(২য় পর্ব)
আমি এখানে বাটিক-বুটিকের যাবতীয় খুঁটি-নাটি প্রাথমিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে চেষ্টা করেছি।
বর্ণিত প্র্যাক্টিক্যাল কাজ গুলো নিজ দায়িত্বে করে নিবেন। আমাকে প্রয়োজন হলে বাসায় ছোলার ডাল, ভেড়ার গোস্ত আর পোলাও করে খবর দিবেন।
ভ্যাট, টাই-ডাই (সলিওবল)
রঙ ১%
সালফিউরিক এ্যসিড ২%
পানি ৯৭%
কার্যপ্রণালীঃ প্রথমে ছোট একটি পাত্রে ১% রঙ পানিতে গুলে প্লাস্টিক অথবা মাটির পাত্রে কাপড়ের আন্দাজ মতো পানি নিয়ে রঙটি ঢেলে দিন। আবার ঐরকম আর একটা পাত্রে ঠান্ডা পানি নিয়ে সালফিউরিক এ্যসিডে মেশান। প্রথমে কাপড়টি রঙ -এর পাত্রে ডুবান ৫ মিনিট পর এ্যসিডের পাত্রে ডুবান। এভাবে ৫ মিনিট করে ৩ বার রঙ -এ ৩ বার এ্যসিডের পানিতে ডুবানোর পর পরিস্কার পানিতে ধুয়ে ঠান্ডায় শুকাতে হবে। তাহলে আমরা কাঙ্খিত রঙটি পাওয়া যাবে।
ভ্যাট (ইনসলিওবল)
কাপড়ের গজ প্রতি শতকরা হিসাব
রঙ ১% (৩ চা চামচ)
হাইড্রোজ ৩% (৯ চা চামচ)
কস্টিক সোডা ১% (৩ চা চামচ)
পানি ৯৫% (২৮৫ চা চামচ- আনুমানিক)
কার্যপ্রণালীঃ প্রথমে এ্যালুমিনিয়াম বা স্টীলের পাত্রে কাপড়ের আন্দাজে পরিমান মতো পানি নিয়ে চুলায় জ্বাল দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ১% রঙ, ৩ % হাইড্রোজ ও ১% কস্টিক সোডা পর পর ঐ ফুটন্ত পানিতে দিয়ে ভালো করে নাড়তে হবে। কস্টিক সোডা দে’য়ার সময় সাবধান। পানি উৎলে উঠবে। এবার ফুটন্ত মিশ্রিত রঙ ও কেমিক্যালস এ কাপড়টি ডুবিয়ে ভালো করে নাড়তে হবে। ১০-১৫ মিনিট সেদ্ধ করার পর কাপড়টি উঠিয়ে ঠান্ডা করে ঠান্ডা পানিতে ভালো করে কেঁচে ধুয়ে ছায়ায় শুকাতে হবে।
রঙ এর মিশ্রন (ভ্যাট, টাই ডাই)
১। লাল + কমলা= ইট রঙ
২। লাল + বেগুনী= আলতা
৩। হলুদ + সবুজ= বাতাবী নেবু
৪। হলুদ + কমলা= খাঁটি সোনা
৫। নীল + সবুজ= ময়ূর কাঁঠি
৬। নীল + বেগুনী= ধূসর রঙ।
ভ্যাট রঙ এর হিসাব
(বয়েল কাপড়) যে কোন রঙ ১ তোলা / ১ টা শাড়ী
(মোটা কাপড়) যে কোন রঙ ১.৫ তোলা / ১ টা শাড়ী
হাইড্রোজ ৪ তোলা / ১ টা শাড়ী
কস্টিক সোডা ৪ তোলা / ১ টা শাড়ী
বাটিকে মোম ও অন্যান্য কেমিক্যালস এর পরিমান-
মোম সাদা (প্যারাফাইন) ২৫০ গ্রাম
মোম লাল (বী ওরিস) ২০০ গ্রাম
রজন ৫০ গ্রাম
ঝান্টিং এ মোম ও অন্যান্য কেমিক্যালস এর পরিমান-
মোম সাদা (প্যারাফাইন) ৫০০ গ্রাম
মোম লাল (বী ওরিস) ৪০০ গ্রাম
রজন ১০০ গ্রাম
ব্রাশ এ মোম ও অন্যান্য কেমিক্যালস এর পরিমান-
মোম সাদা (প্যারাফাইন) ৪০০ গ্রাম
