somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এসো হে পচিশে বৈশাখ.................................................

০৯ ই মে, ২০১৬ দুপুর ১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঠাকুর বাড়ির আঙিনা।জোর কদমে চলছে জন্মজয়ন্তীর ১৫৫তম সাবলীল উদ্যাপন।এক চিলতে আঙিনার সবটুকুন জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে রবীন্দ্র অভ্যর্থনার সুবাতাস। বিশ্বকবির শুভাগমনের খবরটি ইতোমধ্যেই স্থলে-জলে-বাতাসে গুন্জরিত হয়ে আছড়ে পড়েছে ওই দূর আকাশে।বছর ঘুরে আমাদের সামনে আবারো রবীন্দ্রনাথ।আজ পচিঁশে বৈশাখ।এমনি এক খর বৈশাখে বাংলা সাহিত্যর আকাশে রুদ্র-মঙলরুপে আবির্ভূত হোন তিনি।কবিতা,গান,
নাটক,গল্প,চিত্রকলা, নৃত্য,ভ্রমনকাহিনী,প্রবন্ধ দর্শন,ধর্মের প্রতিটি দুয়ারেই পাই তার সরব উপস্থিতি।ইশ্বর প্রদত্ত মেধা,সম্পদ,সময়ের অভূতপুর্ব সম্মিলন আমাদের প্রাণের রবীন্দ্রনাথ।আপন সাধনা আর সৃজনকর্মের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে সারা জীবন আলো ছড়িয়ে গিয়েছেন এই মহান কবি। অসাধারন সব বাণী ও সুরের মিশেলে বীণার তারে তিনি বুনে গেছেন অনিন্দ সুন্দর সব গীতমালা।অন্যসব কীর্তি বাদ দিলেও শুধু গানের জন্যেই রবীন্দ্রনাথ আমাদের মাঝে বেচে থাকবেন হাজার বছর ধরে।তিনিই বলেছিলেন,এই বাংগালীকে এক দিন তার গান শুনতেই হবে।আজ এত বছর পরে তার কথাটি আমাদের সামনে মহাসত্যের মত ফলে গেল।ভাষা ও সুরকে সমস্ত রকমের কাঠিন্যতা,ভারের হাত থেকে মুক্ত করে, গানকে সহজ,সরল ও বোধগম্য অনুভবে প্রকাশ করেছেন রবীন্দ্রনাথ।তার গানের কথা,ভাব,ছন্দ,ছব
ি কলকলে নদীর স্বচ্ছ জলের ধারার মত বয়ে চলেছে আমাদের অন্ত:প্রাণে।অগভীরকে ছেড়ে গভীরে, সীমানা পেড়িয়ে অসীমে,অন্তকে ফেলে অন্তহীনে মিলে যাওয়ার সর্বশক্তি আমরা পাই কবিগুরুর গান থেকে।এই সাহস আমরা পাই তার কবিতা থেকে।তাই আজও কোটি মানুষের রক্তের সাথে,আবেগের সাথে,তাদের স্বপ্নের সাথে একটিই নামই শোভা ছড়ায়।তিনি রবীন্দ্রনাথ। ঘর থেকে বাইরে,সুখ থেকে বিষাদে,জন্ম থেকে মৃত্যুতে রবীন্দ্রনাথের ছোঁয়া অবিসম্ভাবী।চিরদ
িনই গান পাগল,সুর পাগল বাংগালীর চিত্তে রবীন্দ্রনাথ বেজে উঠেছে কোকিলার কুহুর মত।রবীন্দ্রনাথ ছাড়া আমাদের এক দিনও চলে না।কী ধান ভানতে কী গীত গাইতে রবীন্দ্রনাথ ছাড়া জমে না একবেলাও।এমনকি শোকাচ্ছন্ন অনুষ্ঠানের শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদনেও তাকে পাওয়া যায় নিজস্ব ঢংগেই। আর ইশ্বর কামনায়????? সে তো বলার অপেক্ষাই রাখে না। রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টিকর্ম থাকবে অথচ সেখানে ইশ্বর থাকবে না,সেটা শুধু অসম্ভবই নয়,অকল্পনীয়ও বটে।রবীন্দ্রনাথের সমস্ত সৃষ্টি চেতনাতেই ইশ্বর শক্তভাবে অবস্থান করছেন।সেখানে ইশ্বর কখনো চাপা সুরে,কখনো আত্মসমর্পনের গভীর আবেদনে উপস্থিত।কবিতায়,
গানে, দর্শনে রবীন্দ্রনাথের ইশ্বরকে আমরা কখনোসখারুপে কখনো চরম বিশ্বস্ত এক বন্ধুরুপে পাই ।বন্ধুরুপী এই ইশ্বরের কাছেই কবির শেষ আশ্রয়।সেখানেই তার পরম মুক্তি।এমন কি তাকে ব্রাহ্মণ কবি বললেও বেশী বলা হবে না।বিলেতের জীবনচেতনা,আধুনিকতা আর সাহিত্যভান্ডার থেকে রসদ নিয়ে বাংলাদেশের পাড়া-ঘরের পুথিসাহিত্যকে জাতে তুলেছেন লম্বা দাড়িওয়ালা অতশীপর এই সংস্কৃতকর্মীই।তার পরাভব সৃষ্টিশীলতারে মধ্যে দিয়ে সারা জীবনভর সংস্কৃতির সেবা করেছেন।নীতিতে,ছ
বিতে,বিধিতে, স্মৃতিতে সব সময় পূণ্য সত্যের আরাধনা করে গেছেন।বাংগালীর দৈনিন্দন রুচি বিকাশের নেপথ্যে থাকা মানুষটির নামই শ্রী রবীন্দ্রনাথ। নব নব চেতনা,নব নব সৃষ্টি,নব নব প্রেরণায় মোহিত হয়ে সাহিত্য বাগানে তিনি দুহাতে রীতিমত সোনা ফলিয়েছেন।নতুন দিনের নতুন যাত্রীদের নিয়ে এক সাথেই চলতে চেয়েছেন কবি।কচি বয়স আর সবুজ রংগের মধ্যে কবি খুজে পেয়েছেন তারুণ্য শক্তির মহাসংযোগ।তাই তো আমরা কবি কন্ঠে শুনতে পাই:....'আয় রে সবুজ....আয়রে আমার কাচাঁ'।
সব কোলাহল, দূষন,অস্থিরতাকে পেছনে ফেলে এক সমাহিত,শান্ত জীবনের পরশ পেতে আমাদেরকে বার বার রবীবাবুর কাছে ফিরে যেতেই হবে।ঘটনার রসিকতায়,বেদনার বিশিষ্টতায়,টানা
পোড়নের তীব্রতায় আর ভালোবাসার কাতরতায় আমাদেরকে রবীন্দ্রনাথের ওই সমাপ্তি,মৃন্ময়ী
,বিনোদিনী,কাদম্বিনীর কাছেই ঘেষতে হবে।কখনো কখনো আমাদের জীবনটা হয়ে উঠে গফুর,মহেশ,ফটিক আর কাবুলীওয়ালাদের কার্বন কপি।যেখানে আমরা কখনো না কখনো হেরে যাওয়া জীবনের জ্যান্ত লাশ বহন করতে করতে বড়ই ক্লান্ত পড়ি।কিন্তু বৈশাখের খর আবহাওয়ার মত বিরুদ্ধ পরিস্থিতিতেও সাহস না হারিয়ে তিনি ব্যক্ত করেছেন:'ঝরে যাক খরা,ঝরে যাক শুচি'। এমন প্রভাবশালী উক্তিকারী ব্যক্তিটি এভাবে আবারো পৃথিবীতে আসবে কিনা তা নিয়ে দুবার ভাবতে হবে।জীবনবাদী এই শিল্পী জীবনভর জীবনেরই জয় গান করে গেছেন।শত অন্ধকারের শেষেও যেমন একদিন আলোর শেষ ঝলকানিটি দেখতে পাওয়া যায়,তেমনি নানান হতাশা-আশংকা-ব্যর্থতা থাকার পরও বয়ো:বৃদ্ধ কবিটি শেষ পর্যন্ত ওই মানষের উপরই বিশ্বাস স্থাপন করেছেন।বিশ্বাস রাখতে চেয়েছেন তাদের আজন্মলালিত মুক্তবুদ্ধির উপর।
তিনি দরদী গলায় হাক ছাড়লেন আর ব্যক্ত করলেন:' বিশ্বাস হারানো যে পাপ'!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
গুরুদেবের জন্মজয়ন্তীর এমন শুভক্ষণে সর্বজনকে অনেক অনেক ভালোবাসা......................................
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মে, ২০১৬ দুপুর ১:৩৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২১

