এই যে শুনছ???? হ্য়া শুধু তোমাকেই বলছি।তুমি পেয়োছো টা কি শুনি???? তোমার লজ্জা-শরমগুলো এতটা নির্লজ্জ হলো কবে থেকে??? জানতাম হবে।তাই বলে এতটা তো হবার কথা ছিল না।এই জীবনে তো আর কম লাথ্থি-গুতা খেলে না।বুঝেছি, জীবনভর পেটের দাবি মেটাতে গিয়ে ওই উপরওয়ালাদের এত এত লাথ্থি-গুতা হজম করেছো যে, তোমার স্নায়ু তন্তুগুলোও এখন বেশ মোটা হয়ে গেছে।এখন আর অপমান,লজ্জা, প্রতারনা আর মানবেতর জীবনের নোংরা কাটাগুলো তোমাকে ক্ষত-বিক্ষত করে তোলে না।এখন আর বড় বড় সাহেবদের ডাটোসাটো ছলছাতুরীতে তুমি আগের মত কুকড়ে উঠো না।শুনলাম উল্টো এখন নাকি এমন ধরনের যাতাকলে পড়ে পিষে না মরলেই তোমার বেশী অস্বস্তি লাগে।গা টা ম্য়াজ ম্যাজ করে উঠে।কালে কালে মার খেতে খেতে,নির্যাতিত হতে হতে তোমার দু পয়সার শরীরটাও সব সয়ে নিয়েছে।এখন মার না খেলেই বরং খারাপ লাগে।হায় রে জীবন!!!!!তোমার কয়লা-পোড়া শরীরটাও ওই পেনিসযুক্ত শকুনীদের ভাষা বোঝে!!! বুঝতে কষ্ট হয় না যে, শিশুকাল থেকেই অযত্ন-অবহেলা,রক্তশূণ্যতা,পুষ্টিহীনতা তোমাকে যতটা না কাবু করে ফেলেছে, তার চেয়ে সহস্রগুন বেশী কাবু হয়ে গেছো তোমার আত্ম অধিকারের একনিষ্ঠ সাহসের অভাবের কারনে।তোমার গোপন কুঠিরে আত্মশক্তিতে জ্বলে উঠার যে অগ্নিপ্রদীপ লুকিয়ে আছে,সেটিকে যথাযথভাবে জাগিয়ে না তোলার কারনেই তুমি আজ তেলাপোকার জীবন নির্বাহ করছো।কিন্তু এভাবে আর কত দিন???? আর কত দিন শুধু ৫৩শ টাকার জন্যে তুমি বছরের পর বছর ধরে রানা প্লাজায় আত্মহুতি দিবে।যেখানে ওই ৫৩শ টাকা দিয়ে কোন ধনীর দুলালীর রজচক্রের রক্ত পরিষ্কার করার জন্যে এক দিনের স্যানিটারী ন্যাপকীনও কিনে পাওয়া যায় না!!! আর কত দিন শুধু ৯০০ রিয়েলের জন্যে মরুর দেশের গরম বালিতে কাজ করতে গিয়ে তোমার শরীরে বিষধর ফোস্কা ফুটতে দিবে। যেখানে ওরা তোমাকে পয়ো:নিষ্কাশনের নোংরা পানির চেয়েও জগন্য এক কীট ভাবে!!! এভাবে আর কত দিন বংগোপ সাগরের তলানীদেশে তোমার সলিল সমাধি হবে???? তবে কি আমরা এজন্যেই সমুদ্র জয় করেছি যে,তুমি কাজের অভাবে প্রতিবছর হাংগর মাছদের পেটে গিয়ে ওদের ক্ষুধা মিটাবে!!!বাহ!!! চমৎকার তোমার জীবন বৃত্তান্ত!!!!এ যে জীবন না।জীবন নামে এ যে উচু মাপের এক শৈল্পিক মশকরা!!!!
এই যে শুনছো??? হ্যা শুধু তোমাকেই বলছি।তুমি এতটা অবুঝ হলে কবে থেকে??? তুমি কি বুঝো না যে, ওসব মে দিবস টে দিবস কিচ্ছু না।তোমার কি মনে হয় ,তোমার বিরুদ্ধে পুজিপতি-মালিকদেরশত বছরের এই অন্যায়,পাপ আর প্রগলভতা মে দিবসের ওই একটি মাত্র দিনে ধুয়ে মুছে সব কিছু পবিত্র হয়ে যাবে??? না রে মনা জীবনের হিসেব নিকেশ অত সহজ না।ওই দিবসে বেশী হলে কারোও কারোও প্রচার হয়,ট্রেড ইউনিয়নদের ভালো ব্যবসা হয়,পাইপলাইনে কিছু মাল-মশলা আসে।এই সুযোগে কারোও কারোও যাকাত-ফেতরারও ব্যবস্থা হয়।এর বেশী কিছু না।মনে রেখ,তোমার হাজার বছরের শ্রম,ঘাম,ত্যাগ,মাহাত্ম,মহিমা আর শক্তির সৌন্দর্য উপলব্ধি করার ক্ষমতা ওই মে দিবসের নেই।এই উপলব্ধির একচ্ছত্র আধিকারিক শুধু তুমিই।আর কেউ নন।তাই বলছি,অবগুন্ঠন খুলে বাইরে এস।শৃ্ংখলের বদ্ধ দুয়ার খুলে মুক্ত আকাশে উড়ে বেড়াও।বলছি চুল খুলে রাজপথে এসো।আর নয় পরজীবি মালিক শ্রেণীর লিংগমেহন।মনে রেখ কেউ তোমার হয়ে কেদে দিবে না।এমনকি ফুলে-ফলে সাজানো ওই মে দিবসটিও নয়।তোমার জন্যে তোমাকেই কাদতে হবে।তাই বলছি গলায় তোল শ্রমজীবি মানুষের মহামুক্তির গান।শিবালয় থেকে শিব নৃত্যকে আহবান করো।কারখানায় কারখানায় আজ প্রলয়ের কাপন তোল।শ্রমজীবি মানুষের কষ্টের বিরুদ্ধে মহালয়ার ধ্বংস তান্ডব চালাও।জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাড়খার করে দিয়ে মানবিক মর্যাদার সত্য, শুন্দর,অরিন্দম জীবনকে ছিনতাই করে নিয়ে এসো।
তোমাকে যে পারতেই হবে।
কারন এই তুমিই যে বিশ্বচরাচর নির্মানের শ্রেষ্ঠ কারু শ্রমিক
কারন এই তুমিই যে গতিশীল অর্থময় জীবনের শ্রেষ্ঠ নির্মান শ্রমিক
কারন এই তুমিই যে আমার বাংলা মায়ের সুজলা-সুফলা সবুজ-শ্যামলার কৃষক শ্রমিক।
শ্রমিক তোমায় অভিবাদন................................................................................................................................................