somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমরা কেন এমন নয়!

২৫ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আজ রবিবার ছুটির দিন।শনি ও রবিবার এখানে সাপ্তাহিক ছুটি।এই ছুটির দিনের বিকেলে সাধারণত আলো ঝলমল বিপনি বিতান গুলোতে ঘুরে ফিরে কাটে।আজও তার ব্যতিক্রম নয়।বাড়ির সদর দরজায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি জীপের জন্য।এটাই ফিলিপাইনের স্বল্প দূরত্বের গনপরিবন। জীপ এখানে জীপনি নামেই পরিচিত।অল্পক্ষণ পরেই হাত তুলে একটি জীপ থামালাম।চড়ে বসতেই লক্ষ্য করলাম আমি ছাড়া আর কোন যাত্রী নেই,এটা নিয়ে চালকের কোন গড়িমসি নেই,মানুষ দেখলেই অযাচিত ভাবে না দাঁড়িয়ে,অতিরিক্ত যাত্রীর আশা না করে সে স্বাভাবিক গিতিতেই চালিয়ে যাচ্ছে।পকেট থেকে টাকা বের করে একটু এগিয়ে গিয়ে চালকের হাতে ভাড়া দিলাম।এই জীপ গুলোতে সাধারণত চালকের কোন সহকারী বা ভাড়া আদায়কারী থাকে না।যাত্রীরা স্বেচ্ছায় হাত বাড়িয়ে ভাড়া দিয়ে দেয় চালকের হাতে।জীপের মধ্যে আছে একটি ভাড়ার তালিকা,আছে একটি সড়ক পরিবহন কতৃপক্ষের নোটিশ,সেখানে লেখা আছে “জীপের মধ্যে ধূমপান নিষেধ।ছাত্র, বৃদ্ধ এবং শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য ২০% কম ভাড়া”।আর আছে ছোট একটি আবর্জনার ঝুড়ি,যেন কোন যাত্রীর কোন কিছু ফেলে দেবার দরকার হলে রাস্তায় না ফেলে এই ঝুড়িতে ফেলতে পারে।জীপের দরজার পাশের যায়গাটি প্রতিবন্ধী এবং বয়স্কদের জন্য বিশেষ ভাবে বরাদ্দ।কেউ কখনো ভাড়া নিয়ে কোন দরকষাকষি করেনা।সবাই নির্ধারিত ভাড়াই স্বেচ্ছায় দিয়ে থাকে।কেই ভাড়া না দিয়ে নেমে গেলে চালকের পক্ষে ধরা খুব কঠিন হবে,তবে এমন কাজ কেউ করে বলে মনে হয় না।
বাসের ব্যবস্থা একটু ভিন্ন।এখানে একজন ভাড়া আদায়কারী থাকে।প্রায় শতভাগ বাসে প্রত্যেক যাত্রিকে টিকেট দিয়ে ভাড়া আদায় করা হয়,যেন আদায়কৃত ভাড়ার করের অংশ নিশ্চিত হয়।শুধু স্বল্প দূরত্বের নয়,দূর পাল্লার বাসেও ছাত্র-ছাত্রি,বয়স্ক এবং প্রতিবন্ধীদের ২০% কম ভাড়ার সুবিধা দেয়া হয়।তবে বয়স্ক এবং ছাত্র-ছাত্রিদেরকে পরিচয় পত্র দেখাতে হয়।এই বাসেও ভাড়া নিয়ে কোন দরকষাকষি কল্পনাতীত।অথচ আমাদের দেশে এই চিত্র সম্পূর্ণ উল্ট,এক কথায় ভাড়া দিয়ে দেওয়া যেন আমাদের ধাতে নেই।আর ছাত্র–যুবক হলে তো কথাই নেই।তর্ক-বিতর্ক থেকে পেশীর জোর শুরু হয়ে যায়।যেন বাসে ভাড়া কম দেয়ায় বিশেষ বাহাদুরি আছে।এখানে একতরফা ছত্রদেরকে দায়ী করলেও ভুল হবে।প্রায় প্রচলিত আছে যে ছাত্রদের অর্ধেক ভাড়া।কিন্তু এরকম কোন নীতিমালা আদতেই আছে কিনা,থাকলেও সেটা কখন কোথাও চোখে পড়েনি।
এই উদাহরণটিতে ফিলিপিনোদের শুধু একটি চরিত্রের সামান্য একটু তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।নিয়ম এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধা।এরা পৃথিবীর অধিকাংশ ধনি দেশেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।অসংখ্য ফিলিপিনো প্রবাসে থাকলেও তারা কোথাও কোন রাজনৈতিক দলের হয়ে বা কোন দাবি আদায়ের আন্দোলন করেছে এমনটা কেউ দেখেছেন বলে শুনিনি।আচরণগত কারনে কোন দেশের দরজা ফিলিপিনোদের জন্য বন্ধ হয়ে যায়নি।অথচ আমরা যেন নিম ভাঙ্গার ব্রত নিয়ে বড় হই।প্রথিবীর যে দেশে আমরা আছি সক্রিয় রাজনীতি বা সংগঠন করা যেন আমাদের প্রধানতম দায়িত্ব,আর সেই সংগঠনের ব্যানারে মিটিং মিছিল,আন্দোলন,ঝগড়া বিবাদ,ভাংচুর না করলে যেন আমাদের পরিচয় রক্ষা হয়না।একটা সময় ছিল যখন ফিলিপাইনকে গৃহকর্মীর দেশ বলা হতো।কিন্তু এই চিত্র তারা প্রায় বদলে ফেলেছে।বিদেশে এরা শুধু এখন গৃহকর্মীর কাজই করেনা,আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত ফিলিপিনোরা এখন অনেক দেশে সম্মানজনক এবং গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে।ফিলিপাইনের অগ্রগতি কেউ নিজে চোখে না দেখলে তাকে বলে বিশ্বাস করানো কঠিন হবে।এদের এই আগ্রগতি দেখে হিসেব নিকেশ করে বিশ্বব্যাংক বলেছে,খুব নিকটতম সময়ে ফিলিপাইন ধনী দেশের তালিকায় নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করবে।নিয়ম ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধা এদেরকে গরীব করে দেয়নি বরং ধনীদের কাতারে নিয়ে আসছে।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×