দিনকাল চলে যাচ্ছে । যেভাবে চলে যায় আরো আট-দশটা দিন । কোন ছন্দ নেই, নেই ছন্দ পতনও, কেন যেন রোবটিক ভাবে কিংবা বলা যায় রোবকপের মতন যান্ত্রিক ভাবেই কেটে যাচ্ছে । কিন্তু নিজেকে যন্ত্র মনে করতে কার ভালো লাগে ?? আমরা লাগে না । একটা সময় , সেই সময় যে সময়টা সব মানুষের জীবনেই খুব প্রানবন্ত থাকে , থাকে উচ্ছলতা, সেই সময় গুলোতে একটা লাইন খুব ব্যবহার করতাম ।
" আর দিও না যন্ত্রণা
মানুষ আমি যন্ত্র না । "
কিন্তু আজ সেই লাইন শোনার জন্যও কিংবা শোনানোর জন্যে কোন সময় নেই । এই সব আবেগ- উচ্ছ্বাস এখন অপ্রয়োজনীয়, প্রয়োজন জীবন যাপনের জন্য যথাযথ রসদের সংস্থান করা । আমাদের দিবানিশি এই ছুটে চলার পিছনে স্রেফ একটা উদ্দেশ্য বেঁচে থাকা, কষ্ট করে হলেও বেঁচে থাকা, বেঁচে থেকে স্বপ্নভংগের কষ্ট পাওয়া !! হায় জীবন !!
সেই একজীবনে আমরা কতকিছুই না চাই .... কিন্তু কতটুকুই বা পাই ?? সেই পাওয়া-না পাওয়ার সমীকরণ মিলাতে মিলাতেই হঠাৎই ফুরিয়ে যায় শলতের তেল, নিভে যায় দীপশিখা, শেষ হয়ে যায় একটা জীবন; আরো দশটা জীবনের অতৃপ্তি নিয়ে । অথচ, সেই অপূর্ণতাকে স্পর্শ করতে, স্বপ্নভংগের দুঃখ নিতে , অতৃপ্তির স্বাদ পেতেই আমরা মরিয়া । এতো আমাদের ভয়াবহ দুঃখ বিলাস !?। তবে কি আমরা খুব দুঃখবিলাসী, সবাই নিপূণ করে সাজিয়ে যাই অতৃপ্তির সাম্পান ?? হায়রে জীবন , হায়রে মানুষ !!! আচ্ছা মানুষ কি জানে, মানুষের চোখে এতো কিসের বিষাদ ??
হ্যা, বিষাদ ছুঁয়েছে আজ, মন ভালো নেই । ঘর-মন-জানালায় বৃষ্টির নোনতা স্বাদ । নোনা জলে ভেসে যাক, ধুয়ে যাক জীবনের উত্তাপ । আমি ক্রমে ক্রমে ভুলে যাচ্ছি বেঁচে থাকার উচ্ছ্বাস । বয়সের সাথে সাথে নিস্তরঙ্গ হতে থাকি, জীবন-মৃত্যৃ আমাকে আর আন্দোলিত করে না । যেন বয়সই শিখিয়েছে থিতু হও । একটু একটু করে স্থবির হতে হয় ....... এই স্থবরিতা শিকড়ে আটকে যায় বোধ । নিজেকে বোধহীন একটা যন্ত্রের মতন মনেহয় ।
আর আট-দশাটা দিনের মতনই সেই গতানুগতিক একট, প্রতিটি দিন কেটে যায় , জীবনও ছুটে চলে সেই অতৃপ্তির স্বাদ নিতে । আমি চাই না, মন চায় না !! কেউ না চায় আমি তো চাই দোয়েলের মতোই একটা চঞ্চল জীবন, ফড়িং এর মতোন বর্ণিল পাখা । যে জীবন ফড়িংয়ের দোয়েলের
মানুষের সাথে দেখা হয়নাকো তার ।