' ছোট বেলায় গল্প পাগল ছিলাম।প্রতিদিন একটা
গল্প না শুনলে ঘুম আসত না।বাবার গলা জড়িয়ে
ধরে একটা গল্প না শুনলে ঘুম কিছুতেই আসত না।
এখনো মনে আছে একদিন হঠাৎ এক বুড়ি আর এক
লোকের গল্প শুনাতে লাগলেন।এক বুড়ি ছিল যে
একজন লোকের যাওয়ার পথে প্রতিদিন কাটা
দিয়ে রাখত।আর লোকটা ওই কাটার উপর দিয়েই
যেত।আর দূরে দাঁড়িয়ে থাকা বুড়িটি দেখে
হাসত।তো একদিন লোকটি যাওয়ার পথে কাটা
দেখতে না পেয়ে বুড়ির খোজ নিতে লাগল।পরে
জানতে পারল বুড়ি অসুস্থ।লোকটি বুড়ির বাড়ি
গিয়ে তার সেবা করে সুস্থ করে তুলল।তারপর
বুড়িটি লোকটির ধর্ম গ্রহন করে।
.
বাবা তারপর বলেছিল যে ভালবাসা দিয়ে
সবকিছু জয় করা যায়।মানি এটা গল্পের মোরাল
ছিল।তারপর গল্পটা বইয়ে খুজে পেয়েছিলাম।
গল্পটা মনযোগ দিয়ে পড়ে বাবার বাদ দেয়া
ফাঁকফোকর পূরন করে মনের সাধ মিটাইলাম।
তারপর জানতে পারলাম যার ঘটনা পরেছি তিনি
একজন মহামানব।জিবনের প্রথমই একজন
মহামানবের গল্প পড়ে জিবন শুরু করেছিলাম।যার
কারনে আমি এখন এই পর্যায়ে আছি।তারপর ধাপে
ধাপে আরো অনেক মহামানবের ঘটনা পরে
বাগানের মতো জিবনকে সাজাতে শুরু করলাম।এই
পর্যন্ত আসলাম।অনেক মহামানবের গল্প পড়ে
তাদের গুনগুলি আয়ত্ব করার চেষ্টা করেছি।কিন্তু
দুঃখের বিষয় আমাদের পরের প্রজন্ম এইসব
মহামানবের গুন বা শিক্ষনীয় ঘটনা সম্পর্কে
অজ্ঞ থাকবে।তারা তাদের জিবন শুরুই করবে
নাস্তিক্যবাদ দিয়ে।তাদের মা-বাবারা এই গল্প
বলবে না।তাদের মা-বাবারা বলবে তাসলিমা
নাসরিন আর ইমরান এইচ সরকারের কথা।গল্পটা
তখন এমন হবেঃ শোন মা/বাবা এই দেশে বীর
ছিল যে শাহবাগের চত্বরে কাজকাম না
থাকলেই বসে পড়ত মানুষকে হেনস্তা করতে।আর
বাবারা বলে বেড়াবেঃ শোন মা/বাবা এই
দেশে এক মহান নারী ছিল যার উলঙতা খুব প্রিয়
ছিল।
.
এই গল্পগুলা শুনে যখন স্কুলে উঠবে আর বই পাবে
তখনও কোন মহামানবের গল্প থাকবে না।
সেখানেও থাকবে নাস্তিক্যবাদ কথা।যাতে
শিশুরা ছোটবেলা থেকেই ধর্ম বিরোধী হয়ে
ওঠে।সেদিন লক্ষ্য করলাম আমার ছোট বোন
মৌলিক অধিকারের ভিতর পড়ছে "মুক্ত চিন্তার
অধিকার"।খেয়াল করে দেখলাম মত প্রকাশের
অধিকার বাদ দিয়ে এখন দেয়া হয়েছে মুক্ত
চিন্তার অধিকার।এই আমাদের বর্তমানের
শিক্ষা ব্যবস্থার পরিস্থিতি।যেখানে প্রতি
কদমে বাচ্চাদের নাস্তিকতার শিক্ষা দেয়া
হচ্ছে।ছোটবেলা থেকেই যদি এইসব চিন্তা
মাথায় ঢুকানো হয় তাহলে তাদের মাথায় সুবুদ্ধি
আসবে কোথা থেকে?১ম শ্রেনী থেকে মহানবী
(সঃ) এর সংক্ষিপ্ত জীবনি নেই।২য় ৩য় শ্রেনী
থেকে হযরত ওমর ফারুক (রাঃ) হযরত আবু বকর
সিদ্দিক (রঃ) এর শিক্ষনীয় ঘটনা উঠিয়ে নেয়া
হলো আমাদের কোন খবর নেই।আমাদের
বাচ্চাদের শিক্ষা দেয়া হচ্ছেঃ "আল্লাহ বা
দেব দেবীর নামে পশু জবাই করাকে কোরবানি
বলে।তারপরেও আমরা চুপ।ইসলাম শিক্ষা বইকে
"ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা" বানিয়ে দেয়া হলো
তারপরেও আমরা চুপ।ইসলাম শিক্ষাকে অপশনাল
সাবজেক্ট বানিয়ে দেয়া হচ্ছে তারপরেও আমরা
চুপ।ইসলামকে হেনস্তা করা হচ্ছে আর আপনি চুপ?
