somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শরণার্থী-১৯৭১: দুর্দশার গল্প

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



অনেক দীর্ঘশ্বাস, অনেক অভুক্ত শিশুর কান্না, অসহায় মায়েদের নীরব চাহনি, একটু আশ্রয়ের জন্য ছোটাছুটি, একটু পরে পরে লাশের খাতায় নতুন সংখ্যা এসবই ছিল শরণার্থী ক্যাম্পগুলোর দৃশ্য।

আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সাথে শরণার্থী শব্দটা অনেক ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিল। নিজেদের স্থায়ী আবাস ছেড়ে কত কষ্ট করেছে মানুষগুলো ভাবলেও এখন কান্না এসে যায়।

একটু খাবার, একটু আশ্রয়, একটু নিরাপত্তার জন্য মানুষগুলোকে ১৩০ মাইল কিংবা তার বেশিও হাটতে হয়েছে। কেউ পৌছাতে পেরেছিলো ক্যাম্পগুলোতে আবার কেউ পথিমধ্যে শেষ হয়ে গিয়েছিলো হানাদারদের থাবায়।
চুকনগরের ঘটনাটা তো এমনই ছিল। কত জায়গা থেকে লোক জড়ো হয়েছিলো ভারতে পাড়ি দেবে বলে। কিন্তু কয়েক ঘন্টায় পাকিস্তানিদের হিংস্রতায় কমে গিয়েছিলো শরণার্থীদের লাইনে মানুষের সংখ্যা।
৩০ই এপ্রিল,১৯৭১ অমৃতবাজার পত্রিকায় এরকমই একটা ঘটনার খবর প্রকাশ করা হয়।
শিরোনাম ছিলঃ "ভারত যাবার পথে ৯০০ শরণার্থী নিহত"
বাংলাদেশের ডোমার পুলিশ স্টেশন এলাকা থেকে মানুষগুলো পাড়ি দিয়েছিলো। প্রায় আটহাজার মানুষ। পথে বাধা পায় পাকিদের। ব্রাশ ফায়ার করে। ৯০০ মানুষ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। যাওয়া হয় না নিরাপদ আশ্রয়ে!

কোথাও হয়তো নদী পাড়ি দিয়ে একটু যেতে পারলেই সীমান্ত। কিন্তু নৌকায় আর ওঠা হয় না। তার আগেই পাকিদের থাবার তলে পড়ে যেতে হতো।

সেসময়ের পত্রিকাগুলোর প্রতিবেদন, মানুষের সাক্ষাৎকার দেখলে বোঝা যায় কত অমানুষিক কষ্ট করতে হয়েছে শরণার্থীদের।
পথে পাড়ি দেওয়া এই মানুষগুলো পাকিদের সাথে ছাড়াও লড়াই করেছে প্রকৃতি ও রোগের সাথে। বর্ষা ছিল, ছিল কলেরা।
New York times এ প্রকাশিত Sydney Schanberg এর একটা প্রতিবেদন ৯ই জুন ১৯৭১ Palm beach Post পত্রিকায় পুনরায় প্রকাশ করা হয়। টাইমস ম্যাগাজিনে "The Bengali Refugees: A surfeit of woe" শিরোনামে ১৯শে জুন ১৯৭১ এ আরেকটা প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। দুই জায়গাতেই কলেরার কথা বলা হয়। বলা হয় প্রথম ধাক্কাতেই কলেরার শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে ৫ হাজারের বেশি মানুষ। মানুষগুলো হয়তো পাড়ি দিচ্ছে সীমান্তের ওপারে যাবে বলে কিন্তু পথের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢুলে পড়েছে। হিন্দু হলে হয়তো মুখে একটু আগুন দিয়েছে। পুরো শবদাহ হয় নি। বাকিটা কুকুর শকুনের পেটে চলে গিয়েছে।
করিমপুর রিফিউজি ক্যাম্পে পাঁচজন স্বেচ্ছাসেবক ২৪ ঘন্টায় তিনশত'র মত লাশ দাফন করে যারা কলেরায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।

