ঘটনা সবাই জানেন , এদেশে বিমানবন্দরে নিরাপত্তা ব্যাবস্থা খুবই দুর্বল তাই বাংলাদেশ থেকে ইংল্যান্ড এ সরাসরি কার্গো চলাচল বন্দের সিধান্ত জানিয়ে গত ৮ মার্চ বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি লেখেন। মজার ব্যাপার হল ঐ চিঠিতে তিনি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য শেখ হাসিনাকে 'নিরাপত্তা পরামর্শক' নিয়োগ দেয়ার নসিহত করেন। আসলে বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী বলে কথা ,সরাসরিতো বলতে পারেনা আমার দেশের ওমুক কোম্পানিকে দায়িত্ব দিলে সব ঠিক হয়ে যাবে। তো বাকি টুকু তিনি চেলাদের দিয়ে সারলেন। গতকাল বৃটিশ নিরাপত্তা প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালায়ে দেখা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বৃটিশ হাইকমিশনার বলেছেন ''তিনি চাইলে বৃটেন ভাল কিছু নিরাপত্তা প্রতিস্ঠানের নাম দিতে পারে '। চৌকোস প্রধানমন্ত্রীর বোধহয় বুঝতে অসুবিধা হয়নি তাদের মুল চাওয়া নিয়ে, তাই ততক্ষনাত নাম জানতে চাইলে তাহারা গড়গড় করে , জিএসএ, রেডলাইন এন্ড কন্ট্রোল রিস্কস, রসটাটা পিলগরিমস আ্যন্ড এডাম স্মিথ ইন্টারন্যশনাল এবং ওয়েস্ট মিনস্টার এভিয়েশন সিকিউরিটি সার্ভিসেস নামে চারটি বৃটিশ কোম্পানির নাম বলে।
এবার কি আর করা, বাংলাদেশের ইউরোপে সবজি সহ রপ্তানীর বিরাট বাজার তাই কার্গো সার্ভিস বন্ধ হলে ব্যবসা লটে উঠবে, তাছাড়া দেশের ইমেজ সংকটের সুযোগ নিয়ে আমেরিকা সহ অন্যরাও চান্স নিবে। অতএব সম্যসাটা অল্পতে মিটিয়ে ফেলার জন্য সরকার এখন চিন্তা ভাবনা করছে দেশের বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় , ক্যমরনের পরামর্শ অনুযায়ী তাদের পছন্দের কোম্পানিকে দায়িত্ব দেয়ার।তাই এ যাত্রায় মনে হয় রক্ষা পাওয়া যাচ্ছে যুক্তরাজ্যের 'নিরাপত্তা ব্যবসা' র ঠিকা দিয়ে।
আমার মনে হইতেছে অস্ট্রেলিয়াও এরকম কিছু পেলে এদেশে ক্রিকেট টিম পাঠাবে। তাই বিসিবি শেরে বাংলা স্টেডিয়াম সহ টুর্নামেন্টের নিরাপত্তার ভার অস্ট্রেলিয়ান কোম্পানিকে দেয়ার অফার দিতে পারে।
বিষয়টা নিয়ে হাসিও পায় এই ভেবে যে, যে সিকিউরিটি গার্ডের নিয়োগের জন্য বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী তদবির করে বাংলাদেশর প্রধানমন্ত্রির কাছে। আবার দু:খ লাগে এই ভেবে যে এখনও আমরা অসহায়ের মত ওদের অনুরোধের ঢেকি গিলছি।
আসলে বর্তমান বিশ্বের ভুরাজনীতি সহ যাবতীয় সবকিছু নিয়ন্ত্রীত হচ্ছে অর্থনৈতিক স্বার্থের নিরিক্ষে। আর বৃটিশ বেনিয়া ইস্ট ইন্ডিয়ান রা তো কয়েকশ বছর আগেই আমাদের এখানে ব্যবসার নামে লুটপাট করে গেছে , এখন এরা আমাদের ঘামের বিনিময়ে অর্জিত 'কাচা টাকার' ভাগ নিতে চায় 'নিরাপত্তা ব্যবসার' নামে। হয়তো নিতান্ত বাধ্য হয়েই আমাদেরকেও ওদের চাহিদা পুরোন করতে হবে আরো কিছুদিন। তবে আমি সেই দিনের অপেক্ষায় যেদিন ওদের এইসব উটকো আব্দারের দাতভাংগা জবাব দিতে পরাবো , ঠিক যেমনটা দেয়া গেছে পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যংক ও আমেরিকাকে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:১৬