আচ্ছাদিতনগর রাজ্যের রাজা জনগণ মাণিক্য প্রবল যাতনায় ভুগছেন। পেটে ব্যথা। কিন্তু রাজবৈদ্য ব্যথার নিরাময় বা উপশম কিছুই করতে পারছেন না। আপাতত পুল্টিশ চলছে।
জনগণ মাণিক্য এতদিন আস্থা রেখেছিলেন রাজবৈদ্য ইবনে চিচিঙের ওপর। বহু দেশে ঘুরেফিরে নানা দেশের চিকিৎসাবিদ্যা অর্জন করে এসেছেন ইবনে চিচিং। এর আগে তাঁর পাটমহিষীর যাত্রাপালা দেখার একটা রোগ হয়েছিলো, দিন নাই রাত নাই খালি হিন্দি পালা দেখেন প্রাসাদের মঞ্চকক্ষে, ইবনে চিচিং কী একটা ওষুধ খেতে দিলেন, তারপর থেকে রাণী একদম ঠিক, ভোরে উঠে শুধু ধর্মগ্রন্থ আর বিকালে একটু ইতিহাস পড়েন। রাজপুত্র মদনকুমারেরও কী একটা অসুখ হয়েছিলো, শুধু পায়রার পায়ে ছোটছোট চিরকুট বেঁধে ওড়াতেন, এসএমএস না কী বলে ওটাকে, দিনরাত শুধু ঐ কাজ, অধ্যয়নে মন নেই, তাকেও কী একটু ওষুধ দিয়ে পাঠে মনোযোগী করে তুলেছিলেন ইবনে চিচিং। রাজকন্যা সেক্সিকণাও বেলাল্লাপনা শুরু করেছিলেন, বিদঘুটে সব পোশাক আশাক পড়ে হাঁটাহাঁটি করতেন, আর মেদের ভারে নিদারুণ কাবু হয়ে পড়ছিলেন, তাকেও সময় মতো কী একটা ওষুধ দিয়ে সচ্চরিত্রা করে দিয়েছিলেন ইবনে চিচিং। আর এই জনগণ মাণিক্যের রোগের বেলাতেই যতো গোল।
ইবনে চিচিং গম্ভীর মুখে জানালেন, ভোজনজনিত সমস্যা। রাজার ভোজনে অনিয়ম হয়েছে। কুপথ্য অপথ্য হয়েছে। এখন এই রোগ সারাতে দু'জন কবিরাজের সাহায্য লাগবে।
একজন, মান্নু কবিরাজ।
আরেকজন, জল্লু কবিরাজ।
জনগণ মাণিক্য বললেন, তো এই কথাটা এতদিন বললেন না কেন হে সুধী? পেটের ব্যামোতে ভুগলাম নাহক!
ইবনে চিচিং গম্ভীর মুখে বললেন, আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি রাজন। কিন্তু এ আমার সাধ্যের অতীত। এখন আপনার কাজ হবে, মান্নু কবিরাজ আর জল্লু কবিরাজকে ডেকে আপনার সমস্যার সমাধানের অনুরোধ জানানো।
জনগণ মাণিক্য তাঁর দূত সংবাদমাধ্যমকে ডেকে পাঠালেন। সংবাদমাধ্যম বিশ্বস্ত দূত, বহুদিন হলো খেদমৎ করছে রাজার।
কিন্তু মান্নু কবিরাজ বেঁকে বসলেন। বললেন, জল্লুটা একটা সুদখোর ছাগল। ওর সাথে মিলে আমি কোন কাজ করবো না।
জল্লু কবিরাজও অনুরূপ মিষ্টভাষণ করলেন মান্নু কবিরাজের ব্যাপারে। বললেন, মান্নুটা তো কবিরাজ সমাজের কলঙ্ক, ওর সাথে মিলে কোন কাজ আমি করবো না।
জনগণ মাণিক্য এ কথা শুনে প্রচন্ড খেপলেন। বলে কী ব্যাটারা? রাজাজ্ঞা পালন করবে না মানে? পেঁদিয়ে খাল তুলতে তিনি লোক পাঠাবেন মনস্থির করলেন। তবে সংবাদমাধ্যম তাকে নিরস্ত করলো। বললো, রাজন, আবার যাই, গিয়ে বলি।
এবার মান্নু কবিরাজ সুর নরম করলেন। বললেন, কম্বাইন্ড কনসালটেশন? হুম! রাজা জনগণ মাণিক্যের অসুখ? হুম! আচ্ছা, জল্লুকে বোলো ও যাতে আমাকে একটা চিঠি দেয়।
জল্লু কবিরাজ সব শুনে বললেন, কম্বাইন্ড কনসালটেশন? ঞ! রাজা জনগণ মাণিক্যের অসুখ? ঞ! আচ্ছা, মান্নুকে বোলো ও যাতে আমাকে একটা চিঠি দেয়।
জনগণ মাণিক্য কাহিনী শুনে খেপলেন আরো। বলে, চিঠি লাগবে কেন?
সংবাদমাধ্যম বললো, হুজুর, চিঠি না পেলে ওনারা বসতে পারবেন না এক সাথে।
জনগণ মাণিক্য পেটের যন্ত্রণায় কোঁকাতে কোঁকাতে বললেন, তো চিঠি লেখে না কেন?
সংবাদমাধ্যম বললেন, দু'জনেই বেঁকে বসেছে অন্যজনকে আগে লিখতে হবে।
জনগণ মাণিক্য চটেমটে বললেন, দু'টোকেই শূলে চড়াবো! এয়ার্কি দেয়ার জায়গা পায় না!
সংবাদমাধ্যম বললো, হুজুর, আবার একটু চেষ্টা করি।
এবার মান্নু কবিরাজ বললো, আচ্ছা দেখি, জল্লু আমাকে ফোন করুক।
জল্লু কবিরাজ বললো, মান্নুটা ফোন করুক আগে, তারপর দেখি কী হয়।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এখনও দুই কবিরাজ একসাথে বসতে পারেননি। জনগণ মাণিক্য প্রাসাদে তাঁর কামরায় প্রায় প্রসবযাতনার কাছাকাছি ব্যথা নিয়ে ছটফট করছেন আর বিড়বিড় করছেন শৈশবে শেখা চন্ডালদের ভাষায়, আগামীকালের মধ্যে যদি ঐ দুই বাইনচোদ আমার চিকিৎসা করতে না আসে, তাহলে একেবারে ঝাড়ে বংশে মেরে শেষ করবো শালাদের, দুই ফুট কবিরাজি চুৎমারানিদের পুটকি দিয়ে ঢুকায় দিবো ... নাটকার জানা ... চিঠি চালাও ... ফোন চালাও ... মশকরা চোদাও ... আমার সাথে, রাজা জনগণ মাণিক্যের সাথে ...?