ঘরে ফেরা
মনিকা, তোমার শুকনো মাঠে চাষ-বাস কঠিন ছিলো জানি,
ভাবিনি সেথায় লুকনো ছিলো ভালবাসার এক স্বর্ণখনি;
এখন মনে হয় কেনো যে লাঙ্গল-কুদোল চালাইনি নিরবধি,
যৌবনের উন্মত্ততায় কেনো ছেড়ে গেলাম চেনা পরিধি?
হারিয়েছি ঘর, গিয়েছি নির্বাসনে স্বেচ্ছায়,
বুঝতে পারিনি তোমার ভালবাসা রঙিন স্বপ্নের নেশায় ৷
ভিনদেশী রমনী জড়ালো বাহুডোরে, উষ্ণ-আলিঙ্গনে
জ্বালিয়ে দিয়ে আশার আলো অতি সঙ্গোপনে ৷
তাই ধরা দিতে গেলাম তার কাছে সাগর ডিঙিয়ে,
কে পারে তার লোভনীয় ইশারা দিতে ফিরিয়ে?
মিটিয়েছি চাহিদা তার, দিয়ে রক্ত-জল;
যতই দেই, ততই বলে - আরো দিলে ভালো।
চষেছি ওর উঁচু-নিচু বন-বাদাড় সুখের সন্ধানে,
ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফলহীন বীজ উর্বর মাঠে-ময়দানে ৷
কিন্তু তোমাকে ভুলতে পারিনি মোটেও, মনিকা -
তুমি যে আমার কাছে না-পাওয়া অনন্য প্রেমিকা ৷
হয়তো ভাবছো এ কী ছল-চাতুরী আবার,
এতদিন পর কীসের এ দেন-দরবার?
জানি বসে নেই তুমি, চলেছো এগিয়ে -
তুমি কি সুখী? - সদা ভাবি এই নিয়ে ৷
আমার ক্ষমাহীন ভুলের জন্য দেবে চাবুকের কষাঘাত?
নেই দ্বিধা, অকপটে দেবো প্রসারিত দুহাত ৷
দাও শাস্তি যত পারো, যেমন ইচ্ছা,
কিন্তু ভেবোনা আমার এ ফিরে আসা একরত্তিও মিথ্যা ৷
মর-মর যুদ্ধের পর যে মুকুট পেয়েছি রণক্ষেত্রে,
তা চুমোয়-চুমোয় উঠিয়ে দেবো তোমার কোমল হাতে ৷
এ তোমার দূরাশা - বলে দিয়োনা তখন তাড়িয়ে;
মনিকা, একবার শুধু মোরে বুকে নাও দুহাত বাড়িয়ে ৷
- মতিউর রহমান