মধ্যপ্রাচ্যের ধ্বংস কি অনিবার্য? বাংলাদেশের পরিণতি ও কি তাই?
ড. মতিউর রহমান
ইরাক ও লিবিয়ার পরিকল্পিত ধ্বংস দ্রতগতিতে এগিয়ে চলছে, সিরিয়ার ধ্বংসও পিছিয়ে নেই। এসবের শুরু কখন থেকে এবং কিভাবে তা ভুললে চলবে না। ইরাক-যুদ্ধের পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে এই অবস্থার শুরু, কিংবা বলা যেতে পারে তারও আগে - আফগানিস্তান যুদ্ধ এবং তার পেছনের মূল কারণ ৯/১১/২০০১ নিউ ইয়র্কের টুইন টাওয়ার এর ওপর সেই ভয়াল হামলা থেকেই এসবের শুরু। শেষ কোথায় একমাত্র আল্লাহই জানেন। ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়া তো গেছেই, এখন দেখে মনে হচ্ছে সৌদি আরব এবং মিশর-সহ মধ্যপ্রাচ্যের সব দেশেরই এই পরিণতি হতে যাচ্ছে। ইয়েমেন, পাকিস্তানও সেদিকেই হাটছে, আফ্রিকার অনেক মুসলিম দেশের অবস্থা ও তথৈবচ।
এসবের জন্য অনেকে না বুঝে দোষারোপ করছেন ইসলাম ধর্মকে অথবা ধর্মপ্রান মুসলমানদেরকে। আসলে ইসলামের কারণে এটা হয়নি, বরং মুসলমানরা ইসলামী আদর্শ থেকে বিচ্যূত হবার ফলেই এসব হয়েছে, হচ্ছে। মুসলমানদের শত্রুদের চতুর পরিকল্পনা অনুসারে নির্বোধ, মূর্খ মুসলমানরাই একে অপরকে ধ্বংস করার উন্মত্ততায় মেতে ওঠেছে। স্বৈরতান্ত্রিক জালিম সরকার এবং রাজতন্ত্রকে ইসলাম অনুমোদন করেনা - এ ধরনের সরকার নিজেদের ক্ষমতার স্বার্থে নাগরিকদের স্বার্থ এবং রাষ্ট্র তথা জাতির স্বার্থকে বিকিয়ে দিতে পারে। ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়ায় স্বৈরশাসকদের ক্ষমতার দম্ভ এবং লোভই সেসব দেশের ধ্বংসের কারণ হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে এইরকম শাসক বহু যুগ ধরে ছিল এবং এখনো আছে, যার অনিবার্য পরিণতেই সেখানে এখন এই অবস্থা।
বাংলাদেশসহ অনেক অগণতান্ত্রিক মুসলিম দেশেও এখন একই অবস্থা বিরাজ করছে, অনেকটা সুপ্ত আগ্নেয়গিরির ওপর দাঁড়িয়ে আছে এইসব দেশ। বাংলাদেশে অগণতান্ত্রিক, স্বৈরতান্ত্রিক সরকার আর বেশিদিন ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশের অবস্থাও আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইরাক ও লিবিয়ার পথে যেতে বাধ্য। যদি তাই হয়, তাহলে সেটা হবে ১৬ কোটি জনগণের জন্য অত্যন্ত বেদনা ও অপরিসীম ভোগান্তির কারণ, এবং যুদ্ধ করে এক-সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত রাষ্ট্রের অস্তিত্বের জন্য সরাসরি হুমকি।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:৫৮