জঙ্গলের মধ্য দিয়ে, নদী পাড়ি দিয়ে, খালি পায়ে, বাচ্চা কাঁধে নিয়ে মাইলের পর মাইল পাড়ি দিয়েছিলো লোকগুলো।
একবার সীমান্তের কাছে ৫০ জনের একটা শরণার্থী দল ছিল। ওরা খবর পায় পাকিস্তানিরা আসছে। তখন তারা পাট ক্ষেতে লুকিয়ে পড়ে। কিন্তু এক মহিলার কাছে বাচ্চা ছিল। বাচ্চা কেঁদে উঠলে সবাই মারা পড়বে। মা সবাইকে বাঁচানোর জন্য সন্তানের মুখ চেপে ধরে। বাচ্চা মারা যায়।¹
Dr.Mathis Bromberger নামক একজন জার্মান ফিজিশিয়ান বর্ণনা করেন বর্ষার মধ্যে কিভাবে দিন কাটিয়েছে শরণার্থীরা। অনেক শরণার্থী শিবির ছিল নিচু এলাকায়। একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে যেত। মানুষগুলো সারারাত দাড়িয়ে থাকতো। পানির মধ্যে তো আর শুয়ে পড়া যায় না। সকালে দেখা যেত অনেকে নিউমনিয়া বাধিয়ে ফেলেছে। কিন্তু তখন আবার ডাক্তারের অভাব।
আরেকজন ডাক্তার বলেছিলো, "লোকগুলো এখন আর কাঁদেও না!"¹
ক্যাম্পগুলোতে খাবার পানির অভাব ছিল। পানিশূন্যতায় ভুগেছে অনেকে।



শিশুদের কষ্ট ছিল বর্ণনাতীত। শিশুদের পাজরের সবকয়টা হাড় বাইরে থেকে গণনা করা যেত। খাদ্যের অভাব ছিল। ছিল না পর্যাপ্ত দুধ। অপুষ্টিতে কয়েক লক্ষ শিশু চলে গিয়েছিলো পরপারে। মৃত মায়ের স্তনে মুখ দিয়ে বাচ্চার দুধ পান করার চেষ্টার দৃশ্যটা ঠিক কতটা অমানবিক!

দি এইজ- এ Max Beattie এর একটা প্রতিবেদন প্রকাশ হয় ১৯৭১ সালের ২৩শে সেপ্টেম্বরে। এখান থেকে জানা যায় ৮.৯ মিলিয়ন শরণার্থীর মধ্যে ১.৫ মিলিয়নই শিশু। নিয়মিতই শিশু মারা যাচ্ছে। এরকম চলতে থাকলে জানা নেই যুদ্ধ শেষ হতে হতে কতজন শিশু বেঁচে থাকবে।
মাদার তেরেসার সাক্ষাৎকার থেকেও শিশুদের অবস্থার কথা জানা যায়। ঠিক কতটা খাদ্যের অভাব হলে ছয়মাসের বাচ্চাকেও প্রোটিন বিস্কুট খাওয়ানো হয় ভাবতে পারেন?²

