somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা কি উচ্চ শিক্ষার যোগ্যতা রাখেন??

১৬ ই মে, ২০১২ রাত ১:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানবতাবাদী যারা তারা নিশ্চই মানুষ হিসেবে একজন ব্যক্তিকে মূল্যায়ন করবেন। ব্যাক্তিস্বাতন্ত্রবাদ অন্তত সেই কথাই বলে। আমরা যখন একজন ব্যক্তিকে মূল্যায়ন করি তখন কি সেই সত্যটাকে মনে রাখি, অনেক ক্ষেত্রেই হয়ত না। আমরা যখন অন্যকে মূল্যায়ন করি তখন তাকে আমাদের নিজস্ব চিন্তা-চেতনার আলোকেই দেখে থাকি।

আমাদের দেশে বেশ অনেকদিন থেকেই সুশীল সমাজের ব্যনারে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় কতিপয় বুদ্বিজীবী নামধারীরা সমাজের প্রায় প্রতিটি বিষয়েই তাদের পান্ডিত্যপূর্ণ মন্তব্য প্রদান করেন। আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে আপনারা কি মানবতার সেই আহবানকে মেনে চলেন? সাম্যের যে গান নজরুল গেয়ে গিয়েছিলেন তাকে কি আপনাদের মনে পড়ে?

মানবতা আর সাম্য বলে যে একজন ব্যক্তিকে তার পূর্ন স্বাধীনতা দিতে হবে তার মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করবার জন্য, আমাদের সংবিধান ও সেই অধিকার তাকে প্রদান করেছে এবং রাষ্ট্রের এটা অবশ্য পালনীয় দায়িত্ব বলেও স্বীকার করে নিয়েছে। যদি তাই হয়, একজন মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী কেনো উচ্চশিক্ষার জন্য তার পছন্দের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবেনা?? কেনো তাকে প্রতিবছর উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হতে হয় শিক্ষা নামক তার মৌলিক অধিকার আদায়ে।

প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে বেশ কিছু বিষয়ে মাদ্রাসা থেকে পাশ করে আসা কোন শিক্ষার্থীকে ভর্তি হতে দেয়া হয়না। যুক্তি হিসেবে আমাদের বিজ্ঞ শিক্ষকগন বলে থাকেন যে এতে করে নাকি তাদের বিভাগের মেধার অবনমন ঘটবে। সবিনয়ে জানতে চাই সে সকল দেশ বরেণ্য শিক্ষাবিদদের কাছে, যে ছেলেটি আপনারই করা প্রশ্ন দিয়ে আপনারি দেয়া গার্ডে ৩০ - ৪০,০০০ শিক্ষার্থীকে পেছনে ফেলে মেধা তালিকায় প্রথম সারিতে অবস্থান করে, তাকে আপনি কোন মেধার বিচারে মেধাহীন বলছেন!!! আপনি যদি আপনার প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়কে মেধাবীদের চারণভূমিতে পরিনতই করতে চান, যদি মনে মনে করেন মাদ্রাসার ছেলেরা এখানে পড়ার মত যোগ্যতাই রাখেনা তাহলে আপনি এমন পরীক্ষা পদ্বতি তৈরি করুন যেখানে সত্যকার মেধাবীরাই কেবল উত্তীর্ণ হবে, যদি সেখানেও দেখেন তারা তাদের মেধার স্বাক্ষর রাখতে পারে তাহলে আপনাদের কি উচিত হবে তাদের শিক্ষার সে অধিকার কেড়ে নেবার?? আমাদের প্রধানমন্ত্রীর পুত্র, সজীব ওয়াজেদ জয় কিছুদিন আগে বলেছিলেন আমাদের সেনাবাহিনীতে নাকি শতকরা ৪০ ভাগেরও বেশী মাদ্রাসার ছাত্ররা ঢুকে পড়েছে। প্রিয় জয় ভাইকে বলছি, আপনার এ পরিসংখ্যান কতটুকু সত্য তা আপনিই ভালো বলতে পারবেন, আর আমাদের সসস্ত্র বাহিনীই বলতে পারবে, তবে এখানেও একই কথা, আমি যতটুকু জানি যে, আমাদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগ পাবার জন্য যথেষ্ট পরিমানের মেধা, যোগ্যতা আর পরিশ্রমের প্রয়োজন। এছাড়াও সেনা বাহিনীর নিয়োগ প্রক্রিয়া অদ্যবধি আমাদের দেশে প্রশ্নবিদ্ব হয়নি। যদি সেখানে আমাদের মাদ্রাসার ছেলেরা নিজেদের যায়গা করে নেয় তবে আপনাদের কেনো তা প্রশ্নবিদ্ব বলে মনে হয়। বিশেষত আপনাকে ভাবা হয় আপনি আমাদের ভবিষ্যত একজন নেতা। তাই আপনাকে কথা বলতে হবে সকলের পক্ষ হয়ে, কোন গোষ্ঠীর প্রতি বিরাগভাব প্রকাশ করে নয়।

