বাবুটা মোর মানুষ হবে,
কবেই বা সে চাকুরি পাবে ?
সেই ভাবনাই ভাবছি বসে।
দিনে দিনে মোর বাড়ছে দেনা,
কলেজ ফি আর স্বপ্ন মাঝে ।
কত স্বপ্ন আঁকছি হেঁসে ।
ভাবছি আমি নিরব রাতে,
দায়ভার আর দেনার চাপে ;
মান সম্মান খোঁয়াই যাবে।
সুনিল বাবুর কথার ঝাঁজে,
হাজার বিশেক টাকার দায়ে,
ভিটে মাটি বিক্রি করে,
মুখের উপর মারবো ছুঁড়ে।
না খেয়ে পরে সবকটি টাকা,
খোকাকে দিলাম পড়ার কাজে।
নিঃশ্ব আমি ক্লান্ত অনেক,
সব হারিয়ে অবসাদে আজ ;
তাকিয়ে আছি খোকার পানে।
খোকার আরো বাকি আছে,
বছর দু'য়েক ডিগ্রি পেতে।
বড্ড অলস খোকা আমার,
জন্ম থেকেই আরামপ্রিয়।
কি করে আজ বলি তাকে ?
তোর বাবা আর পারছে না রে....!
লেখাপড়ার খরছা দিতে।
আমার কথার বাহানা দেখে,
চাঁদ মুখ আজ বুঝেই গেছে;
অকর্মাতে জন্ম তাহার।
রাত্তি ভরে খোকা আমার,
রিক্সা চালায় অনায়াসে..!
সকাল হলেই ছুটে চলে
বিদ্যাপিটের বিদ্যালোকে।
ঘাম ঝরা সব টাকা পয়সা,
বিলিয়ে দিলো পড়ার কাজে।
দু'টা বছর কান্না আমার,
জন্ম দিলাম কেনই তাকে ?
বেঁচে আছি কোনবা পাপে।
সেই দিনের সেই ছোট্ট মানিক,
কবেই বা সে বড় হলো ?
জীবন পাপের মস্ত বোঝা,
কোন ভরসায় কাধে নিলো ?
ডিগ্রি নিয়ে সোনা আমার,
চাকুরী খুঁজে পাগল পারা,
দেশের যে হাল চলছে এখন,
ডিগ্রিধারী কেইবা খুঁজে?
মামু কিংবা ঘোষের জুরে,
চাকুরী হবে অনায়াসে।
স্বপ্ন ভেংগে কত যে বেকার,
ফুটপাতে বাস হকার সেজে।
কেউবা ছুটে জীবন নিয়ে,
অন্ন খুঁজে অন্য দেশে।
আমার খোকা বড্ড জেদি,
রিক্সা চালায় নিরবদি।
ডিগ্রিধারী রিক্সাওয়ালা,
দেখবি যদি আয় চলে আয়,
আমার ঘরের মানিক সোনায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:০৩