somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কাল্পনিক_ভালোবাসা
বহুদিন আগে কোন এক বারান্দায় শেষ বিকেলের আলোয় আলোকিত উড়ন্ত খোলা চুলের এক তীক্ষ্ণ হৃদয়হরনকারী দৃষ্টি সম্পন্ন তরুনীকে দেখে ভেবেছিলাম, আমি যাদুকর হব। মানুষ বশীকরণের যাদু শিখে, তাকে বশ করে নিশ্চিন্তে কাটিয়ে দিব সারাটি জীবন।

এ কেমন ধরনের শিক্ষক, এ কেমন শিক্ষা ব্যবস্থা? আর কত অরিত্রীকে এইভাবে খুনের শিকার হতে হবে?

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকে সংবাদপত্রে জানতে পারলাম, রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্কুলে নকলের অভিযোগে অপমানের জের ধরে সে আত্মহত্যা করেছে। ছাত্রীর নাম অরিত্রী। আসুন কিছু বিষয়ে জানি।

'নকল' এর অভিযোগঃ
রোববার পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষক অরিত্রির কাছে মোবাইল ফোন পায়। মোবাইলে নকল করছে—এমন অভিযোগে অরিত্রিকে তার বাবা-মাকে নিয়ে স্কুলে যেতে বলা হয়। একটি সুত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা নিষেধ। তাই অরিত্রীর ব্যাগে যখন মোবাইল ফোন পাওয়া যায়, তখনই তাঁর বিরুদ্ধে নকলের অভিযোগ আনা হয় এবং সুত্র মতে অভিযোগটি প্রমানিত হয়নি। শুধুমাত্র মোবাইল ফোন থাকার অপরাধে নকল করার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়।

বাবা মা কে অপমানঃ
অরিত্রী যখন তাঁর বাবা মাকে নিয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষিকার কক্ষে আসে, তখন তাঁর বাবা মাকেও অপমান করা হয়। এক পর্যায়ে রুম থেকে বের করে দেয়া হয়। অরিত্রী তার শাস্তিস্বরূপ ‘ট্রান্সফার’ আদেশ বদলাতে বাবার সামনে প্রিন্সিপালের কাছে অনুনয়-বিনয় করে ক্ষমা চেয়েছিল। কিন্তু তাঁর কথা কেউ শুনেছি। প্রিন্সিপালের কাছে গিয়েও অরিত্রী এবং তাঁর বাবাকে একই অপমানের মুখোমুখি হতে হয়।

আত্মহত্যাঃ
অরিত্রীর বয়স মাত্র ১৫ বছর। মাত্র ১৫ বছরের একটা মানুষ কতখানি অপমানিত হলে আত্মহত্যার মত একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারে? আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত কি স্বাভাবিক মানসিকতায় নেয়া যায়? একজন শিশুকে কতখানি নিপিড়ণ করলে সে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে?

আমাদের প্রতিবাদের জায়গাঃ

এখনও বাবা মা হতে পারি নি তবে মাঝে মাঝে কেমন যেন একটা অদ্ভুত অনুভুতি জন্মায়, কাজ করে। ১৫ বছরের একটা ফুটফুটে মেয়ে যখন চোখের সামনে এইভাবে মারা যায় - এই ব্যাথা একজন পিতা কিভাবে সহ্য করবে? কিভাবে তাঁর মা বেঁচে থাকবে?

বিদ্যালয়ের কাজ শিশুদের জীবনবাদী করে তোলা, ভুলগুলো শুধরে দেওয়া; নিশ্চয়ই মৃত্যুতে প্ররোচিত করা নয়। শাস্তি দিয়ে আশ্রয়চ্যুত করা নয়। অপমানিত করাও নয়। বিদ্যালয় নিশ্চয়ই কারাগার নয়, কোনো শৃঙ্খলা বাহিনীও নয়। প্রচন্ড ঘৃণা হচ্ছে আমার।

বলা হচ্ছে, নবম শ্রেণির এই শিক্ষার্থীর কাছে পরীক্ষার হলে মোবাইল পাওয়া গিয়েছিল। নবম শ্রেণির পরীক্ষা মানেই অভ্যন্তরীণ মেধা যাচাইয়ের উদ্যোগ। এটা জাতীয় পর্যায়ের কোনো ‘পাবলিক পরীক্ষা’ নয়। অভ্যন্তরীণ পরীক্ষাগুলো নেওয়াই হয় অধিকতর মানোন্নয়নের লক্ষ্যে। শিক্ষার্থীদের ভুল-শুদ্ধ যাচাই-বাছাইয়ের জন্য। তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেওয়া হয়, খুদে এই শিক্ষার্থী ‘অসদুপায়’ অবলম্বন করেছিল, কিন্তু সেটা কি সংশোধনের অযোগ্য ছিল? আমাদের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোয় এটা কি এমন বিরল ঘটনা, যার জন্য শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয় ত্যাগের দণ্ড দেওয়া হয়?