একটা বিষয় অবশ্য এখানে পরিষ্কার যে যারা এহেন হীণ মানসিকতার পরিচয় দেন, তারা ধরেইন নেন যে, মাদ্রাসার ছেলেরা হয়ত সবাই জামায়াতে ইসলামী / শিবিরের সদস্য। এরা সবাই ঘাতকদের সন্তান। সে সকল সম্মানিতরা হয়ত ভূলেই যান, আমাদের দেশের মানুষ কতটা ধর্মপরায়ন, তারা তাদের সন্তানদের দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষা দেন নিজের তাগিদ থেকে, কোন বিশেষ দলের সদস্য যোগান দেবার জন্য নয়। আপনারা কেন ভুলে যান যে, এ পৃ্থিবীতে তারাই নেতৃত্ব দিবে যারা জ্ঞান-বিজ্ঞানে এগিয়ে থাকবে। সুতরাং যারা নিজের যোগ্যতায় এগিয়ে যাচ্ছে তাদের আপনারা কেনো আটকিয়ে রাখতে চাইছেন? এতে করে কি আমাদের দেশকেই আপনারা পিছিয়ে দিচ্ছেন না? কোন একটি রাজনৈতিক দলকে মোকাবিলা করতে যেয়ে আপনারা বিশাল একটা মেধা শক্তিকে নষ্ট করে দিচ্ছেন। সবাই শিবির করে, এই ধারনাটা আপনাদের স্বাভাবিক মানবিক মূল্যবোধকে নষ্ট করে দিচ্ছে। বিশেষত যখন আমাদের শিক্ষক সমাজের তথাকথিত নেতারা এসকল মেধাবীদের অংকুরেই ধ্বংস করে দেবার ষড়যন্ত্র করেন তখন সত্যি দুঃখ হয়, জাতি কার কাছ থেকে শিখবে? দুঃখ হয় আমাদের তথাকথিত সুশীল সমাজের ভূমিকা নিয়ে, যারা এহেন মানবাধিকার লংঘন কে পাশ কাটিয়ে যান। দেখেও না দেখার ভান করেন। মানবাধিকার হয়ত শুধু কোন বিশেষ বিশেষ শ্রেণীকে সুবিধা পাইয়ে দেবার জন্যই তৈরি হয়।

খুব পুরনো একটি বিষয়ের অবতারণ এখানে করছি বলে কেঊ বিরক্ত হবেন না, মূলত খুব শ্রীঘ্রই দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে, বিগত বছরের মত আবারো হয়ত আমরা দেখব এবারো মাদ্রাসা ছাত্রদের জন্য তৈরী হবে নতুন নতুন প্রতিবন্দ্বকতা, আবারো তারা দ্বারস্থ হবেন আদালতের। আইনের শাসন আমাদের দেশে যে অবস্থায় যেয়ে দাঁড়িয়েছে তাতে হয়ত তাদের জন্য এ দ্বার বন্ধ্ব হয়ে যাবে। তবু আমরা যারা এসকল মেধাবীদের উজ্জ্বল মুখগুলো দেখি তখন আশায় বুক বাঁধি হয়ত এবার প্রশাসনের বোধোদয় হবে, আমাদের দেশের সত্যকার প্রগতিশীলরা তাদের পাশে এসে দাড়াবেন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হয়ে ঊঠবে মেধাবীদের তীর্থস্থান।
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখানে সেরা ইগো কার?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪






ব্লগারদের মাঝে কাদের ইগো জনিত সমস্যা আছে? ইগোককে আঘাত লাগলে কেউ কেউ আদিম রোমান শিল্ড ব্যবহার করে,নাহয় পুতিনের মত প্রটেকটেড বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করে।ইগো আপনাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে, টের পেয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবং আপনারা যারা কবিতা শুনতে জানেন না।

লিখেছেন চারাগাছ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮

‘August is the cruelest month’ বিশ্বখ্যাত কবি টিএস এলিয়টের কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘The Westland’-র এ অমোঘ বাণী যে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন করে এক অনিবার্য নিয়তির মতো সত্য হয়ে উঠবে, তা বাঙালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×