বাচ্চাগুলো জন্মগ্রহণও করেছে কত নির্মমভাবে। কেউ গাছতলায়, কেউ নদীর ধারে, কেউ নৌকায়, কেউ শরণার্থী শিবিরে।
কোন এক মা পাকিস্তানিদের তাড়া খেয়ে বৃষ্টির মধ্যে সন্তানকে কোলে নিয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে এসেছে শিবিরে। কিন্তু এসে দেখে বাচ্চাটি মৃত। বাচ্চার কোন রোগ ছিল না, ছিল একটুখানি দুধের অভাব। বিপদের মধ্যে মায়েরও খেয়াল ছিল না বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানোর কথা। এক মায়ের ছয় সন্তান ছিল। কিন্তু সে যখন ক্যাম্পে পৌছায় তখন তার কোলের সন্তান ছাড়া আর কেউ জীবিত ছিল না!²
সল্ট লেক শরণার্থী শিবিরের নার্স Miss Bridge Battey এর সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায় ক্ষুধার জন্য কোন কোন বাবা-মা বাচ্চাদেরও পরিত্যাগ করে দিয়েছে। তিনি একটি বাচ্চাকে পেয়েছিলেন ড্রেনে পরে সেই বাচ্চাকে আরেক সন্তানহারা মা গ্রহণ করে।²
কি এক ভাগ্যের পরিহাস চলেছিলো মানুষগুলোর মধ্যে। কেউ খাদ্যের জন্য কাঁদছে, কেউ সন্তানের জন্য, কেউ স্বামীর জন্য, কেউ পরিবারের সবাইকে হারিয়ে।
৩ইএপ্রিল ১৯৭১ এ যুগান্তর পত্রিকায় দেবব্রত মুখোপাধ্যায়ের "এখান থেকে এরা কোন ভবিষ্যতে পাড়ি দেবে?" শিরোনামে একটা প্র্রতিবেদন প্রকাশ হয়। তার একটা অংশ নিচে দেওয়া হলোঃ
"আমরা সবে হাসনাবাদে নেমেছি, দেখি তীর থেকে বোঝা–মাথায় মানুষের সারি এগিয়ে আসছে। ওরা শুনেছে বারাসতে নাকি নতুন রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে। সেখানে যাবে।
–হাঁটবে অতদূর?
–আর কী করা বাবু? নৌকোয় আর কদ্দিন কাটে? ছিলো সের পাঁচেক চাল। তাই এক বেলা করে খেয়ে পাঁচ সাত দিন চলছে। শুনছি ক্যাম্পে নাকি চাল–ডাল দিতে আছে।
–ঠিক জানো তো যে বারাসতে গেলে জায়গা পাবে?
–তা ঠিক জানি না। যাই, দেখি ঘুরে গদি না পাই তবে না খেয়েই মরবো। মরণ যদি কপালে থাকে এ পাড়েই মরবো।"
মরা কত সহজ ছিল মানুষগুলোর কাছে। যেখানে জীবনে আগামী দিনটা কেমন যাবে জানা ছিল না সেখানে বোধহয় মরাটা খুব শান্তির!

কত মানুষ খাবারের জন্য নিজেদের নৌকা, থালা-বাসন বেঁচে দিতো। যদি অন্তত কিছু টাকা পাওয়া যায়। খাবার তো কিনতে পারবে.....
মানুষগুলো শরণার্থী শিবিরে আসছিলো কষ্টের বোঝা বহন করে। ভয়ংকর সব ঘটনার স্বাক্ষী হয়েছিলো একেকজন। কেউ হয়তো বন্দুকের নলের সামনে থেকে বেঁচে ফিরে এসেছে, কেউ ধর্ষণের শিকার হয়ে, কেউ শরীরে গুলি নিয়ে।
কত ধর্ষিতা ঘুমের মধ্যে পাগলের মত চিৎকার করে উঠতো। কেউ আবার সারাক্ষণ প্রলাপ বকতো। কত ধর্ষিতা মুক্তিযোদ্ধাদের দেকা পেয়ে বলতো আমাকে বুলেট দিয়ে শেষ করে দাও।
কোন ধর্ষিতা আবার গর্ভবতী হওয়ার কারণে সমাজে লজ্জার জন্য অবিবাহিত হওয়ার পরেও শরনার্থী শিবিরে গিয়ে মাথায় সিঁদুর দিয়ে থাকতো। শরণার্থী শিবিরে গিয়ে ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে গিয়েছিলো মানুষগুলো।

ভাল থাকার জায়গা ছিল না ক্যাম্পগুলোতে। গাদাগাদি করে থাকতে হতো সবাইকে। শরণার্থীদের একটা বড় সমস্যা ছিল এই আশ্রয়।
১৯৭১ সালের ২০শে মে The New York times-এ Homer A Jack এর একটা প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। শিরোনাম ছিল "Death in Golden Bangla Desh"
সেখান থেকে এই লাইনটার উপর দৃষ্টি দিলেই বোঝা যায় কত অভাব ছিল একটু আশ্রয়ের...
" In Calcutta and especially at the border, one sees thousands of recent refugees- only one-quarter in camps."