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

ট্রাম্প হচ্ছে একজন আপাদমস্তক বিজনেসম্যান। কমলা হ্যা্রিস যেহেতু ইন্ডিয়ান বংশোদ্ভূত তাই ইন্ডিয়ান ভোটার টানার জন্য সে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে জাস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

চট্রগ্রামে যৌথবাহিনীর ওপর ইসকনের এসিড হামলা সাত পুলিশ আহত।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৪৩

এসিড নিক্ষেপে আহত পুলিশ সদস্য



চট্টগ্রামে পুলিশের ওপর ইসকন সমর্থকদের হামলা ও এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসকন

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৭


INTERNATIONAL SOCIETY FOR KRISHNA CONSCIOUSNESS যার সংক্ষিপ্ত রূপ হলো ISKCON এর বাংলা অর্থ হল আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ। যে সংঘের ঘোষিত উদ্দেশ্য হল মানুষকে কৃষ্ণভাবনাময় করে তোলার মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রকৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

তুমি তাদের কাছেই যাবে তারা তোমার মূল্য বুঝবে....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৪


মৃত্যুর পূর্বে একজন পিতা তার সন্তানকে কাছে ডেকে বললেন, 'এই নাও, এই ঘড়িটা আমি তোমাকে দিলাম। আমাকে দিয়েছিলো তোমার দাদা। ঘড়িটা দুইশত বছর আগের। তবে, ঘড়িটা নেওয়ার আগে তোমাকে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×