somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নদীকূল ও চাষী

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১২:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজি রবিবার,
গাঁও হইতে দূরে নদীকূলে বসিছে হাট বাজার,
কত শত শত ছোট তরী হইছে পারাপার।
এই ক্ষণে নাও লয়ে প্রস্তুত গাঁয়ের কৃষাণ,
বেচিবে তাহার ফলন, তবে সিদ্ধ হইবে সাধন।
এত কালের চাওয়া তার, হয় বুঝি পূরণ-
শেষ হইবে দুঃখের দহন! আসিবে সুখের ক্ষণ।

এখন বরষা,
চারিধারে কালো স্রোতের খেলা ঘোর অমানিষা
ইহার মাঝে ভাসাইল নাও, সেই সে চাষা-
ডিঙি খানা ছোট এক-শুধু তার ফসলে ভরা,
দিতে হবে তারে পাড়ি আজ, তটিনীর স্রোত ধারা
ঢেউয়ের বুক চিড়ি, চলিছে তরী! করিয়া ত্বরা।

চলিছে ডিঙি
প্রমত্ত পদ্মার বুকে যেন আজ উন্মত্ত ঢেউ-
বর্ষায় জোয়ারের রূপ বুঝিবে না, যদি না দেখে কেউ।
তবু চলিছে নাও স্রষ্টার নাম স্মরণ করিয়া।
দেখিয়া একটু দূরে হাট, আসিছে প্রায় ভাবিয়া-
মন তাহার উঠিল নাচি-যেন হরষে ভরিয়া।

***** *****

হঠাৎ কি ঘটিল হায়,
ঈশাণ কোণের কালো মেঘে ভরিয়া গেল গগন,
কালবোশেখীর ভয়ে যেন কাঁপিছে তাহার মনন।
বাজিছে বজ্র নিনাদ, শুরু হইবে এখন ঝড়,
ভাবিয়া পায় না করিবে কী, পাবে কী স্রষ্টার বর?
হবে কি রক্ষা প্রাণ! চালাইছে তরী তাড়াতাড়ি-
বাচিতে প্রাণে,বাকী পথ তারে দিতে হইবে পাড়ি।

শুরু ঝড়ের রেশ,
শ্যামা বরণ ঘন হইতে ঝরিছে বারির আবেশ-
চারিধারে গাঁঢ় আধার, সম্মুখে কিছু দেখা ভার।
একটু দূরের তট, মনে হইছে যেন বহুদূর!
হায়! আজও কি সফলতা মোরে নাহি দিবে ধরা?
হবে না পুরা সাধ। এবারও সুখ রবে অধরা।

***** *****

ধন্য নিরঞ্জনে,
তার লীলা বোঝার সাধ্যি কার! কহিলা মনে মনে-
কূলহীন কৃষকে, “শুনিলা তব আকুতি নিজ গুনে!
থামাইলা ঝড়, বাচাইলা মোরে পতন হইতে।”
দেখিল চাহি সহসাই যাইয়া উঠিবে কূলেতে-
বলিল, তব কৃপায় আজি বাচিয়া গিয়াছি প্রাণে।

সাঙ্গ হইল বাদল,
বহিছে হালকা বাতাস, গিয়াছে থামিয়া বজ্র মাদল।
হঠাৎ দেখিল চাষা- নেই হাট যেন ,এলোমেলো,
বলি উঠে নিজ সনে, এত কোলাহল কোথা গেল!
সহসা ভাঙ্গিল ভুল, বুঝিল আসিছে সে, অচেনা-
কূলে, ওই ধারে পরে আছে, তারি কূল যাহা চেনা।

