somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলায় ইংরেজদের শোষণকাল

১৫ ই এপ্রিল, ২০১১ রাত ১০:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই পোস্টের সকল তথ্য মোহাম্মদ আবদুল মান্নান রচিত " আমাদের জাতিসত্তার বিকাশধারা " বইটি থেকে নেয়া...

* ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ বণিকরা এদেশে প্রথম আসে
* ১৬২০ সালে তারা সুরাট, আজমীর ও পাটনায় ব্যবসা শুরু করে
* ১৬২৪ সালে তারা উড়িষ্যার বালাশোরে কুঠি স্থাপন করে
* ১৬৩৪ সাল থেকে তারা বাংলায় বাণিজ্য করার অধিকার লাভ করে
* ১৬৫১ সালে তারা হুগলীতে কুঠি স্থাপন করে এবং তখন থেকেই তারা বর্ণহিন্দু ব্যবসায়িক মিত্রদের সহায়তায় এদেশের রাজনীতির দিকে হাত বাড়াতে শুরু করে
* ১৬৮২ সালে উইলিয়াম হেজেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির এজেন্ট নিযুক্ত হন
* ১৬৮৫ সালে জোব চার্নক হুগলী কুঠীর চীফ এজেন্ট নিযুক্ত হন। কুঠির বকেয়া শুল্ক তেতাল্লিশ হাজার টাকা না দেয়ায় ঢাকার সুবাদার তাকে এদেশ থেকে তাড়িয়ে দেন এবং নানা অপকর্মের কারণে বাংলায় ইংরেজদের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে দেন।
* ১৬৯০ সালে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সুযোগ নিয়ে জোব চার্নক আবারো এদেশে আসেন
* ১৭৫৪ সালে ইংরেজরা কলকাতায় উইলিয়াম দুর্গ নির্মাণ করে
* ১৭৫৭ সালের ১ মে কলকাতায় ইংরেজ কমিটি তাদের বর্ণহিন্দু দালালদের সহযোগিতায় মীর জাফরের সাথে ১১ দফা চুক্তি সম্পাদন করে
* ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর আম বাগানে যুদ্ধ প্রহসনের মধ্য দিয়ে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতন হয়
* ১৭৫৭ সালেই ক্লাইভের পরামর্শে হিন্দুরা বসন্তকালীন দুর্গাপূজাকে পিছিয়ে এনে শরৎকালীন দুর্গাপূজার মাধ্যমে পলাশীর যুদ্ধের বিজয়োৎসব পালন করে।
* ১৭৫৭ সালের ২৯ জুন পরাধীন দেশের পুতুল নবাবরূপে মসনদে বসেন মীর জাফর
* ১৭৫৭ সালের ৩ জুলাই দুইশ' নৌকা বোঝাই সোনা-চাঁদি মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতা পাঠানো হয় ইংরেজদের "যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ" বাবদ
* ১৭৬০ সালের অক্টোবর মাসে মীর জাফরকে সরিয়ে তার জামাতা মীর কাসিমকে মসনদে বসায় ইংরেজরা।
* ১৭৬৩ সালে স্বাধীনতা পুনরূদ্ধার করতে মীর কাসিম ইংরেজদের বিরুদ্ধে গিরিয়ায়, উদয়নালায় ও পাটনায় যুদ্ধ করেন। যুদ্ধে পরাজয় বরণ করে তিনি নবাব সুজাউদ্দৌলা ও দিল্লীর সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের সাথে মৈত্রী স্থাপন করেন
* ১৭৬৩ -১৮০০ সালে পলাশীর পতনের ছয় বছরের মাথায় বিদ্রোহের সূচনা করেন ফকির মজনু শাহ। ইংরেজদের ঢাকা কুঠি হামলার মধ্য দিয়ে এ বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল।
* ১৭৬৪ সালের এপ্রিলে সুজাউদ্দৌলার মন্ত্রী বেণী বাহাদুরের বিশ্বাসঘাতকতায় মীর কাসিম ও সুজাউদ্দৌলার যৌথ বাহিনী ইংরেজদের কাছে পরাজিত হয়।
* ১৭৬৪ সালের ২২ অক্টোবর সম্রাটের দেওয়ান সেতাব রায়, অযোদ্ধার নবাবের মন্ত্রী বেণী বাহাদুর ও মীর কাসিমের খ্রিস্টান সেনাপতি মার্কাট ও আরাটোনার বিশ্বাসঘাতকতার কারণে দিল্লীর সম্রাট, অযোদ্ধার নবাব ও মীর কাসিমের সম্মিলিত বাহিনী বখশারে ইংরেজদের কাছে পরাজিত হয়।
* ১৭৬৫ সালের ১২ আগস্ট সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের কাছ থেকে ক্লাইভ এক চুক্তির ভিত্তিতে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার রাজস্ব প্রশাসনের ফরমান আদায় করে নেন।
* ১৭৬৫-৬৬ সালে কোম্পানি ২ কোটি ২০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করে।
* ১৭৬৭-৬৮ সালে ত্রিপুরা জেলায় বিদ্রোহ করেন শমশের গাযী।
* ১৭৬৮ সালে শাসনকেন্দ্র মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতায় স্থানান্তর করা হয়।
* ১৭৬৯ সালে সন্দ্বীপে বিদ্রহ করেন আবু তোরাব
* ১৭৬৯ সালে ফসল ওঠার সাথে সাথে ইংরেজরা বাংলা ও উড়িষ্যার সকল ফসল কিনে ফেলে এবং এই ফসল সারা বছর মজুদ রাখে।
* ১৭৭০ সালে (বাংলা ১১৭৬ সনে) কোম্পানি এই মজুদকৃত খাদ্য-শস্য কয়েক গুণ বেশি দামে বেচতে শুরু করে ফলে বাংলা ও বিহারে কোটি কোটি মানুষ দুর্ভিক্ষে মৃত্যুবরণ করে যা ইতিহাসে ছিয়াত্তুরের মন্বন্তর নামে পরিচিত।
* ১৭৭৩ সালে কলকাতা ইংরেজদের ভারত-রাজত্বের রাজধানীতে পরিণত হয়। ইংল্যান্ডে সম্পদ পাচারের সদরঘাট ছিল এই কলকাতা বন্দর।
* ১৭৭৪ সালে বড়লাট ওয়ারেন হেস্টিংস কলকাতায় সুপ্রীম কোর্ট উদ্বোধন করেন।
* ১৭৭৫ সালে মোমেনশাহীতে গণজাগরণ তৈরী করেন ফকির করম শাহ।
* ১৭৭৬-৮৯ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম-চাষীদের নিয়ে বিদ্রোহ করেন শের দৌলত খাঁ, রামু খাঁ ও জান বখশ খাঁ।
* ১৭৮১ সালে মোগল ফৌজদারদের পদ্গুলোতে ইংরেজ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়।
* ১৭৮৩ সালে রংপুর-দিনাজপুরে নূরলদীনের নের্তৃত্বে কৃষক বিদ্রোহ সংঘটিত হয়।
* ১৭৯২ সালে বোলাকী শাহের নের্তৃত্বে কৃষক বিদ্রোহ সংঘটিত হয়।
* ১৭৯৩ সালে লর্ড কর্ণওয়ালিস চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তন করেন। যার ফলে কৃষকরা ইংরেজ ও জমিদারদের শোষণের ও নির্যাতনের স্থায়ী শিকারে পরিণত হয়।