ক্যাম্পগুলো শরণার্থীদের বাসস্থান তিন ধরনের ছিল।
১. ছোট কুটিরের ছাউনি
২. ছোট তাবু
৩. সিমেন্টের শীট বা ড্রেইনের পাপ
একসময় ভারতে তাবু তৈরির সরঞ্জামেরও ঘাটতি দেখা দেয়।³

শরণার্থীরা জানতো না তারা আবার কবে দেশে ফিরবে। ইয়াহিয়া খান এদিকে সবাইকে আবার ফিরে আসার আহ্বান জানায়। ১৯৭১ সালের ২০শে জুলাই The New York times এ "Pakistan will try leader soon" শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এখানে ইয়াহিয়া খানের বরাত দিয়ে শরনার্থীদের দেশে ফিরে আসার কথা বলা হয়।
কিন্তু আবার ২৭শে জুলাই The New York times-এ "Vs-India Relations: A new law" শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। যেখানে একটা ছবি ছাপা হয়। এবং তাতে দেখা যায় যে কয়েকজন বাঙালী পাকিস্তানি মেজরকে তাদের গ্রামে ফেরত যেতে দেওয়ার অনুমতি দিতে অনুরোধ করছে। কেউ আবার পায়েও ধরেছে। কারণ ইয়াহিয়া সবাইকে ফেরত আসতে বলেছে। কিন্তু তাদেরকে ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়।
আবার ২৯শে সেপ্টেম্বর ১৯৭১ এ The New York times এ ইয়াহিয়া খানের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হয়। সেখানে সে শরনার্থীদের না ফিরে আসার জন্য ভারতকে দায়ী করে। সে দোষ দেয় যে ভারতীয় সৈন্য আর তাদের হামলার কারণে শরণার্থীরা আসতে পারছে না।
অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে যে ইয়াহিয়া শরণার্থীদের নিয়েও খেলা করেছে। তার কথায় সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগেছে শরণার্থীরা।


শিবিরেও মৃত্যু, ফিরলেও মৃত্যু এমন একটা অবস্থা ছিল তাদের। শিবিরেও মৃত্যুটা ছিল একটা স্বাভাবিক বিষয়। প্রথম থেকেই শরণার্থী শিবিরে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছিলো।
২২শে জুন,১৯৭১ এ ওয়াশিংটন ডেইলি নিউজে James Foster এর একটা রিপোর্ট প্রকাশ হয়। রিপোর্টটির শিরোনামই ছিল "600,000 of 5 million Refugees Have died."
১৪ই সেপ্টেম্বর,১৯৭১-এ Max Beattie এর আরেকটা রিপোর্ট প্রকাশ হয়। যার হেডলাইন ছিল "Death reaps a Young hervest"
যেখানে মৃত্যুই শেষ কথা ছিল, যেখানে জুনেই পঞ্চাশ লাখ শরণার্থীর মধ্যে ছয় লাখ শেষ হয়ে যায় সেখানে ত্রিশ লাখের হিসাব খোজাটা বড় নিম্ন মানসিকতার পরিচয়।
এ অবস্থার মধ্যে শেষ পর্যন্ত এক কোটি শরনার্থীর মধ্যে যে আসলে কত মানুষ বেঁচেছিলো সেটা সৃষ্টিকর্তাই জানেন।
১৭ই ডিসেম্বর, ১৯৭১এ The New York Times এ "East Pakistan: In Brief" শিরোনামে একটা প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওখানেও শরনার্থীদের শেষ পর্যন্ত কতজন বেঁচে থাকবে সেটা নিয়ে আশংকা করা হয়।
"The number of refugees who fled to India has been estimated at 10 million and it is not known how many of these survive or how many will choose to return."


