somewhere in... blog

৬০ ঘন্টা ট্যুরের ২৩ ঘন্টা যাত্রাপথে!!-[পর্ব ১]

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১০:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আবারো ঘোরাঘুরির কথা!! আবারো গোত্তা খাওয়া ঘুড়ি সিরিজের লেখা।

অনেকদিন কোথাও যাওয়া হয় না। এবার ঈদের বন্ধে বাসার সবাই মিলে ঠিক করা হল কোলকাতা যাবে। সেখানে যাওয়া হল। সেখান থেকে গ্যাংটকও যাওয়া হল। সে গল্প আরেকদিন।
ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার কথা ছিল ৪ ডিসেম্বর। হঠাৎ করেই আরেক সপ্তাহ বন্ধ বাড়ানো হওয়ায় বন্ধুরা মিলে ঠিক করলাম এবার কুয়াকাটা ট্রিপ। বলতে দেরি, বেড়োতে দেরি নাই। সাথে সাথে ৬ তারিখ দুপুরে লঞ্চঘাটে গিয়ে ৬জনের জন্য ১টা ভি.আই.পি কেবিন বুকিং, আর রাত ৯.১০ এ লঞ্চে যাত্রা শুরু। গন্তব্য বরিশাল।
আমাদের লঞ্চ দীপরাজ।

লঞ্চে উঠেই আমরা ওখানের কর্মচারিদের আগে থেকেই জানিয়ে দেই আমাদের ৬টা লাইফ বয়া লাগবে!!! কয়দিন আগেই তো কোকো!!! /:) যদিও পরে আর নেয়া হয়নি। :(
লঞ্চ বরিশাল পৌঁছায় ভোর সাড়ে ৪টার দিকে।

আম্রা সবাই তখন ঘুম। ৪জন একবিছানায়, আর ২জন ২ সোফায়!!! অবশ্য আমাদের ঘুম শুরুই হইছিল রাত আড়াইটার দিকে। এ জন্য বিশিষ্ট নায়ক শাকিব আর তার জন্ম(Born to Fight)ই দায়ি!! /:) যদিও জন্মের সাবটাইটেল ক্যামনে Born to Fight হয়, বা ছোটবেলায় ২য় নায়িকার সাথে শাকিব সাহেব ক্যামনে খোলামেলা সমুদ্র সৈকতে লুকোচুরি খেলতো এইটা বুঝতারি নাই!!! :( :(
যাই হোক, ৬.৩০এ আম্রা "সরকারি সেবা, না নিয়া যাবা কোথা!!" এই নীতি'তে বিশ্বাসী হয়ে বিআরটিসি'র লক্কড় মার্কা বাসে চড়ে রওয়ানা দিলাম। এবার গন্তব্য আমতলী। যাইতে লাগার কথা সর্বোচ্চ দেড় ঘন্টা। মাগার ঐ যে কইলাম লক্কড় বাস!! সকলের সেবা দিতে দিতে আমতলী পৌঁছলাম আড়াই ঘন্টায়। এইখানে নাস্তা কইরা আবার খোঁজ-খবর। ক্যামনে যাওয়া যায়?? দুইটা রাস্তা। হয় মোটরসাইকেল, নাইলে বাস। মোটরসাইকেলে চইড়া এদ্দূর যাব!! এরমধ্যেই একজনের সাথে পরিচয় হল। ইসলামিক ইউনিভার্সিটির এক ছেলে। লোকাল। তার পরামর্শ খেপুপাড়া পর্যন্ত বাসে চলে যান, এরপর মোটরসাইকেল। তথাস্তু!!
আল্লাহ!! রহম কইরো!! যাওয়ার আগে শুনছিলাম রাস্তা খারাপ। এতক্ষণ আরামেই আইছি, খালি বরিশাল থেইকা আমতলী আসার সময় ১০ মিনিটের ফেরি পার হওয়ার জন্য ৪০ জন্য লাইনে খাড়ানি ছাড়া!! এইবার থেইকা শুরু হইল ম্যাজিক!! সিরাম রাস্তা!! একবার ডাইনে- একবার বামে। একদম ফ্যান্টাসি কিংডমের ম্যাজিক কার্পেট!! যাউক্গা। বাসের পাশের সহযাত্রী কয়, এ আর এমন কি?? এখনো তো আসল রোলার কোস্টারে চড়েনই নাই!! আম্রা কই "কস্কি মমিন!!"
খেপুপাড়া বাস স্ট্যান্ডে নাইমা হাঁইটা পার হইলাম আরেকটা ফেরি। ঐপাড়ে নাইমা দেখি আর কিছু নাই!! খালি মোটরসাইকেল আর মোটরসাইকেল!! আর রাস্তা.. আহা মরি মরি.. "লাল মাটি সবুজ টিলা/ সোহাগি ছে রঙিলা"!!
দু'জন দু'জন করে ৩টা মোটরসাইকেল নিয়া আম্রা রওয়ানা দিলাম আমাদের গন্তব্য কুয়াকাটা। ৫ মিনিট পরেই আম্রা বুঝে গেলাম কি একটা সাংঘাতিক ভালো সিদ্ধান্ত নিছিলাম মোটরসাইকেলে আসার ব্যাপারে। রাস্তা বলে কিছু একটা আছে। গর্ত, ভাঙ্গা, মাটির রাস্তা, ইটের রাস্তা!! আর, ১০-১৫ মিনিট পর পর ফেরি। মোট ৩টা ফেরি পারি দিলাম এবার। প্রথমটা ৩০ মিনিট পর, এরপর ৪০ মিনিট আর পরেরটা ৩৫ মিনিট পর। রাস্তা ক্রমশ: খারাপ থেকে খারাপতর!! আর, একেকজনের চেহারার রঙ তো লালে লাল!! নাহ, বেশি ফরসা হওয়ায় রোদে লাল না, লাল ধূলা লাইগা গায়ের রং লাল হইয়া গেছে!!! /:)
কুয়াকাটা পৌঁছলাম পৌনে ৩টা নাগাদ। আমাদের এক বন্ধুর ওখানে একটা হোটেল বুকিং করে রাখার কথা। সেখানে পৌঁছে শুনি, ঐ রেস্টহাউসে আর জায়গা নেই। আমাদের ওখানে রাখা সম্ভব না!! শুনে তো আমাদের মাথায় বজ্রপাত। কি আর করা, হাঁটতে হাঁটতে সামনে একটা রিসোর্ট দেখে আমাদের পছন্দ হল, আম্রা ওটায় একটু খোঁজ নিতে গেলাম। তবে, আগে এরকম একটা অভিজ্ঞতা থাকায়, ৩জন গেলাম, বাকিদের বাইরে রেখে গেলাম। পছন্দ হল, কিন্তু, ভাড়া বেশী হলে ওদের মিস কল দিলে, ওরা ফোন করবে, আম্রা তখন বের হয়ে যাব ওরা আরেকটা হোটেল ঠিক করে ফেলেছে, এরকম একটা কিছু বলে, এই ছিল প্ল্যান। কিন্তু, হোটেলে ঢুকেই রুম পছন্দ হল। ভাড়া কম-বেশি একটা কিছু, তবে, সবচেয়ে সুবিধা যেটা হল, যখন খুশি রুম ছাড়া যাবে, এই কথা শুনে রুম নিয়ে নিলাম।
এরপর খাওয়া-দাওয়া করতে বের হয়ে গেলাম।

