নারী ও পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি।কয়দিন আগে পড়লাম কোলকাতার এক নারী সাংবাদিক সাক্ষাতকারে বলেছেন “মাঝে মাঝে আমি অন্তর্বাস পরি, মাঝে মাঝে অন্তর্বাসের ফিতে দ্যাখ যায়। তাতে কি ? পুরুষরা কেন আমাদেরকে চোখ দিয়ে ধর্ষণ করে?” –ইত্যাদি ইত্যাদি। এতে সবাই উপদেশ দিয়েছেন পুরুষদের দৃষ্টি ভঙ্গী পাল্টাতে হবে। আমার মনে হয়েছে এটি একপেশে রায়। এভাবে সমাজের পরিবর্তন আনা যাবে না। মেয়েদের শরীর দেখা নিয়ে পুরুষে প্রতি অনেক অভিযোগ ওঠে। অভিযোগটা মিথ্যেও নয়। তবে নারীবাদী নারীরা যে ভাবে অভিযোগ করেন এবং যে যুক্তি গুলো দেখান তাও সব সময় ঠিক নয়। আমার অন্তর্বাস দেখা যায় তাতে কি? অর্থাৎ আমার যাই দেখা যাক না কেন, তাতে পুরুষের কি আসে যায়। তারা অমন লোলূপ দৃষ্টিতে তাকায় কেন। কেন চোখ দিয়ে ধর্ষণ করে? এর বিপরীতে পুরুষদের ও অনেক জবাব আছে। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে, সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে, নানান রকম উত্তর দেওয়া হয়। যে সব পুরুষেরা নিজেদের আধুনিক ও উদারমনা বলে ভাবেন তারা নারীদের সাথে সুর মিলিয়ে পুরুষদের দৃষ্টভঙ্গী পরিবর্তন করতে বলেন। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছার আমি একজন পুরুষ হয়ে জন্মেছি। এতে আমার কোন হাত ছিলনা। নিজের জন্মের প্রতি কারো কোন হাত থাকেনা। প্রকৃতি নিজের ইচ্ছায় নারী ও পুরুষ দুই প্রজাতি বানিয়েছে। দুই নয় তিন প্রজাতি হবে। হিজড়া এক প্রজাতি আছে। এরা নারী ও পুরুষের মিলিত বা বিকৃত রূপ। প্রকৃতির অনেক কিছুতেই ব্যাতিক্রম আছে। এটাও এক ধরনের ব্যাতিক্রম। কেন তা প্রকৃতিই বলতে পারে। নারী পুরুষের যৌন মিলনের মাধ্যমেই প্রকৃতি তার সৃষ্টি কে বিস্তার করে চলেছে। তাই প্রকৃতি নারী ও পুরুষের ইন্দ্রিয় ও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে যৌন অনুভূতি দিয়েছে। ইন্দ্রিয় বলতে- স্পর্শন,দর্শন, স্রবন, ঘ্রাণ ও চিন্তায় ও যৌন ইচ্ছা জাগে। আর পুরুষের লিঙ্গই প্রধান যৌন অনুভূতির অঙ্গ।কিন্তু নারীর সমস্ত শরীরই যৌন অনুভূতি স্পর্শ কাতর। তবে প্রধান যৌন অনুভূতি প্রবণ অঙ্গ গুলো হচ্ছে- যোনী, স্তন, নিতম্ব ও ওষ্ঠ। এ গুলির যে কোনটির স্পর্শে , দর্শনে এমন কি নারীর শরীর ও চূলের ঘ্রাণেও পুরুষের যৌন অনুভূতি জাগে বা ইচ্ছা হয়। কোন সুস্থ সবল পুরুষ এই অঙ্গ গুলি স্পর্শ কোরে, দেখে যদি যৌন অনুভূতি বা ইচ্ছা না হয় তাহলে বুঝতে হবে পুরুষটি অসুস্থ । এই অনুভূতি গুলো নারী ও পুরুষের শরীরে থাকা কোন পাপাচার, অন্যায় ও