শরণার্থীদের ভারতগমন:

মে মাসে সবথেকে বেশি মানুষ শিবিরে গেছে।
The New York Times বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী শরণার্থীদের শিবিরে যাওয়ার সংখ্যাঃ
মে মাসের ১তারিখের মধ্যে ৬৫০০০।
জুনের ৩ তারিখে ৪.৮ মিলিয়ন
জুনের ১৫ তারিখে ৫.৮ মিলিয়ন
জুলাইয়ের শেষদিকে ৭ মিলিয়ন
সেপ্টেম্বরের প্রথমদিকে ৮ মিলিয়ন
ডিসেম্বরে যুদ্ধ শেষ হতে হতে ১০ মিলিয়ন।
টাইমস ম্যাগাজিনেঃ
আগস্টের প্রথমেই ৭.৫ মিলিয়নের কথা বল হয়েছিলো।
অক্টোবরের শেষেরদিকে ৯ মিলিয়ন।
দি এইজ এ সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে ৮.৯ মিলিয়নের কথা বলা হয়েছিল।
ওয়াশিংটন ডেইলি নিউজে জুনের শেষের দিকে ৫মিলিয়নের কথা বলা আছে।

“বাংলাদেশ ডকুমেন্টস”, বহির্বিশ্ব বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ভারত কর্তৃক প্রকাশিত, ১৯৭২
২৫শে মার্চ থেকে ১৫ই ডিসেম্বর, ১৯৭১ পর্যন্ত³ শরণার্থীদের আগমনঃ
পশ্চিমবঙ্গঃ ৭৪,৯৩,৪৭৪ জন
ত্রিপুরাঃ১৪,১৬,৪৯১ জন
মেঘালয়ঃ ৬,৬৭,৯৮৬জন
আসামঃ৩,১২,৭১৩ জন
বিহারঃ৮,৬৪১ জন
মোটঃ৯৮,৯৯,৩০৫ জন


শরণার্থীদের জন্য সারা পৃথিবীর অনেক মানুষ অনেক কিছু করেছিলো।
তার মধ্যে দুইটা আশ্চর্য ঘটনা হলোঃ
১৯৭১ সালের ৩ই ডিসেম্বর প্যারিসের অর্লি বিমানবন্দরে পাকিস্তানি বোয়িং ৭২০ বিমান জিম্মি করে "জ্যঁ ইউজিন পল ক্যুয়ে"। তার দাবি ছিল বাংলাদেশে ঔষধ পাঠানো। যদিও পরে তিনি ধরা পড়ে যান এবং পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়।


২০ নভেম্বর ১৯৭১ সালে একটা গ্রুপ মেলবোর্ন থেকে ৪০০ মাইল ট্রেকিং করে। তারা অস্ট্রেলিয়া সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বাংলাদেশকে সাহায্যের জন্য। ৭ই ডিসেম্বর তারা ট্রেকিং শেষ করে। যদিও সবাই শেষ পর্যন্ত যেতে পারে নি সাতজন ছাড়া। বেশিরভাগই অসুস্থ হয়ে যায়। এই গ্রুপটার নেতৃত্ব দেয় Dr. David Ellis

এভাবেই শত শত জানা অজানা গল্প মিলে তৈরি হয়েছিলো শরনার্থীদের জীবন। যেখানে মৃত্যু ছিল মুক্তি, বেঁচে থাকা ছিল মিরাকল।

তথ্যসূত্রঃ ¹[Pakistan: The Ravaging of Golden Bengal– Times Magazine]
² [How Pakistan Violated Human Rights In Bangladesh- Indian Councils of world affairs, New dilhi]
³ [শরণার্থী ও শরণার্থী শিবির সম্পর্কিত কিছু তথ্য,৫৫৯পৃষ্টা, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধঃ দলিলপত্র অষ্টম খণ্ড]

কৃতজ্ঞতা:
১. Liberation of Bangladesh in Time Magazine
২. A story of anguish and action- UNHCR Report
৩. The New York Times Archive
8.বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধঃ দলিলপত্র থেকে বলছি
৫.মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৭
৬৫টি মন্তব্য ৪৪টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সত্যি বলছি, চাইবো না

লিখেছেন নওরিন হোসেন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:০৮



সত্যি বলছি, এভাবে আর চাইবো না।
ধূসর মরুর বুকের তপ্ত বালির শপথ ,
বালির গভীরে অবহেলায় লুকানো মৃত পথিকের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কি 'কিংস পার্টি' গঠনের চেষ্টা করছেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:১০


শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামক সংগঠন টি রাজনৈতিক দল গঠন করবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলছেই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্থান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্থান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×