somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাসযোগ্য দেশ আর কতদূর

২৩ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১২:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার জন্মভূমি বাংলাদেশ, একটি সুজলা, সুফলা, শস্য-শ্যামলার দেশ। বাংলাদেশের মতো এমন সমতল উর্বর দেশ খুব কমই আছে। লোকে বলে যেখানে বীজ পড়ে সেখানেই শস্য ফলে। অন্যান্য দেশের মতো এত কষ্ট করে শস্য ফলাতে হয় না। এ দেশ বহু সমৃদ্ধির দেশ; কিন্তু যে ঘটনাগুলো ঘটে তাতে দেশে বাসযোগ্য পরিবেশ থাকে না। আমাদের দেশ অর্থনৈতিক দিক দিয়ে দুর্বল তা বলা কতটা যুক্তিসঙ্গত তা জানি না। কিন্তু এই কথা বলতে পারি যে, দেশে অনেক অর্থ, সম্পাদ রয়েছে। আর তা রয়েছে মুষ্টিমেয় কিছু লোকের হাতে। তারা টাকার পাহাড় গড়ছে, কেউবা গরিবদের শোষণ করে টাকার মালিক হচ্ছে। কেউবা গরিব-দুঃখী, আদিবাসী তাদের নামে বিদেশ থেকে সাহায্য পাচ্ছে, কিন্তু সেসব তাদের কিছু পরিমাণ দিয়ে বাকি টাকা নিজেদের কাজে লাগাচ্ছে। ফলে এক শ্রেণী হচ্ছে ধনী; আরেক শ্রেণী গরিব হচ্ছে। রেল স্টেশনের বস্তিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, অপর্যাপ্ত স্থান, বিপদসঙ্কুল স্থানে তাদের বসবাস। না দেখলে এসব বোঝা যায় না। আমাদের দেশ কি সত্যিই বাসযোগ্য? নইলে কেন এত হানাহানি, বিদ্বেষ, দুর্নীতি, হত্যা, ধর্ষণ, অশানত্মি, বিভেদ? কেন মানুষ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। কেন মানুষ দেশানত্মরী হয়? কেন ফেলানীর মতো নিরীহ মানুষ পাখির মতো মরে? আজ সেই বোন ফেলানীর জন্য দুঃখ হচ্ছে। দৃশ্য চোখে ভাসলেই বেদনায় অন্তর পুড়ে যায়। হয়তো বাসযোগ্য আশ্রয়ের জন্য গিয়েছিল সে। তার বাবার চোখে ছিল স্বপ্ন। ভারতে গেলে জীবনে উন্নতি হবে। কিছুদিন পর দেশে ফেরার স্বপ্ন দেখে। মেয়েটির চোখেও স্বপ্ন ছিল নববধূ হয়ে শ্বশুরবাড়িতে যাবে। কিন্তু হায়। পাখির মতো জীবন দিতে হলো তাকে। বিএসএফের কাছ থেকে বাঁচার জন্য কাঁটাতার ডিঙ্গিয়ে পাড়ি দিচ্ছিল। তার জামা কাঁটাতারে আটকে তাকে বাদুরের মতো ঝুলিয়ে রাখল। বাঁচার জন্য বাবা গো! বলে চিৎকার দিতেই বিএসএফের গুলি এসে তাকে বিদ্ধ করল এবং তার চিৎকার থামিয়ে দিল। সে তবুও চার ঘণ্টা পাখির মতোই ঝুলে ছিল। এমন দৃশ্য দেখে কি থাকা যায়?
বিএসএফের হাতে বাংলাদেশী মানুষ অনেক নিগৃহীত হয়, কেউ মারা যায়। এত লোক কষ্ট পায়, মারা যায় তবুও কেন সেখানে যায়?
তার কারণ তাদের কিছু অভাব রয়েছে। এ অভাব পূরণ করতেই ভারতের কাছে ভিৰা চাইতে হয়, ভারতে পালিয়ে যেতে হয়। মুক্তিযুদ্ধের পর অনেক আদিবাসীই ভারতে পালিয়ে যায় দেশে নিরাপত্তার অভাবে। এখনও তাই হয়। নিরাপত্তার অভাব, অর্থনৈতিক অভাব এগুলোর কারণে অনেক মানুষ মৃতু্য অবধারিত জেনেও দেশ ছেড়ে পালিয়ে বেড়ায়। যেদিন এ দেশের মানুষ মিলেমিশে থাকবে, পরস্পর পরস্পরকে সাহায্য-সহযোগিতা করবে, একে অপরের দুঃখ-কষ্ট বুঝবে, যেদিন এ দেশে শানত্মি প্রতিষ্ঠা হবে, ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা হবে, যযে দিন সবাই সবাইকে মানুষ বলে, ভাই বলে কাছে টানবে সেদিন কেউ এই দেশ ছেড়ে চলে যাবে না, অন্য দেশে পা দেবে না, পাখির মতো কেউ প্রাণ হারাবে না।
আমাদের দেশে অর্থনৈতিক দুর্বলতার পাশাপাশি সামাজিক অবহেলা, জনগণের অসচেতনতাও দেশটাকে বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। প্রকৃতি, গাছপালা নিধন, নদ-নদীতে ময়লা আবর্জনা নিৰেপ, যেখানে সেখানে ময়লা-থুথু ফেলা এগুলো দেশটাকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলছে। তাই আমাদের সবার উচিত দেশটাকে বাসযোগ্য গড়ে তোলা। আসুন আমরা আমাদের মা-বোনদের সম্মান করি। প্রকৃতি আলো-বাতাস তাদের যত্ন করি। অর্থ-সম্পদ মঙ্গলের জন্য ব্যবহার করি, নারী-শিশু-প্রতিবন্ধী তাদেরও ভালবাসা দিয়ে শানত্মি রাজ্য গড়ে তুলি।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখানে সেরা ইগো কার?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪






ব্লগারদের মাঝে কাদের ইগো জনিত সমস্যা আছে? ইগোককে আঘাত লাগলে কেউ কেউ আদিম রোমান শিল্ড ব্যবহার করে,নাহয় পুতিনের মত প্রটেকটেড বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করে।ইগো আপনাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে, টের পেয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবং আপনারা যারা কবিতা শুনতে জানেন না।

লিখেছেন চারাগাছ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮

‘August is the cruelest month’ বিশ্বখ্যাত কবি টিএস এলিয়টের কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘The Westland’-র এ অমোঘ বাণী যে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন করে এক অনিবার্য নিয়তির মতো সত্য হয়ে উঠবে, তা বাঙালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×