_______________________________________
তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাই, কিন্তু হরতাল চাই না।
--------------------------------
একবিংশ শতাব্দির এই সময়ে যখন জীবন যন্ত্রণায় সমগ্র পৃথিবীর মানুষ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে নিজেকে সোপে দিয়েছে, পিছিয়ে পড়ার ভয়ে জীবনের গতি বাড়িয়ে চলেছে ঠিক সে সমেয়ে আমরা বাংলাদেশের মানুষ বাধ্য হচ্ছি দিনের পর দিন হরতালের মতো এক অভিশপ্ত রাজনৈতিক কর্মসূচির হাতে জিম্মি হয়ে থাকতে।
আমাকে ভুল বুঝবেন না। আমি অবশ্যই আপনাদের দাবিকে এদেশের অধিকাংশ মানুষের দাবি মনে করি এবং মা্নুষের ভোটের অধিকার রক্ষা করতে হলে অবশ্যই তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে বলে আমি মনে করি। কিন্তু দিনের পর দিন হরতাল পালন করতে আমাদের কি কি অসুবিধা হচ্ছে তা একটু সহানুভুতিপূর্ণ মোন নিয়ে শুনুনঃ
• প্রতিদিন মানুষ মরছে, মানুষ পুড়ছে, এটা চলতে পারেনা। যখন আপনার ক্ষমতা নেই এটা বন্ধ করার, তাহলে হরতাল বন্ধ করুন। এটার ক্ষমতা নিশ্চয়ই আপনার আছে। আমরা আমাদের জীবনের বিনিময়ে কিছু চাই না।
• একজন দিন মজুর যাকে দিনে আয় করে ঐ দিনের খাবার খেতে হয় সে কিভাবে এই প্রায় লাগাতার হরতালের ভার বহন করবে?
• একজন সাধারন চাকরিজীবী যাকে অফিসে যেতেই হবে, সে কিভাবে ৮-১০ কিমি রাস্তা পার হয়ে অফিসে আসা-যাওয়া করবে? করতে পারলেও প্রতিদিন ২০০-৩০০ টাকা খরচ হয়। কে তাকে এই বাড়তি টাকা দেবে?
• একজন শিক্ষার্থী কিভাবে তাঁর শিক্ষাবর্ষ পিছিয়ে যাওয়ার ক্ষতি পুষিয়ে নেবে? একজন স্কুল শিক্ষার্থীর স্কুল বন্ধ থাকলেও, কোচিং ক্লাশের জন্য তাকে বাসা থেকে বের হতে হবে। কে দেবে তার নিরাপত্তা?
• নিকটজনকে হাসপাতালে নিতে হবে। কিভাবে সম্ভব? যদি কোন গাড়ি পাওয়াও যায়, কে দেবে নিরাপত্তা?
• খুদ্র ব্যবসায়ীরা কিভাবে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নেবে?
সমস্যা আরো আছে। জীবন এখন আর ২০-৩০ বছর আগের মতো নেই। বিবিধ জটিলতায় আমরা নিমজ্জিত। ছোট্ট একটি সমস্যাও মোকাবিলা করা এখন অনেক কঠিন। অনেক আগে থেকে পরিকল্পনা করতে হয়, ব্যবস্থা করতে হয়।
____________________________________________________________________
হানাহানি্ ক্যাওয়াসের আন্দোলন নয়, নিরব বিল্পব করুন, জনগনের উপর আস্থা রাখুন।
--------------------------------------------------------
এখন অনেক সুবিধাও আছে। এখন সবার হাতে মোবাইল ফোন আছে, অনেকের হাতে ইন্টারনেট আছে। মানুষ এখন অনেক সচেতন। রাজনিতিকদের কথার চাল, ফাকি-ঝুকি বুঝতে কারোই অসুবিধা হয় না। এখন মানুষ হরতাল, সমাবেশ, মিছিল, শো-ডাউনের রাজনিতিকে ঘৃণা করে। এগুলোকে জীবনের জন্য যন্ত্রণা হিসেবেই দেখে। কাজেই পুরনো হয়ে যাওয়া এবং যন্ত্রণাময় এইসব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বাদ দিয়ে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া, ইন্টারনেট, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জনগনের কাছে পৌঁছবার ব্যবস্থা করুন। শুরু করুন নতুন রাজনিতি। জনগনের উপর আস্থা রাখুন। জনগন আপনার পাশে আছে। জনগনের অসুবিধা সৃষ্টি করে জনগন থেকে দূরে সরে যাবেন না।
_______________________________________
তত্ত্বাবধায়ক চাই তত্ত্বাবধায়ক, অন্য কিছু চাই না।
--------------------------------
আপনাদের গালভরা বুলি, বোলচাল, ছল-চাতুরি সবই জনগন বোঝে। ধানাই-পানাই করে কাজ হবে না। জোর করে ক্ষমতায় থাকা চলবে না। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবিলম্বে নির্বাচন দিন। এটাই সময়ের দাবি। মানলেন তো ভালো। না মানলে, পস্তাবেন।আসছে নিরব বিল্পব।