বর্তমান বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার এক উতকৃস্ট প্রজনন ভুমিতে পরিনত হয়েছে। যার শুরু হয়েছিল ১৯৯৭ সালে এটিএন বাংলার মাধ্যমে, এরপর ইটিভি, চ্যানেল আই ভুমিস্ট হ্ওয়ার কিছুদিন পর ২০০৪-২০০৬ এর প্রজনন মৌসুমে একসাথে ১২/১৪ টি চ্যানেল প্রসবের ধকল জাতি সামলাতে না সামলাতেই ২০০৯ থেকে শুরু হয় নিয়ন্ত্রনহীন , বিরতীহিন প্রজনন, যার ফলে ২০১৫ পর্যন্ত ৪০ পেরিয়ে গেছে। এই নিয়ন্ত্রনহীন প্রজননের মুল কারন হল, দেশে অবৈধ সম্পদশালি রাজনিতীবিদ ও কর্পরেট হাউজের সম্পদ টিকিয়ে রাখতে বা স্বার্থ রক্ষায় দরকারি প্রপাগান্ডা চালানো আর সময় সুযোগ মত আখের গোছানো। ব্যাপরটা এখন এমনযে ;আগে বড়লোকেরা বাড়ি পাহারা দিতে কুত্তা পালতো এখন মিডিয়া পালে।তাই এখন যেকোন কর্পরেট হাউজ, রাজনিতীবিদ, সিনিয়ার সাংবাদিক মানেই একটা টিভি চ্যানেল থাকতে হবে।অবস্থা এমন যে সরকার বা সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের এখনই 'জন্মনিয়ন্ত্রন' পদ্ধতির মত স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদি 'পরিবার পরিক্লপনা'; ব্যবস্থা গ্রহন না করলে , অদুর ভবিষতে দেশে শুধু টিভি চ্যানেল আর সাংবাদিক থাকবে কিন্তু তা দেখার মত দর্শক খুজে পাওয়া যাবে না।যার কিছু নমুনা ইতিমধ্যে দেখা দিয়েছে, আগে যখন ৪/৫ টা টিভি চ্যানেল ছিল তখন দেশী পন্যের বিজ্ঞাপন দেশি চ্যনেলেই পেত, এখন ৪০ টা চ্যানেল কিন্তু বিজ্ঞাপনের বাজার বিদেশী চ্যানেল ভাগ বসিয়েছে।
তবে এটা ঠিক ,জন্ম যখন,যেভাবেই হোক এসব মিডিয়া আমাদের সংস্কৃতি,সচেতনতাকে সমৃদ্ধ করেছে কিছুটা, সেই সাথে বিপুল সংখক মানুষের রুটি রুজির অবল্মবন হয়েছে। ।কিন্তু নিয়ন্ত্রনহহিন এই প্রজননে ,আমাদের সাংবাদিকদের যথাযথ প্রশিক্ষন বা পেশাদারিত্বের অভাবে উটকো উপদ্রব বা উতপাত ও সহ্য করতে হয়েছে জাতিকে।
যেমন ধরুন , জাতি ইভা রহমানের মত জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পির পাশাপাশি , মাহফুযুর রহমানের মত আবাল সিংগার কাম সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব পেয়েছে, যার কাম হল বিভিন্ন লোকাল প্রোগ্রামে লাইভ টেলিকস্টের নামে নিজের বউ আর নিজের প্রচারনা চালানো।
কোন কোন মিডিয়া মালিক তো নিজের পারিবারিক মিলাদ বা পারলে ছেলে বা নাতির খাতনার খবর লাইভ টেলিকাস্ট করে।
এছাড়া রানা পাল্জায় চাপা পড়া মুর্মষ মানুষের , কিংবা দুর্ঘটনায় নিহত বা নিখোজ ব্যক্তির নিকট আত্মীয়ের অনুভুতি জানার মহান কাজের রেকর্ড আমাদের সাংবাদিকরা করেছে।
আবার সরকার বিরোধীতা করতে গিয়ে বিদেশী কুটনীতিকদের দিয়ে জোর করে দেশের বিরুদ্ধে বা দেশীয় গুরত্বপুর্ন সংস্থার বিরুদ্ধে কিছু বলানোর ক্ষেত্রে এরা যেমন সিদ্ধ হস্ত, আবার সরকারের আনুকল্য পেতে দালালিকে রীতিমত শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে।
তবে আমাদের আবাল সাংবাদিকদের সর্বকালের সেরা সাফল্য হল , গত বছরের ৫ জানুয়ারীতে অপ্রস্তুত খালেদা জিয়ার মুখ থেকে অনিদিষ্টকালের অবরোধ কর্মসুচি আদায় করে নেয়া, যা কাগজে কলমে এখনও চলছে , এবং আশা করা যায় কেয়ামত পর্যন্ত চলবে।তাই এবার বছর ঘুরে আবার যখন ৫ জানুয়ারী এলো তখন মনে প্রশ্ন জাগে , এবার সাংবাদিকদের কর্মসুচি কি, গতবার তো মোটামুটি তিনমাস একরকম দুর্যোগের মধ্যে ছিল জাতি, এবার আপনারা কি কর্মসুচি আদায় করবেন সরকার বা বিএনপির কাছ থেকে ? জাতি আপনাদের ক্যারিশমা দেখার অপেক্ষায় আছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:০৮