আলতাফ পারভেজ নামের একজন কলামিষ্ট প্রথম আলোয় লিখেছেন, ভাবতে অবাক লাগছে, কীভাবে এই বিদ্যালয় ‘নামী প্রতিষ্ঠান’ হয়ে উঠল, যেখানে একজন ছাত্রীর কাছে একটা মোবাইল ফোন পেলে তাকে স্কুল ছাড়ার শাস্তি পেতে হয়? এবং যেখানে অভিভাবকসহ শিক্ষার্থীকে ক্ষমা চেয়েও রেহাই মেলে না। প্রচারমাধ্যমের ভাষ্য অনুযায়ী, অরিত্রী তার শাস্তিস্বরূপ ‘ট্রান্সফার’ আদেশ বদলাতে বাবার সামনে প্রিন্সিপালের কাছে অনুনয়-বিনয় করে ক্ষমা চেয়েছিল। সেখানে ব্যর্থ হয়ে বাসায় গিয়ে আত্মহত্যা করে। পূর্বাপর ঘটনাবলি কতটা সত্য, সেটা তদন্তসাপেক্ষ। সব অভিভাবকই এর সত্যাসত্য জানতে আগ্রহী। তবে যদি সত্য হয়, তাহলে বিদ্যালয়ের সঙ্গে শ্রমশিবিরের পার্থক্য রইল কোথায়? শিশুরা ক্ষমা চেয়েও ক্ষমা পাবে না?বিদ্যালয়গুলোর জন্য এমন নির্মম আচরণবিধি কবে, কাদের অভিভাবকত্বে তৈরি হলো? এমন আচরণবিধি কতটা শিশুমনস্তত্ত্বসম্মত? এ কি আমাদের সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়া সর্বগ্রাসী সামগ্রিক একনায়কতান্ত্রিক সংস্কৃতির কোনো খুদে প্রকাশ?


শাস্তি চাইঃ
আমি এই বর্বর, নিষ্ঠুর ঘটনার সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চাই।

অরিত্রী তুমি আমাদেরকে মাফ করে দিও বোন! আমরা এখনও মানুষের সমাজ তৈরী করতে পারি নাই।

তথ্য সুত্রঃ
প্রথম আলো, কালের কন্ঠ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ব্যক্তিগত যোগাযোগ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৩৯
৪৮টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২১

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

ট্রাম্প হচ্ছে একজন আপাদমস্তক বিজনেসম্যান। কমলা হ্যা্রিস যেহেতু ইন্ডিয়ান বংশোদ্ভূত তাই ইন্ডিয়ান ভোটার টানার জন্য সে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে জাস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

চট্রগ্রামে যৌথবাহিনীর ওপর ইসকনের এসিড হামলা সাত পুলিশ আহত।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৪৩

এসিড নিক্ষেপে আহত পুলিশ সদস্য



চট্টগ্রামে পুলিশের ওপর ইসকন সমর্থকদের হামলা ও এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসকন

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৭


INTERNATIONAL SOCIETY FOR KRISHNA CONSCIOUSNESS যার সংক্ষিপ্ত রূপ হলো ISKCON এর বাংলা অর্থ হল আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ। যে সংঘের ঘোষিত উদ্দেশ্য হল মানুষকে কৃষ্ণভাবনাময় করে তোলার মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রকৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

তুমি তাদের কাছেই যাবে তারা তোমার মূল্য বুঝবে....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৪


মৃত্যুর পূর্বে একজন পিতা তার সন্তানকে কাছে ডেকে বললেন, 'এই নাও, এই ঘড়িটা আমি তোমাকে দিলাম। আমাকে দিয়েছিলো তোমার দাদা। ঘড়িটা দুইশত বছর আগের। তবে, ঘড়িটা নেওয়ার আগে তোমাকে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×