করমর্দনটি দেখে আমি কিন্তু মোটেই অবাক হইনি। এই হলো প্রকৃত আওয়ামী লীগ বিশেষ করে মুজিব-উত্তর আওয়ামী লীগ। দলীয় কিছু নাদান দেশপ্রেমিক বাধ না সাধলে তারা সারাদিন গোলাম আজমের পা চাটাকে (আক্ষরিক অর্থে) প্রধান এজেন্ডা বানিয়ে নিত। কিছু অবোধ এবং গোয়ারগোবিন্দ কর্মী (নেতা নয়) কিংবা শুভানুধ্যায়ীদের চাপে তাদেরকে বারবার সেই এজেন্ডা থেকে ফিরে আসতে হয়। বেচারা আওয়ামী লীগ!
আওয়ামী লীগের অনেক বয়স্ক শিশু দল করে মাইকে শেখ মুজিবের ভাষণ শোনার জন্য। শেখ হাসিনা কেন, পরনে শেখ মুজিবের লুঙ্গি এবং ঠোটে তার প্রিয় পাইপ লাগানো যে কোন লোককে তারা অবলীলায় নেতা মেনে এগিয়ে যেত।
মাইকে কিংবা সিডি প্লেয়ারে মুজিবের ভাষণ শুনতে শুনতে তাদের মনে হয় মুজিব কেবল ভাষণ দিয়েই যাচ্ছেন; সেই প্রাক-বাংলাদেশ, সেই ইয়াহিয়া, সেই যুদ্ধ প্রস্তুতি সবই আছে হুবহু। অবিকল। তাদের মধ্যে যারা একটু এগিয়ে তারা ভাবে আসলে শেখ মুজিব একদম মারা যাননি। তিনি আছেন, কথা বলছেন, হাটছেন, বক্তৃতা করছেন - সবই শেখ হাসিনার মধ্য দিয়ে। ঠিক লোককাহিনীর জ্বীনে আছর করা মানুষের মতো। ভুলেও তাদের মনে হয় না হাসিনা একজন সম্পূর্ণ আলাদা মানুষ। তিনি শেখ মুজিব নন কিছুতেই। তিনি প্রচুর দেশবিরোধী সিদ্ধান্ত নেন। তিনি প্রচুর মিথ্যা কথা বলেন। তিনি প্রচুর অহেতুক হাস্যকর মন্তব্য করেন। তিনি মৌলিক কোন স্বপ্ন দেখতে পারেন না। তার নিজস্ব কোন ব্যক্তিসত্ত্বা নেই। তিনি কেবল বলে চলেন- শেখ মুজিব এই স্বপ্ন দেখতেন। কেবল শেখ মুজিবের কন্যা হওয়ার সুবাদে তারই ছায়াতলে তিনি দলীয় কর্মীদেরকে ক্রমাগত বোকা বানিয়ে যাচ্ছেন।
গৃহস্থের বাছুর মরে গেলে তার গাভী দুধ দেয়া বন্ধ করে দেয়, গৃহস্থ তাই কিছু খড়, কাদামাটি আর মৃত বাছুরটির চামড়া দিয়ে একটি কৃত্রিম বাছুর বানিয়ে গাভীটির সামনে রেখে দিলে গাভী অবলীলায় দুধ দিতে থাকে। তার দলীয় কর্মীগণের সামনে হাসিনা তেমনি একটি বাছুর, মুজিব সত্ত্বার একটি মৌলিকত্বহীন নকল।
মুজিবের অনেক কিছু নিয়ে আমার দ্বিতীয় মত থাকলেও, বাঙালীর সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান অসীম এবং অখন্ডনীয়। কোথায় শেখ মুজিব আর কোথায় শেখ হাসিনা!
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সকাল ১১:১৭