------ বাংলার লুন্ঠিত সম্পদ ইংল্যান্ডে পৌছতে শুরু করার পর থেকে সেখানে অতি দ্রুত বিভিন্ন কল-কারখানা গড়ে উঠতে থাকে। এসব কলকারখানার কাঁচামালও ছিল এই দেশেরই সম্পদ। এভাবেই ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লব সংঘটিত হয়। ব্যাংক অব ইংল্যান্ড স্থাপিত হওয়ার ৫০ বছর পরও ব্যাংকের প্রচলিত নোটের মধ্যে সবচে বড় নোট ছিল ২০ পাউন্ডের নোট। ১৭৫০ সালে সমগ্র প্রদেশে বারোটার বেশি ব্যাংক ছিল না।অথচ ১৭৯০ সাল নাগাদ শহরের প্রতিটি বাজারে ব্যাংক গড়ে উঠে। যে শিল্প-বিপ্লব নিয়ে গর্ব করে ইংল্যান্ড, সত্যিকার অর্থে তা সম্ভব হয়েছে এদেশের লুটের টাকায়।

.................. (চলবে)

পরবর্তী পর্বের লিঙ্ক Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০১১ রাত ৮:১২
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখানে সেরা ইগো কার?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪






ব্লগারদের মাঝে কাদের ইগো জনিত সমস্যা আছে? ইগোককে আঘাত লাগলে কেউ কেউ আদিম রোমান শিল্ড ব্যবহার করে,নাহয় পুতিনের মত প্রটেকটেড বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করে।ইগো আপনাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে, টের পেয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবং আপনারা যারা কবিতা শুনতে জানেন না।

লিখেছেন চারাগাছ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮

‘August is the cruelest month’ বিশ্বখ্যাত কবি টিএস এলিয়টের কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘The Westland’-র এ অমোঘ বাণী যে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন করে এক অনিবার্য নিয়তির মতো সত্য হয়ে উঠবে, তা বাঙালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×