এত কথা হল। কিন্তু, যে জন্যে কুয়াকাটা যাওয়া, সেই সমুদ্র সৈকতের কথা কই? আসল কথা হইল.. একটা বেড়িবাঁধ মত জায়গা আছে। তার একপাশেই সৈকত, আর অন্যপাশেই হোটেলগুলা!! কাজেই আমাদের হোটেল থেকেই সমুদ্র দেখা যায়। :)
খাওয়ার পরই সমুদ্রদর্শন।

সেখানেও দেখি মোটরসাইকেলের জয়জয়কার!




বি.দ্র: ছবিগুলো আমাদের বন্ধু সাকিবের তোলা।

(ক্রমশ:)
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১০:২৩
৪৫৬ বার পঠিত
২২টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এক্স লইয়া কি করিব

লিখেছেন আনু মোল্লাহ, ২৬ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৫১

যাচ্ছিলাম সেগুনবাগিচা। রিকশাওয়ালার সিট কভারটা খুব চমৎকার। হাতে সেলাইকরা কাঁথা মোড়ানো। সুন্দর নকশা-টকশা করা। নর্মালি এররকম দেখা যায় না। শৈল্পিক একটা ব্যাপার। শুধু সিটকভার দেইখাই তার-সাথে কোন দামাদামি না কইরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইলিশনামা~ ১

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৬ শে নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৭


১৯৮৫ সালে ডক্টর মোকাম্মেল হোসাইন ‘ ব্রিটিশ কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে যেই রিসার্চ পেপারটা( থিসিস – এম এস এর জন্য) জমা দিয়েছিলেন সেটা এখানে মিলবে;
[link|https://open.library.ubc.ca/cIRcle/collections/ubctheses/831/items/1.0096089|Spawning times and early life history of... ...বাকিটুকু পড়ুন

৯০% মুসলমানের এই দেশ? ভারতে কতগুলো মসজিদ ভেঙ্গে মন্দির করা হয়েছে? গতকালও ভারতে মসজিদের পক্ষে থাকায় ৩ জন মুসলমানকে হত্যা করা হয়েছে।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২৬ শে নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৪২

সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিসঅর্ডার | SAD

লিখেছেন আজব লিংকন, ২৬ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৩



শীতকালীন সর্দি-কাশি, জ্বর, হাঁপানি, অ্যালার্জিক রাইনাইটিস, কনজাংকটিভাটিস, নিউমোনিয়া কিংবা খুশকি মতো কমন রোগের কথা আমরা জানি। উইন্টার ডিসঅর্ডার বা শীতকালীন হতাশা নামক রোগের কথা কখনো শুনেছেন? যে ডিসঅর্ডারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

চট্টগ্রাম আদালত চত্বরের একজন প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে লিখছি

লিখেছেন শান্তনু চৌধুরী শান্তু, ২৬ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪৮



আজ চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে যে বিভীষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল তা নানান গুজব ও ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতা এড়াতে প্রকৃত ঘটনাটি নিরপেক্ষভাবে একজন প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে লিখছি।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×