“ফিরে দেখা— (হাসপাতালে হাজারো দূর্নীতির অভিযোগ বনাম বর্তমানে করোনা মোকাবিলায় নগ্ন বাস্তবতা)”
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের একটি পর্দার দাম ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, একটি অক্সিজেন জেনারেটিং প্ল্যান্ট কেনার খরচ ৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা, একটি ভ্যাকুয়াম প্ল্যান্ট ৮৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, একটি বিএইইস মনিটরিং প্ল্যান্ট ২৩ লাখ ৭৫ হাজার, তিনটি ডিজিটাল ব্লাড প্রেশার মেশিন ৩০ লাখ ৭৫ হাজার, একটি হেড কার্ডিয়াক স্টেথিসকোপের দাম ১ লাখ ১২ হাজার টাকা দেখানো হয়।
[তথ্যসূত্রঃ হাসপাতালে ‘পর্দা কাণ্ডে’ ৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা — প্রথম আলো]
হবিগঞ্জের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে ৪২ হাজার টাকার ল্যাপটপ কেনা হয় ১ লাখ ৪৮ হাজার টাকায়, ৬০ হাজার টাকার কালার প্রিন্টারের দাম পড়েছে ২ লাখ ৪৮ হাজার টাকা, ৩৯ হাজার টাকার রেফ্রিজারেটর ৮৫ হাজার টাকায় কেনা হয়, এমনকি মানবদেহের মেডিকেল চার্ট যার বাজার দর ৫০০ টাকা হলেও কেনা হয় ৭ হাজার টাকায়।
[তথ্যসূত্রঃ সাড়ে ১৫ কোটি টাকার কেনায় বড় ‘অনিয়ম’ — প্রথম আলো]
রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২টি ওটি লাইট কেনা হয় ৭৯ লাখ ৮৫ হাজার টাকা দরে, অথচ সরকারি ‘প্রাইস গাইডলাইনে’ ১টি ওটি লাইটের সর্বোচ্চ দাম উল্লেখ করা ১০ লাখ ৬৬ হাজার ৪০০ টাকা। একটি কোবলেশন মেশিন কেনা হয়েছে ৯৬ লাখ টাকায়, আরেকটি ২৫ লাখ ৬৪ হাজার টাকায়। কিন্তু সরকারি প্রাইস গাইডের (সিঅ্যান্ডএফ-এফওবিসহ) দাম ধরা আছে ৬ লাখ ৩৯ হাজার ৩০০ টাকা।
[তথ্যসূত্রঃ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল: ছয় লাখ টাকার মেশিন ৯৬ লাখে ক্রয় — যুগান্তর]
বন্দর নগরী চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লায় অবস্থিত ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের বিভিন্ন আইটেমের চিকিৎসা সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি ও ওষুধপত্র কেনার ক্ষেত্রে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়। দশ-বারো হাজার টাকা দামের অটোস্কোপ মেশিন ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকায়, ১৫ হাজার টাকার ব্লাড ওয়ার্মার মেশিন ৯ লাখ ৩২ হাজার টাকায়, ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা দামের এমআরআই মেশিন ৯ কোটি ৯৫ লাখ ৫০ হাজার টাকায় কিনে সংশ্লিষ্ট ক্রয়কমিটি। সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত বিধি-বিধান অমান্য করে দ্বিগুণ থেকে ৫০ গুণ বেশী দামে কেনা হয়েছিলল। কোন কোন ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনা হয়েছে বলেও তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
[তথ্যসূত্রঃ হাসপাতালে দুর্নীতির চিত্র বদলায়নি — দৈনিক ইনকিলাব]
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বরাদ্দ থেকে যন্ত্রপাতি কেনার নামে ১৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা লুটপাট করেছেন আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. তাপস কুমার সরকার। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সচিব মহোদয় ৩০ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়।
এমন হাজারো অভিযোগ আছে আমাদের হাসপাতাল গুলোর বিরুদ্ধে। এই দূর্নীতি ও অনিয়মেরর কারনেই দেখছি আজকের করোনা মোকাবিলায় নগ্ন বাস্তবতা।
এরপরেও কেউ যদি বলেন আমীন বলা যাবে না, তাহলে আমার কাছে একটা জোকস আছে সোভিয়েত রাশিয়ারঃ
মফস্বল শহরে পার্টি মিটিং। নেতা বক্তৃতা দিচ্ছেন-
কমরেডগন...দেখুন আমাদের প্রত্যেকের জীবনে কমিউনিজম কতো পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। উদাহরণ তো হাতের কাছেই আছে,
এই ধরুন সামনের সারিতে বসা মারিয়া। মুর্খ নারী ছিল। তার একটিই মাত্র জামা ছিল, কোনো জুতা ছিল না। আজ তার পায়ে জুতা আছে।
ধরুন ইভানভ। গ্রামের সবচেয়ে গরীব ছিল। তার জমি ছিল না, বলদ ছিল না। আজ সে ট্রাক্টর চালায়, তার দু জোড়া জুতা।
ধরুন সার্গেই। কী জীবন ছিল তার! রাস্তায় রাস্তায় ঘুরত। প্রচণ্ড তুষারপাতের রাতেও তাকে কেউ আশ্রয় দিত না, সব চুরি করে নিয়ে
যাবে এই ভয়ে। সেই সার্গেই চোরা দেখুন আজ কতো বদলে গেছে। আজ সে পার্টির লোকাল সেক্রেটারি...!!
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:৩৬