আর ভালই তো ফুটিয়ে বেড়ান "আমি মুসলিম"
বলে।ঠিক আছে আপনি মুসলিম।কিন্তু আপনার
ছেলে বা মেয়ে কি মুসলিম থাকবে?নিশ্চই না।
কারন এইসব হওয়ার পর কেও মুসলিম থাকতে পারে
আমার মনে হয় না।কারন ছোট থেকেই তো
আল্লাহ বিরোধী আর রাসূলের বিরোধীতার
শিক্ষা পাচ্ছে তাহলে আপনার ছেলে/মেয়ে
মুসলিম হবে কিভাবে?আপনার ছেলে/মেয়ে
নাস্তিকতার শিক্ষা পাচ্ছে আর আপনি দোয়া
করছেন "আমার ছেলে/আল্লাহ ওয়ালা হবে"।
ভালই তো।আপনার ঘরে আগুন লেগেছে আর আপনি
পানি না ঢেলে সামনে নিয়ে দাড়িয়ে বলছেন
নিভে যাবে।আরে আগুন নিভাতে হলে তো
পানি ঢালতে হবে রে ভাই।তেমনি আল্লাহ
ওয়ালা বানাতে হলে আল্লাহ ও তার রাসূলের
ভালবাসার শিক্ষা দিতে হবে।
.
ইসলাম আপনার দাদার ধর্ম ছিলো যার কারনে
ইসলামিক শিক্ষা পেয়ে আপনার বাবা মুসলিম
হয়েছে।আপনার বাবা ইসলামিক শিক্ষা পেয়ে
আপনি মুসলিম হয়েছেন।কিন্তু আফসোসের বিষয়
হলো আপনার ছেলে মেয়ে আর মুসলিম থাকবে
না।কারন আপনি ইসলামিক বিষয়ে উদাসীন।
আপনার ছেলে মেয়ে ইসলামের ব্যাপারে কতটা
শিক্ষা পাচ্ছে সে বিষয়ে আপনার মাথাব্যথা
নেই।জদি এমন হয়ে থাকে তাহলে আপনি বাবা/
মা হিসেবে ব্যর্থ।কারন "যে সব রেখে গেল কিন্তু
ইসলাম রাখতে পারল না সে যেন কিছুই রাখতে
পারল না।নাস্তিক্যবাদ এই শিক্ষাব্যবস্থা
পরবর্তী প্রজন্মকে হুমকির মুখে রাখছে।কারন
খেয়াল করলে দেখবেন একটা ছোট গাছ যখন বড়
হতে থাকে তখন তার সাথে একটা লাঠি দিয়ে
দেয় যাতে ওটা হেলে না পড়ে পড়ে।আমাদের
ক্ষেত্রে ওই লাঠিটা ছিল ইসলামিক জ্ঞান।
কিন্তু আমাদের পরের প্রজন্ম থেকে এই লাঠিটা
সড়িয়ে নেয়া হচ্ছে।যাতে করে তারা আর
সোজা হয়ে বেড়ে উঠবে না।তাই এই
নাস্তিক্যবাদ শিক্ষা ব্যবস্থা করা হচ্ছে যাতে
ছোট থেকেই ওরা আল্লাহ বিরোধী হয়ে ওঠে।
.
ভাবতেই অবাক লাগে মুসলিমের বাচ্চা নাকি
তাদের মহামানবের গল্প পড়ে গড়ে উঠতে পারবে
না।আমাদের পরের মুসলিম প্রজন্ম পড়বে কৃষ্ণ
লীলা,বুদ্ধদেবের কথা।হাই স্কুলে উঠে পড়বে চটি
গল্প।ভালোই তো কত এগিয়ে যাচ্ছে আধুনিক
শিক্ষা ব্যবস্থা।এই দেশে চৌদ্দ কোটি ছিয়াশি
লক্ষ্য সাত হাজার মানুষ মুসলিম আর তাদের ধর্ম
ইসলাম।এত বড় একটা জনসংখ্যার মুসলিম
মানুষদের বাচ্চারা বেড়ে ওঠবে নাস্তিক্যবাদ
শিক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে।জিনিসটা এমন লাগছে
যে আমি আমার গোত্রের মানুষদের জিবন
তালিকা রেখে অন্য পশুর আচরন নিজের করে
নিচ্ছি।এখন অনেক সময় আছে এই নাস্তিক্যবাদ
শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।নয়ত
আপনার ছেলে বা মেয়েই হবে নাস্তিক।আর ওর
প্রতেকটা কৃতকর্ম আপনার উপরেই গচ্ছিত হবে।
.
লেখায়- Muhammad Arju (পথহীন মুসাফির)
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মে, ২০১৬ দুপুর ২:৩৫