অশ্লীল নয়। এর ব্যাবহারে পাপাচার, অন্যায় ও অশ্লীলতা আছে। বলার অপেক্ষা রাখেনা যে এই অনুভূতি স্বর্গীয় অনুভূতি। এত আরামদায়ক অনুভূতি পৃথিবীর আর অন্য কোন কর্মে নাই। প্রকৃতি ইচ্ছে করেই তা দিয়েছে। তা না হলে ঐ বিশ্রী কর্মটি কে করতে চাইত? প্রকৃতির এত শ্রী বৃদ্ধি ও হতোনা। তাই কোন পুরুষ যদি কোন যুবতী নারীর অঙ্গ প্রত্যঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট হয় তা প্রাকৃতিক কারণেই হয়। নারী যদি না চায় কোন পুরুষ তার প্রতি আকৃষ্ট হোক তাহলে তার নিজের শরীর কে ঢেকে রাখতে হবে। নারীরা যে সেজে গুজে শরীরের ভাঁজ গুলো স্পষ্ট করে তূলে বাইরে বের হন তা কার জন্য? শুধু মাত্র নিজের জন্য হলে তো সেজে গুজে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আবার খূলে ফেলতেন। তা করেন না মানুষ কে দেখাতে বাহিরে বের হন। আর পুরুষেরা আপনার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে যদি তাকিয়ে থাকে তাকে দোষ দিতে পারেন না ।নারীর যদি তার নিজের শরীর যে কোন ভাবে দেখাবার অধিকার থাকে তা হলে পুরুষের ও তা দেখবার অধিকার থাকবে। নারীরা সভ্যতার কথা বলেন? – আপনার অন্তর্বাসের ফিতে বের করে রাখা কি সভ্যতা? তাহলে কুকুর সব চেয়ে বেশি সভ্য। সে তো কোন কিছু ঢেকেই রাখেনা। ওর দিকে কোন পুরুষ কুকুর তাকালেও তাকে গালমন্দ করেনা। বলবেন আপনাদের মা বোন নাই, তারাও তো নারী। হ্যাঁ তারাও নারী তাই আল্লাহ হূকূম দিয়েছেন – সেয়ানা হয়ে গেলে বোন তার ভাইয়ে সামনে পর্দা করবে। সন্তান বড় হয়ে গেলে মা ছেলের সামনে পর্দা করবে। পুরুষ দের হুকুম দেয়া আছে , পরনারীর প্রতি দৃষ্টি পড়লে দৃষ্টি সরিয়ে নিতে হবে। কেননা সামাজিক ভারসাম্য ঠীক রাখতে হলে নারী পুরুষ ঊভয় কেই সংযত হতে হবে। প্রাকৃতিক এই আকর্ষণ কে অস্বীকার করা যায় না। আপনি অন্তর্বাস বের করে নিতম্ব দুলিয়ে চলবেন আর পুরুষেরা শুধু দৃষ্ট সংযত করে ভদ্র লোকের মত মিথ্যে কথা বলবে যে, না আমার কিছু হচ্ছেনা। আমি ভদ্র লোক। এটা অসাম্য ও অন্যায়। আপনি যদি আপনার শরীর অন্য পুরুষ কে দেখাতে না চান তাহলে আপনার নিজেকে ঢেকে রাখুন। এর পরেও যদি আপনাকে কেঊ ঊত্তক্ত করে তার শাস্তির ব্যাবস্থা আছে। যদি ধর্ষণ করে তবে মৃত্যুদণ্ড আছে। নারীরা পুরুষ দের প্রলোভিত করলে বা আকৃষ্ট করার চেষ্টা করলে তার ও শাস্তির বিধান করতে হবে। তবেই সমাজে সাম্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। শুধু পুরুষের দৃষ্টি ভঙ্গী পরিবর্তন করলেই হবেনা।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১১:১৬