মোম লাল (বী ওরিস) ২০০ গ্রাম
রজন ১০০ গ্রাম
মোমের কাজ ও ধারনা
বাটিকের কাজের জন্য যেসব উপকরন গুলোর বেশী প্রয়োজন তার মধ্যে মোম ও রজনের কাজ সবচে’ বেশী। দুই-তিন-চার প্রকারের মোম লাগে। সব প্রকার মোমের সাথেই রজন মেশাতে হয়। যাতে মোমের মিশ্রণটি কাপড়ে লেগে থাকে। এরজন্য নিচে মোম ও রজনের মিশ্রণ তৈরীর একটা শতকরা হিসাব দে’য়া হলো।
মোম (সাদা ) ৫০% গ্রাম/চামচ
মোম (লাল) ৪০% গ্রাম/চামচ
রজন ১০% গ্রাম/চামচ
তবে উপরোক্ত শতকরা হিসাব আমাদের পছন্দমতো নকশার উপর নির্ভর করে। যেমন- আমরা যদি সূক্ষè নকশা করতে চাই বা নকশাটিতে সাদা অংশ বেশী রাখতে চাই ও ফাঁকার অংশ কম আনতে চাই তবে মোমের মিশ্রণের সাদা মোমের শতকরা হিসাব কমিয়ে দেব এবং লাল মোমের পরিমান বাড়িয়ে দেব। তখন মিশ্রণের শতকরা হিসাব দাঁড়াতে পারে-
মোম (সাদা ) ৪০% গ্রাম/চামচ
মোম (লাল) ৫০% গ্রাম/চামচ
রজন ১০% গ্রাম/চামচ
তবে রজনের পরিমান সব ক্ষেত্রেই সমান। আবার আমরা যদি মোটা নকশার কাজ বেছে নিই বা নকশার ফাঁকা অংশ বেশী নিতে চাই তবে মোমের মিশ্রণের শতকরা হিসাব পূর্বের মতোই হতে পারে।
প্রুশিয়ান রঙ এর হিসাব গজ প্রতি-
(১ তোলা = ১ চা চামচ ধরে)
বয়েল কাপড়ে ১ তোলা রঙ/গজ কাপড়
মোটা কাপড়ে ১.৫ তোলা রঙ/গজ কাপড়
পানি ৮০% ২৪০ চা চামচ
লবন ৯% ২৭ চা চামচ
ইউরিয়া ৫% ১৫ চা চামচ
সোডা এ্যাস/
কাপড় কাঁচা সোডা ৫% ১৫ চা চামচ
সময় ১৫ মিনিট পর পর মোট ১ ঘন্টা
কার্যপ্রণালীঃ প্রথমে নির্বাচিত কাপড়টি ১০% - ১৫% ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। ছোট একটি পাত্রে গরম পানিতে ১% রঙ মিশিয়ে পেস্ট করে নিয়ে রাখুন ৪/৫ মিনিট। অন্য একটা পাত্রে কাপড় অনুযায়ী ঠান্ডা পানি নিয়ে তার মধ্যে গরম পানিতে পেস্ট করা রঙটুকু মিশিয়ে নিন। এবার কাপড়টি থেকে সাদা পানি নিংড়িয়ে রঙ গুলানো পানিতে ডুবান। এবার ৯% লবন, ৫% ইউরিয়া ও ৫% সোডা এ্যাস ছোট ছোট পাত্রে গুলিয়ে রাখুন। একটু পর কাপড়টি প্রথমে লবন তার পর ইউরিয়া তার পর সোডা এ্যাস গোলানো পানিতে পর পর ডুবিয়ে ১৫ মিনিট করে রাখুন ও ভালো করে নাড়াচাড়া করুন যেন কাপড়ের কোন অংশ ভেসে না থাকে। এভাবে সময় শেষ হলে কাপড়টি প্রচুর পরিমাণ ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন, যতক্ষন পর্যন্ত না পরিস্কার পানি বের হয়। এবার ছায়ায় শুকাতে দিন।(চলবে)
(আগের পর্ব)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৫:১৯