আপনারা ইতিমধ্যে জানেন যে আমরা সিলেটে কিছু মানুষের মধ্যে ত্রান বিতরন সম্পন্ন করেছি। ইতিমধ্যে অনেকেই আবার দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যার্থদের মাঝে ত্রান দেয়ার কথা বলছেন। আমি বিনয়ের সাথে বলতে চাই, লোক দেখানো ত্রান কার্যক্রম বাদ দিয়ে সত্যিকার ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে চাইলে পুরো কার্যক্রম একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়ে, যা কিছুটা সময় সাপেক্ষ। যা মন চাইলেই হুট করে দেয়া যায় না। তাই আমরা অবশ্যই কিছুটা সময় নিবো।
যে কোন দুর্গম অঞ্চলে যাওয়ার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ যাতায়াত মাধ্যম, খরচ এবং নিরাপত্তা। তাই এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সঠিক ধারনা না নিয়ে হুজুগের বসে কোথাও ত্রান পরিচলনা করা উচিত হবে না। এমন অনেক দুর্গম অঞ্চল আছে, যেখানে বেসরকারীভাবে ত্রান কার্যক্রম চালানো কঠিন। পাহাড়ী ঢল, নদীর স্রোতের তীব্রতা এবং সর্বপরি স্থানীয় ভু- প্রকৃতি সম্পর্কে ধারনা না থাকায় অনেকেই সিলেটে ত্রান কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে বিপদে পড়েছেন এবং নিরাপত্তাহীনতার মুখোমুখী হয়েছে।
সবচেয়ে বড় কথা, বন্যার পানি কতটা দীর্ঘস্থায়ী হয়, সেটার উপর নির্ভর করে ক্ষয়ক্ষতি এবং সাহায্য নির্ধারন করা উচিত। দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে, আমরা সবাই বন্যার সময় মানুষের কথা বিবেচনা করছি, কিন্তু উক্ত অঞ্চলের গবাদী পশুদের কথা কেউ চিন্তা করছি না। স্থানীয় কৃষকরা গবাদী পশুদের খাদ্য নিয়ে প্রচন্ড চিন্তিত। কারন ইতিমধ্যে এই জমা পানিতে অনেক ঘাস পচে গেছে, কৃষি জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। অল্প যা বেঁচে আছে, তা দিয়ে পুরো চাহিদা হয়ত মেটানো সম্ভব নয়।
আমাদেরকে একটা জিনিস বিবেচনা করতে হবে, অঞ্চল ভেদে সকল মানুষ ভিন্ন হয়, চাহিদা ভিন্ন হয়। আমাদের অনেক মানুষ আছেন, যাদের আত্মমর্যার স্থানটিকে তারা ক্ষুন হতে দিতে চান না। তাদের অল্প কিছু সম্বলের মধ্যে থাকে কিছু গবাদী পশু যাকে কেন্দ্র করে তারা ভবিষ্যতের স্বপ্ন বুনেন। হয়ত পশু খাদ্য না পেলে, সময়ের আগে পানির দরে পশু বিক্রয় করে ফেলতে হবে। এটা শুধু পশু বিক্রি নয় বরং একই সাথে একটা পরিবারের স্বপ্নও বিক্রি। তাই আমি এদের চোখে এক অদ্ভুত হতাশা দেখেছি। তাই এই বন্যা পরবর্তী সময়ে এই বিষয়টিও আমাদের মাথায় আছে।
পাশাপাশি, কুড়িগ্রাম ও নীলফামারীতে বন্যার বিষয়ে আমাদের নজরে আছে এবং আমাদের পক্ষ থেকে দায়িত্বশীল বেশ কিছু মানুষ এই ব্যাপারে আমাদেরকে তথ্য দিয়ে সাহায্য করার জন্য তৃণমুল পর্যায়ে কাজ করছেন। আমরা উপযুক্ত তথ্য পাওয়ার পর ইনশাল্লাহ এই বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহন করব।
আমরা যে সিলেটে যে ত্রান কার্য পরিচালনা করেছি, সেই ব্যাপারে বিস্তারিত পোস্ট অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই দেয়া হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুন, ২০২২ দুপুর ২:৪৩