সানে নুজুল। বৈশাখী জৈষ্ঠ্য সময়টার বৃষ্টি আসার ঠিক আগে আগে একটা অদ্ভুত দমকা হাওয়া আসে, যেন বৃষ্টির আগমনী বার্তা নিয়ে। সেই পাগলা হাওয়ার সৌজন্যে আঙ্গিনার বড় কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে অনেকটা জায়গা জুড়ে কৃষ্ণচূড়া ফুলে, আর ফুলের নিবিড় লাল পাপড়িতে এক বিছানো গালিচা তৈরী হয়ে গিয়েছিলো। সেই গালিচার কাছে গিয়ে উবু হয়ে কিছু ম্যাক্রো ছবি তুলতে তুলতেই প্রথমে টুপটাপ, তারপরে বুঝে ওঠার আগেই ঝুম বৃষ্টি। বৃষ্টির বড় বড় ফোটারা গাছের শাখা প্রশাখায় হামলে পড়তেই লাল আগুনের গাছ থেকে আস্ত কৃষ্ণচূড়া ফুলের টুপটাপ ঝড়ে পড়া।
তীব্র বৃষ্টিতে ক্যামেরা ভিজে যাওয়ার ভয়ে সেই বিশাল কৃষ্ণচূড়া গাছতলায় বন্দী। গাছটাও তার অতিথির প্রতি মমতা ভরে যতখানি পারে বৃষ্টিকে ঠেকিয়ে রাখছিলো। ক্যামেরার বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া উপেক্ষা করেই কয়েকটা কৃষ্ণচূড়াকে হাতে নিয়ে আবারো ম্যাক্রো তোলার চেষ্টা। এবার ঘন বৃষ্টিটাই ব্যাকড্রপ। ম্যাক্রো ফিচারে সেই ঘন বৃষ্টি আরো ঘোলাটে হয়ে আসে। কাছ থেকে কৃষ্ণচূড়ার পাপড়ির বাহারী নকশা আরেকবার খুব মনখুলে দেখা হয়। ম্যাক্রো ছবি তোলার এই এক সুবিধে। যা 'দেখা হয় না চক্ষু মেলিয়া, কাছে লইয়া' - ঠিক তাকেই খুব কাছ থেকে, চোখ মেলে দেখতে সুযোগ করে দেয়।
কে জানতো দেখতে লাল লাল কৃষ্ণচূড়ার পাপড়ির উপরেও প্রকৃতি পরম মমতায় কি সুন্দর নকশা করে রেখেছে! ভুল করে এমনই এক পাগলা হাওয়ার অলস বিকেলে হয়তো কোনো পথিক তুলে নেবে, দেখবে, মুদ্ধ হবে - এই তার পরম তৃপ্তি, এই সামান্য মুদ্ধতার জন্য প্রকৃতির কত না অসামান্য আয়োজন!
'আমারে তুমি অশেষ করেছো
এমনই লীলা তব।
ফুরায়ে ফেলে আবার ভরেছো
জীবন নব নব। '
- রবি ঠাকুর
লোকেশন। ফুলার রোড, ঢাকা ভার্সিটি ক্যাম্পাস।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মে, ২০০৯ রাত ১১:৪৫