আসিয়া নদীকূলে
শুধালে সে, স্রষ্টা তব গুনগান না হইবে শেষ-
দয়াময়, বাচাইলা মোরে, কমাইলে মোর ক্লেশ।
ক্ষণকাল পরে ভাবিল মনে, পাড়াইব দরিয়া অশেষ-
তবেই মোর অভিলাষ খানা- হইবে পূরণ শেষ।
একটু পরে, থামিলে বাদল, লাগাইল পাল-
ধীরে ধীরে, যাইয়া উঠিতে ওই উত্তর কূল।

***** *****

শোন ওহে মানব,
সহসা নদীকূল, কহিলা আপন মনের ক্লেশে,
কেন তুমি চাইছ যাহিতে তব অঞ্চল হতে?
জান কী, এককালে ছিলাম সকলের কাছে রাণী!
কত লোকে করিছে গমন, কেউ ফেরেনি খালি হাতে,
সকলেরে দিয়েছিনু সব, যাহা চেয়ে ছিল পেতে।

আর আজি তুমি,
হারাইলে খেই, গেছিলে দাড়ায়ে মরণ পানে ঠায়!
হইল রক্ষা প্রাণ, স্রষ্টার ইশারায়, মোর কৃপায়।
আজ যাহিছ হেলায় ফেলিয়া মোরে! স্তিমিত হয় গতি
কহিল মাঝি, সহস্র ধন্যবাদ, কৃপা লাগি তব প্রতি।
যাইব ও কূল, হইব সফল ভরাও মোরে কৃপায়।

***** *****

হায়রে বিধঃ
এই কি তবে প্রতিদান, শুনিল না কোন কথা। আবার-
চাহিল কৃপা! এই হবে যদি, যদি যাবেই চলি,
কেন এসেছিল সে, উত্তরিয়া খোদা, ধন্য কর মোরে।
দেখিয়া বিষাদ কহিল পদ্মায়, বলি যে তোমারে-
শোন মোর কথা, শান্তি পাইবে, যাহা বর্ণন করি।

এইতো বিধির নীতি,
গত হইলে যজ্ঞ লগন, দেবতা হারায় ভক্ত স্মরণ-
পুরা হইলে প্রয়োজন, যায় না পাওয়া, মানবাগমন।
তথায়ও ঘটিল তাই, তাঁরি ইশারায় হইল ঝড়
বাচাঁইতে অমূল্য প্রাণ, কূলে ভিড়াইল ময়ূর।
পালে লাগিলে হাওয়া, চালাইলো ও কূলে চাহিয়া-
তরী খানা। এই তো মানব, দেখিলে কাছে পাহিয়া।

***** *****

তাং : ১৮-৩-০৬ হতে ২১-৩-২০০৬ ইং

আমার কবিতার পাঠকেরা, আমি আপনাদেরকে আজ আমার প্রথম লেখার সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি । পাচ বছর আগে এই কবিতা টা লিখেই আমার কাব্যচর্চা শুরু করেছিলাম । আশা করি আপনাদের ভাল লাগবে । আল্লাহ'র কাছে আমি কৃতজ্ঞ আমায় কবিতা লেখার ক্ষমতা হঠাৎ করে দেবার জন্যে ।


সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ১১:৪৯
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবি কখনো কখনো কিছু ইঙ্গিত দেয়!

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭



গতকাল ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান এর ভার্চুয়ালি কথা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অফিসায়াল এক্স পোস্টে এই ছবি পোস্ট করে জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধানের পিছনে একটা ছবি ছিল ১৯৭১ সালের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলু

লিখেছেন স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



লতিফপুরের মতি পাগল
সকালবেলা উঠে
পৌঁছে গেল বাঁশবাগানে
বদনা নিয়ে ছুটে



ঘাঁড় গুঁজে সে আড় চোখেতে
নিচ্ছিল কাজ সেরে
পাশের বাড়ির লালু বলদ
হঠাৎ এলো তেড়ে




লাল বদনা দেখে লালুর
মেজাজ গেল চড়ে।
আসলো ছুটে যেমন পুলিশ
জঙ্গী দমন করে!





মতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×