপথটা বেড় হয়ে এসেছে তা গ্রামের ঠিক মাঝখানে এসে দুইভাগ হয়ে একটা গিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম কোনায় নদীর সাথে মিশেছে সেখানে আছে খেয়া নৌকা, মহির যার গর্বিত মাঝি – সুর্য্যদয় থেকে সুর্যাস্ত পর্যন্ত, আরেকটা মসজিদের পাশ দিয়ে চলে গেছে চৌধুরী বাড়ীর দিকে । রাস্তার মোড়ে মাথা উচু করে দাড়িয়ে আছে শতবর্ষী বটগাছ ।
সূর্যের আলো বিনা এখানে দিন এবং রাতকে আলাদা করা কঠিন । সন্ধ্যার সময় কোন কোন বাড়ীতে গাছার উপর সর্বচ্চ একটা করে পিদিম জলতে দেখা যায় । শিক্ষার আলো এখানে এমন যে চৌধুরীর ছেলে গঞ্জ থেকে অষ্টম শ্রেণী পাষ দিয়ে আসার পর প্রদর্শনী দেয়ার জন্য প্রায় চিড়িয়াখানার খাঁচায় ভরতে হল তাকে । এখানে জীবন মানে যুদ্ধ, অমাবশ্যার অন্ধকারের মাঝে জোনাকীর আলোতে বুকের ভিতর মৃদু কম্পন নিয়ে পথ চলার চেষ্টা । এখানে নেই ভবিশ্যতকে জানার ইচ্ছা, নেই অতীতকে নিয়ে গবেষনা, নেই বিলাসিতার ভেলায় জীবন ভাসিয়ে দেয়ার মত সামর্থ, আছে শুধু আজকের জন্য ভাবনা । তবুও এখানে ভালবাসা আছে, আছে সহমর্মিতা, আছে একজনের প্রতি আরেকজনের বিশ্বাস, তেমনি আছে বিশ্বাসঘাতকতার মত পাপাচার, আছে প্রভাবশালীর বিস্তার করা হস্ত, আছে অথ্যাচার, আছে অনাচার যা আমরা যুগ যুগ ধরে বুকের মধ্যে লালন করে আসছি।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০১১ সকাল ৮:৩২